Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইবিতে ঘটনার পর উধাও হয়ে যায় সিসিটিভি ফুটেজ

ইবি করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩০

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যে কোনো অপকর্ম ও নেতিবাচক ঘটনার পর উধাও হয়ে যায় সিসিটিভি ফুটেজ। উপাচার্যের কার্যালয়ে হামলা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও লালন শাহ হলে ককটেল বিস্ফোরণ, সাদ্দাম হলে জুনিয়রের হাতে সিনিয়র লাঞ্ছিত ও রাউটার চুরি, শেখ হাসিনা হলে চুরি ও সম্প্রতি ছাত্রী নির্যাতন, খালেদা জিয়া হলের চুরি, মসজিদে চুরিসহ বিভিন্ন ছোট-বড় ঘটনার পর ফুটেজ পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিশেষ করে আবাসিক হলগুলোর ঘটনায় একাধিকবার ফুটেজ গায়েব হওয়ার বিষয়টি জানা গেছে। যদিও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ‘আপনার গতিবিধি সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যেবক্ষণ করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে।

সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবের ঘটনায় নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই। বারবার ক্যামেরার ফুটেজ উধাও হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে ফুটেজ গায়েব হওয়ার ঘটনায় অধিকাংশ দফতরই আইসিটি সেলের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেন।

তবে আইসিটি সেলের পরিচালক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া জানান, ‘সব ক্যামেরা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ক্যামেরাগুলো স্ব-স্ব অফিস নিয়ন্ত্রণ করে। সেগুলো অচলের ব্যাপারে আমাদের দায় নেই। সমস্যা হলে আমাদের জানালে ঠিক করে দিয়ে আসি।’

দাপ্তরিক ব্যতীত অন্যান্য ক্যামেরাগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের সবগুলো ক্যামেরা এক্টিভ নেই। তাছাড়া মূল বিষয় হলো ক্যামেরার দামের চেয়ে মেইনটেনেন্স খরচ বেশি হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ক্যামেরা দেখার জন্য যথেষ্ট লোকও নেই। ফলে মেইনটেইন করা কষ্টকর হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টিতেও অনেকসময় পাওয়ার সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায়।’

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার ১২ দিন পেরিয়েও ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সিসিটিভি ক্যামেরার বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট থাকায় তদন্ত কমিটি ফুটেজ চাইলে হল কর্তৃপক্ষ তা দিতে ব্যর্থ হয়। হল কর্তৃপক্ষ ফুটেজ উদ্ধারে কাজ করছে জানালেও উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছে আইসিটি সেল।

এর আগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও লালন শাহ হলের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ। হলের পেছনে ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও সেসময় ফুটেজ উদ্ধার সম্ভব হয়নি। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ১৭ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের একান্ত সচিবের (পিএস) কক্ষে ভাঙচুর হয়। তবে ভাঙচুর হওয়া কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা সচল থাকলেও হার্ডডিস্ক অচল ছিল।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া উপাচার্যের কক্ষে ক্যামেরা সচল থাকলেও ৬ এপ্রিলের পর থেকে কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এদিকে গত ২১ মে সাদ্দাম হোসেন হলগেটে এক জুনিয়র শিক্ষার্থী সিনিয়রকে মারধর করে। ঘটনাস্থলে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও সেই ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া হলটিতে এ বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি রাউটার চুরি হয়।

গত ৬ জুন ভোরে শেখ হাসিনা হলে চুরির ঘটনা ঘটে। এমনকি অজ্ঞাত এক যুবককে দেওয়াল বেয়ে উঠে একটি কক্ষে জানালা ধরে টানাটানি করতে দেখেন এক ছাত্রী। তবে সিসিটিভি ফুটেজ না পাওয়ায় পরে আর অভিযুক্তকে শনাক্ত করা যায়নি বলে জানা গেছে। এর ঠিক দুইদিন পর ৮ জুন রাতে মসজিদের কাঁচ ভেঙে ৪টি বড় স্ট্যান্ড ফ্যান চুরির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া খালেদা জিয়া হলে অন্তত ৯টি কক্ষের তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। ৭ আগস্ট বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ সময় হলে ১১টি সিসি ক্যামেরা থাকলেও ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘ক্যামেরা ও সংশ্লিষ্ট ডিভাইসগুলো সবসময় ফাংশন করে না। তাছাড়া হলগুলোতে ক্যামেরা দেখভালের জন্য কোনো এক্সপার্ট নেই। যন্ত্রগুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কি-না মাঝে মধ্যে টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করা উচিত। তাহলে আর সমস্যা থাকার কথা না। এছাড়া সরাসরি যে কর্তৃপক্ষ (আইসিটি সেল) তাদের এসব দেখভাল করা উচিত।’

সারাবাংলা/একে

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সিসিটিভি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর