Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা চলে না: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৩৬

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে দল নিজেরা নিজের গঠনতন্ত্র মানে না, আইন মানে না; সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না। যারা দুই বড় দল বলবেন, তারা ভুল করেন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন। এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই দল গড়ে উঠেছে।’

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। উপজেলার সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গারহাট তালিমপুর-তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে।

প্রায় দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর নিজ নির্বাচনী এলাকার জনসভায় বক্তব্য রাখলেন শেখ হাসিনা। এর আগে, ২০১৮ সালে শেখ লুৎফর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে তিনি জনসভায় বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। করোনা মোকাবিলা করেছি। দারিদ্র বিমোচন ৪০ ভাগ ছিল বিএনপির আমলে, আমরা ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। আজ যদি করোনা অতিমারি আর ইউক্রেন যুদ্ধ না হতো তাহলে দেশকে আরও উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম।’

আমাদের মাটি উর্বর। আমাদের মানুষ আছে। দেশকে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবো বলেও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

দল হিসাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলে। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির তুলনা করে। কেউ কেউ বলে দুই দল। একটা কথা বলতে চাই ২০০৮’এর নির্বাচন; সেই নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০টা সিট। ৩০০ সিটের মধ্যে। আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছিল। বিএনপির ছিল ২০ দলীয় জোট। বিএনপির নেতৃত্বে পেল ৩০টা সিট আর বাকিগুলো পেল আওয়ামী লীগ। তাহলে এই দুল এক পর্যায়ে হয় কিভাবে?’

‘বিএনপি সরকার আমলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, গ্রেনেড হামলা, ৫০০ জায়গায় একইসঙ্গে বোমা হামলা, দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, ওরা মানুষকে কিছু দেয়নি। মানুষের অর্থ লুটপাট করে সব বিদেশে নিয়ে গেছে। এমন একটা রাজনৈতিক দল তারা তাদের নিজেদের গঠনতন্ত্র মানে না? বিএনপির গঠনতন্ত্রেই আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি নেতা হতে পারে না। আর বিএনপিতে আজকে একটা নেতাও পায় না, যে অন্তত সাজাপ্রাপ্ত আসামি না। খালেদা জিয়া আর ছেলে দুজনেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার ছেলেকে বানিয়েছে যেটা আবার ২১ আগস্ট গেনেড হামলা দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তারা সেই দলের নেতা। নিজেরা নিজের দলের গঠনতন্ত্র মানে না, আইন মানে না। সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যারা ওই দুই বড় দল বলবেন, তারা ভুল করেন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন। এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই দল গড়ে উঠেছে। আর বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত যে দলগুলি আছে- এরা কারা? অবৈধভাবে ক্ষমতাদখলকারী জিয়া, সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতা দখল করেছে উচ্চ আদালতের রায় আছে। সেই অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী ক্ষমতায় বসে থেকে ক্ষমতার উচ্ছ্বিষ্ট বিলিয়ে যে দল তৈরি করেছিল সেই দল হচ্ছে বিএনপি। এরা মানুষের কল্যাণও চায় না, মঙ্গলও চায় না। মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ায়। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। কাজেই এদের সাথে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না।’

সকাল থেকে দুপুর অবধি রৌদ্রতাপ উপক্ষো করে জনসভা মাঠে উপস্থিত থাকার জন্য সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ‘আমি আর আপনাদের এই রোদের মধ্যে কষ্ট দিতে চাই না। আমি অনেকদিন পর এখানে আসতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। আপনারা এসেছেন। আমি আবারও বলব, আপনাদের মাঝেই তো আমি ফিরে পাই, আমার হারানো বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ। আপনাদের এই স্নেহ, ভালোবাসাই আমার একমাত্র শক্তি।’

আপনাদের জন্য আমি সবসময় দোয়া করি আল্লাহ রাব্বুলামিনের কাছে। আপনারাও দোয়া করবেন। বাংলাদেশকে আজ আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসাবে যেন আমরা গড়ে তুলতে পারি। স্মার্ট বাংলাদেশ হিসাবে যেন গড় তুলতে পারি, সে ব্যাপারে আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখের পরিচালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অনেকে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবার গোপালগঞ্জবাসীর জন্য একগুচ্ছ উন্নয়ন উপহার নিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল আটটার পর গণভবন থেকে সড়কপথে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা হন তিনি। পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পৌঁছান তিনি।

পরে গোপালগঞ্জবাসীর জন্য উন্নয়ন উপহার হিসাবে ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ৪৩টি নবনির্মিত উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গারহাট তালিমপুর-তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রীকে পেয়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে জনসভায় ছুটে আসেন কোটালীপাড়াবাসী। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে জনসভায় জনস্রোতের ঢল নামে।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী বিএনপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর