আইএলও’র ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে দিতে হয় ঘুষ!
১ মার্চ ২০২৩ ১২:৫৭
বাগেরহাট: বাগেরহাটে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) স্কিলস-২১ প্রকল্পে প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স করে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আইএলও’র ড্রাইভিং প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে।
বাগেরহাটে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির (আইএমটি) চলমান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কোর্সের ২৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে অন্তত ১৮ জনের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যারা টাকা দেয়নি তারা পাশ করতে পারবে না—আইএলও’র ড্রাইভিং প্রশিক্ষক মো. রুবেলের বিরুদ্ধে এমন হুমকির অভিযোগ করেছেন দ্বিতীয় ব্যাচের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
মো. সাব্বির হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চার মাসের ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করলে আমরা আইএলও থেকে চার হাজার ২০০ টাকা পাই। ভর্তির সময় বলা হয়েছিল ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আমাদের কোনো টাকা লাগবে না। কিন্তু এখন আমাদের কাছ থেকে ড্রাইভিং পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা করে নিয়েছেন প্রশিক্ষক মো. রুবেল। শুধু আমি নয়, প্রায় সব প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে এই টাকা নিয়েছেন রুবেল।’
অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিআরটিএ’তে টাকা দেওয়া লাগবে বলে আমাদের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা নিয়েছে। আমিসহ অন্তত ১৮ জন শিক্ষার্থী তিন হাজার টাকা দিয়েছি। এটা যদি জানাজানি হয় আমাদের ফেল করায়ে দিতে পারে। এ জন্য অনেকেই মুখ খুলছে না।’
তবে এ বিষয়ে বিআরটিএ বাগেরহাট কার্যালয়ের পরিদর্শক রনজিত কুমার হালদার বলেন, ‘বিআরটিএ‘র লাইসেন্স প্রদানের জন্য আমরা কোনো টাকা নিই না। যদি কেউ বিআরটিএ‘র নাম ভাঙিয়ে টাকা নেয়, তাহলে সে দায় দায়িত্ব তাদের। আমরা শুধু লাইসেন্সের জন্য সরকারি ফি গ্রহণ করি।’
মো. নুরুজ্জামান নামের এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, ‘প্রশিক্ষণ শেষে ঢাকায় একটি ট্রাক চালকের সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলাম। প্রশিক্ষক রুবেল ফোন করে বিআরটিএ’তে দেওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা চেয়েছেন। তখন আমি কাছে টাকা নেই জানালে তিনি (রুবেল) বলেন টাকা না দিলে ফেল করিয়ে দেবেন।’
অভিযোগ অস্বীকার করে আইএলও’র স্কিলস-২১ প্রকল্পের ড্রাইভিং প্রশিক্ষক মো. রুবেল বলেন, ‘আমি কোনো টাকা নিইনি। এগুলো সবই অপপ্রচার।’
বাগেরহাট ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। যদি কোনো শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দেয় তা হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) স্কিলস-২১ প্রকল্পের সমন্বয়ক ইলিয়াস রহমাতুল্লাহ জানান, টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/ইআ