Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কারো চাপে মাথা নত করবেন না, বিমা সংশ্লিষ্টদের প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪৪

ঢাকা: বিমা সংশ্লিষ্টদের যাচাই-বাছাই ছাড়া কাউকে টাকা না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দয়া করে কারো চাপের কাছে মাথা নত করবেন না, সেটা আমি বলেন বা আমাদের মন্ত্রি পরিষদের সদস্য বা যিনিই হোক না কেন। ইন্সুরেন্স কোম্পানির বদনাম হোক এটা চাই না। কারণ আমিও  এই পরিবারের একজন।

বুধবার (১ মার্চ) আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিমা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্য শেষে জাতীয় বিমা দিবস উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীমউল্লাহ ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন।

‘আমার জীবন আমার সম্পদ বিমা করলে থাকবে নিরাপদ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এবারের বিমা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) যৌথভাবে দিবসটি উদযাপন করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা মেয়াদে তার সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘২০০৮ সাল সরকার গঠন করে ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থেকে দেশকে এগিয়ে যাচ্ছি। একটা দীর্ঘ সময় আমরা সরকারে আছি। গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে অগ্নিসন্ত্রাসহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনের নামে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। দিনের পর দিন আন্দোলন চালানোর পরেও কেউ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। দেশের মানুষ খুব সাহসী ভূমিকা পালন করে সেগুলো উপেক্ষা করে বাংলাদেশর উন্নয়নের গতিটাকে অব্যাহত রেখেছেন এবং বারবার ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিমা মানুষকে একটা সুরক্ষা দেয় এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করতে সহায়তা করে। কাজেই আমরা সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে আইনগুলোকে সময়োপযোগী করা, নীতিমালা প্রণয়ন করা, মানুষকে উৎসাহিত করার পদক্ষেপও আমরা একে একে নিয়েছি।’

বিমা সম্পর্কে প্রচার করলে মানুষ তার সুফল সম্পর্কে জানতে পারবে। কাজেই সুফল সম্পর্কে আরও যদি প্রচার করতে পারেন তাহলে মানুষ উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী তার একটি অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, ‘ইন্ড্রাস্ট্রি বিমা করে না, এটা ঠিক না। কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায়, এক সময় শুধু গার্মেন্টেসে আগুন লাগত, কাজেই অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্থা নিয়ে আমরা এখন যথেষ্ট সচেতন। কিন্তু হঠাৎ আমার নজরে পড়ল, আমি নাম বলতে চাই না। কোনো কোনো গার্মেন্টসে কিছুদিন পর পরেই খালি আগুন লাগে। তারপর ইন্সুরেন্সের টাকা চায়। একবার মোটা অংকের একটা টাকা চাইল। তখন আমি ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে বললাম এখন আপনারা টাকা দেবেন না, আমি বিশেষভাবে ইনকোয়ারি করব।

এরপর ইনকোয়ারি করে দেখা যায়, ওই কারখানার এক নারী শ্রমিককে ২০ হাজার টাকা দিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়। পরে ওই মহিলাকে যখন ধরা হলো সে স্বীকার করল যে, তাকে দিয়ে এটা করানো হচ্ছে। ঘন ঘন এতো আগুন একটা জায়গায় লাগবে কেন? ইন্সুরেন্সের দাবিদার হয়ে যায়, টাকা পেয়ে যায়। সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কতটুকু ক্ষতি হল, এটা যথাযথভাবে তদন্ত করা দরকার। তদন্ত না করে কারো চাপে পড়ে কোনো টাকা দেবেন না। আগুন লাগল এক ফ্ল্যাটে, সেই ফ্ল্যাটে কোনো ইন্সুরেন্স করা ছিল না। কিন্তু পাশের আরেকটা ফ্ল্যাটে ইন্সুরেন্স ছিল। সেখানে হয়ত কিছুটা আগুন লেগেছিল, কিন্তু মোটা অংকের টাকা বের করে নিয়ে গেল। একটা ফ্ল্যাটে ৪০ কোটি টাকার মতো কি সম্পদ থাকতে পারে যে ইন্সুরেন্স কোম্পানি থাকে ৪০ কোটি টাকা দেবে? এর জবাব আছে আপনাদের কাছে? টাকাটা কিভাবে গেল সাধারণ বিমা থেকে।’

ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এই ধরনের একটা ঘটনা এসেছে। আমি এটার উপরও তদন্ত করাব। কত সম্পদ একটা ফ্ল্যাটে মানুষের আছে, ৪০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেল? আর বিমা থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেল। কিন্তু যার ঘরটা সব থেকে বেশি পুড়ল তার বিমা নাই, সে কিছুই পেল না।’

সারাবাংলা/এনআর/ইআ

জাতীয় বিমা দিবস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর