Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নৌকায় ভোটের ওয়াদা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:০৭

ঢাকা: আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মিঠামইন উপজেলার হেলিপ্যাড মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনেও আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে সেবা করার সুযোগ দেবেন। আগামীতেও নৌকা মার্কার সরকার আসলে আপনাদের উন্নতি হবে, দেশের উন্নতি হবে। এই হাওর অঞ্চলের উন্নয়নে সার্বিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

শেখ হাসিনা উপস্থিত জনতার কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে বলেন, ‘আপনাদের কাছে এই আবেদন জানাই। আপনারা ওয়াদা করেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।’

এসময় উপস্থিত জনতা হাত তুলে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগান দিয়ে ওয়াদার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী কিশোরগঞ্জের স্থানীয় ভাষায় ‘নৌকা বায়া দে নৌকা বায়া দে’ স্লোগান ধরেন।

দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় পর মিঠামইনে যান শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে মিঠামইনে রাষ্ট্রপতির বাড়ির পাশে ঘোড়াউত্রা নদীর চরে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে মিঠামইন সফর করেছিলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে এদিন উৎসবের আমেজ বিরাজ করে হাওর অঞ্চলে। মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জে পৌঁছে ২৭৫ একর জমির ওপর নবনির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় সেনানিবাস এলাকায় আম গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। মধ্যাহ্নভোজনে শেখ হাসিনাসহ তার সফরসঙ্গীদের নিজ গ্রামের বাড়িতে হাওরের মাছ ও স্থানীয় ঐতিহ্যের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে বিকেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সুধী সমাবেশে যোগ দেন শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে মঙ্গলবার  (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীকে নিজ বাড়িতে স্বাগত জানাতে বঙ্গভবন থেকে হেলিকপ্টারে মিঠামইন পৌঁছান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সুধী সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনেও নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকা আমাদের প্রতীক। এই নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই আজকে কিশোরগঞ্জ আর অবহেলিত নয়। আজকে (কিশোরগঞ্জ) একটি উন্নত জেলা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা উন্নত হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই এদেশের মানুষ শিক্ষা পাচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সকল সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে।’

মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানসহ বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘কিশোরগঞ্জবাসী সবসময় রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে সারা বাংলাদেশ পরিচালনা করছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসি, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে দেখেছি মানুষের দুর্দশা। পেটে খাবার নেই, পরনে ছিন্ন বস্ত্র, রোগে চিকিৎসা নেই। ধুকে ধুকে মারা যায়। গায়ে হাড় আর চামড়া। চলাচলের ব্যবস্থা নেই। একটা দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হতো। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর এদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। এরপর আবার আসে ওই বিএনপি-জামায়াত। আবার লুটপাট শুরু করে। অর্থপাচার, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালায়।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখন ক্ষমতায় আসে দেশের মানুষের কল্যাণ হয়। আমাদের ফসল উৎপাদন বাড়ে, মাছ উৎপাদন বাড়ে, তরি-তরকারি ফলমূল উৎপাদন বাড়ে, মানুষ খেয়ে-পরে সুখে থাকে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। অন্তত ১৪ বছরে আজকের বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে।’

জনতার উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই। মা-বাবা ভাই সব হারিয়েছি। আমি নিঃস্ব রিক্ত। এই দেশের মানুষকে ভালবেসেছিলেন। তিনি তার নিজের জীবন দিয়ে গেছেন। জীবন দিয়ে গেছেন আমার মা-ভাইয়েরা। আজকে আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পাই আমার হারানো বাবার স্নেহ, আমার হারানো মায়ের স্নেহ, হারানো ভাইয়ের স্নেহ। আপনারা সবাই কষ্ট করে এসেছেন। বিদায়ের আগে এইটুকু বলতে পারি, রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নাই আছে শুধু ভালবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’

কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরীফ কামাল প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ছোট ভাই অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হকের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।

আরও পড়ুন 

সারাবাংলা/এনআর/আইই

শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর