Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাতের মুঠোয় সব সরকারি সেবা ‘মাইগভে’

সারাবাংলা ডেস্ক
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:৪৪

ঢাকা: দফতরের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোগান্তির সময় শেষ। ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল সমাধান এখন ‘মাইগভ’। হাতের মুঠোয় সকল সরকারি সেবার সমাধান নাগরিকরা পাচ্ছেন এই অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে। এরইমধ্যে দেশের ২২ লাখেরও বেশি নাগরিক এই অ্যাপে সেবা গ্রহণ করেছেন। দেশের নাগরিক ছাড়াও এই সেবার মাধ্যমে ঘরে বসে আবেদন করতে পারছেন প্রবাসীরাও।

তকি ইয়াসির রহমান একটি বেসরকারি কোম্পানির হয়ে যন্ত্রপাতি আমদানির সঙ্গে জড়িত। তার কোম্পানি বিদেশ থেকে রেডিও এবং নন-রেডিও সরঞ্জাম আমদানি করে, যার জন্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) থেকে ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক।

বিজ্ঞাপন

সেই শর্ত পূরণে আগে কাগজের আবেদন নিয়ে সরাসরি যাওয়া লাগত। কিন্তু এখন লাগে না। এখন ‘মাইগভ’ অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই বিটিআরসির ছাত্রপত্র পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। আবেদন নিয়ে দপ্তরে দপ্তরে যাওয়ার দিনও শেষ হয়েছে ইয়াসির রহমানের। ইয়াসির মনে করেন, খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি একটা ব্যবস্থা ‘মাইগভ’ অ্যাপ।

তিনি বলেন, ‘বিটিআরসির আবেদন করতে গিয়ে বিভিন্ন অপশন বাছাই করা এবং তথ্য আপলোড করা যায় খুব সহজেই। আবেদন সম্পন্ন হলে এসএমএস পাই। আবেদন নিষ্পত্তির পরও এসএমএস আসে। আবেদন কোন অবস্থায় আছে- সেই স্ট্যাটাসও দেখা যায়। অনুমোদন হলে ই-মেইলে চলে আসে ছাড়পত্র। অ্যাপ থেকে ডাউনলোড করারও সুযোগ রয়েছে।’

২০১৯ সালের মার্চ থেকে মাইগভ অ্যাপ ব্যবহার করছেন ইয়াসির রহমান। প্রতিবছর বিটিআরসি থেকে ৭০-৮০টি ছাড়পত্র নিয়েছেন তিনি।

নিবন্ধন ও লাইসেন্স, কৃষি, সনদ, প্রত্যয়ন, অনাপত্তি ও অনুমতি, অনুদান, ভাত ও ঋণ, শিক্ষা, ভূমি ও ইজারা, মুক্তিযোদ্ধা, আইন-শৃঙ্খলা ও বিচার, প্রশিক্ষণ, অর্থ ও ব্যাংকসহ এক হাজার ৩৮৯টি সরকারি সেবা মিলছে এই অ্যাপে।

বিজ্ঞাপন

জনগণের দোরগোড়ায় সব ধরনের সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)-এর নির্দেশনায় সরকারের বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজেশনের কাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৯ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের অবদান এক ঠিকানায় সব সমাধান’ স্লোগান নিয়ে সরকারি সব সেবা একক প্ল্যাটফর্মে পেতে একসেবা নামক একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। পরে একসেবার সব সেবা আরও সহজতর করতে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ‘আমার সরকার বা মাইগভ’ অ্যাপস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অ্যাপসটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে চার কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত অ্যাপসটিতে ২৯টি মন্ত্রণালয় সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া সাতটি ক্যাটাগরিতে এক হাজার ৯০১টি সেবা ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার ৩৮৯টি সরকারি সেবা অ্যাপসটিতে ইন্টিগ্রেট করা হয়েছে এবং মাইগভে ১১ হাজার ৫৪৭টি সরকারি অফিস সংযুক্ত রয়েছে।

ইতোমধ্যে মাইগভ সিস্টেমটি ৩৪.১৩ লাখেরও অধিক নাগরিক রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং মাইগভের মাধ্যমে সরকারি সেবাগ্রহণের জন্য ২৩.৭০ লাখেরও বেশি আবেদন এসেছে, যার মধ্যে ২২ লাখ ১৮ হাজারেরও অধিক নাগরিক আবেদনের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব সরকারি ও প্রয়োজনীয় বেসরকারি সেবা এই অ্যাপে সংযুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেটের (এটুআই) প্রকল্প পরিচালক ডা. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর (যুগ্মসচিব) বলেন, “সরকারি সব সেবা এক প্ল্যাটফর্মে আনার অঙ্গীকার নিয়ে ‘আমার সরকার বা মাইগভ’ প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্যের সেবার জন্য আবেদন, কাগজপত্র দাখিল, আবেদনের ফি পরিশোধ এবং আবেদন-পরবর্তী আপডেট জানা যাবে অ্যাপেই। ইতোমধ্যে প্ল্যাটফর্মটি র‌্যাপিড ডিজিটাইলাজেশনের আওতায় ১,৯০১টি সেবা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরও সরকারি-বেসরকারি সেবা অ্যাপটিতে যুক্ত করা হবে।”

‘‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী ২০১৩ সালের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সর্বমোট ৭ হাজার ৩৯৫টি সেবার প্রায় ৮৫ শতাংশ সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

সারাবাংলা/একে

বিজ্ঞাপন

মানুষের হিংস্রতা কেন বাড়ছে?
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৪১

আরো

সম্পর্কিত খবর