ঢাকা: ঢাকাসহ পাঁচ জেলার সব অবৈধ ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় থাকা অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করে দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরের ডিজিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আজকে যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেটাতে আদালত বলছেন যথেষ্ঠ নয়। কয়েকটা গাড়ির কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু অবৈধ ইটভাটার উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেয়নি। তাই দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার আশেপাশের পাঁচ জেলায় অবৈধ ইটাভাটা বন্ধ করে পরিবেশ অধিদফতরকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিটি করপোরেশনকে পর্যাপ্ত পানি ছিটাতে বলেছেন। এ ছাড়া ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহন করা এবং যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে।’
এর আগে বায়ু দূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
৯ দফা নির্দেশনায় বলা হয়
- ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহণ করতে হবে।
- যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবে।
- এ ছাড়া ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনও পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
- সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ এবং কার্পেটিং যেসব কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করার নির্দেশ।
- গাড়ির কলো ধোয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে বলা হয়েছে।
- সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ।
- যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনও বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ।
- পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধের নির্দেশ।
- মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি করপোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করার নির্দেশ।
এই ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
গত ৩১ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ু দূষণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই আদেশ অনুযায়ী গত ৫ ফেব্রুয়ারি রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
ওই প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট আজ বায়ু দুষণ রোধে আদালতের আদেশ দুই সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নে নির্দেশ দেন।
