প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ও এসপি পরিচয়ে প্রতারণা, গ্রেফতার ৩
২ মার্চ ২০২৩ ২৩:৩২
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ও কুমিল্লা জেলার এসপি পরিচয়ে কনস্টেবল নিয়োগে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) খন্দকার আশফাকুজ্জামান ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রাজেশ বড়ুয়াসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
গ্রেফতার হওয়া প্রতারকরা হলেন মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় মোল্লাবাড়ির মৃত. শাহাদাত হোসেন ওরফে শুকুর আলীর ছেলে মেরাজুল ইসলাম প্রকাশ লায়ন মেরাজ (৪৬), এইকই জেলার লুন্দি এলাকার সুলতান খন্দকারের ছেলে মো. জামান খন্দকার প্রকাশ আলীমুজ্জামান (৪৩) ও একই জেলার রায়েরকান্দি এলাকার সারোয়ার ফকিরের ছেলে মো. রিপন ফকির (৩৭)। এর মধ্যে মেরাজুল ইসলাম প্রকাশ লায়ন মেরাজ ডিএমপি কদমতলী থানার প্রতারণা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং মো. জামান খন্দকার প্রকাশ আলীমুজ্জামান ডিএমপির বংশাল থানার চাঁদাবাজির মামলার আসামি।
পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, বাংলাদেশ পুলিশ ট্রেনিং রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে জনবল নিয়োগ করা হবে মর্মে পত্রিকায় বিজ্ঞপি দেখে জনৈক মরিময় বেগম এবং তার স্বামী শরিফুল ইসলাম কামাল তাদের নাতি ফাহিমকে ওই পদের জন্য আবেদন করতে বলেন। ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র ফাহিম ওই পদের জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। এরই মধ্যে শরিফুল তার অফিসের সহকর্মী আনোয়ারের মাধ্যমে জানতে পারেন, লায়ন মেরাজ নামের একজন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আছেন। যিনি তদবির করলে শরীফুলের নাতির পুলিশের চাকরি হয়ে যাবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাদীর স্বামী শরিফ তার সহকর্মী আনোয়ারের কাছ থেকে লায়ন মেরাজের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশের চাকরির বিষয়ে কথা বলে এবং মেরাজের ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপে শরীফুল তার নাতির পরীক্ষার প্রবেশপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র পাঠায়। তাছাড়া চাকরি পেতে হলে ৩ লাখ টাকা ঘুষ প্রদান করতে হবে বলে লায়ন মেরাজ জানালে শরীফুল রাজি হয়।
পরবর্তীতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কুমিল্লার পুলিশ সুপার পরিচয়ে মো. জামান খন্দকার প্রকাশ আলীমুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি শরীফুলকে ফোন করে জানায়, আপানার নাতির বিষয়ে তদবির আছে। ৩ লাখ টাকায় হবে না, ৫ লাখ টাকা লাগবে। শরীফুল এতে রাজি হলে প্রতারকরা কয়েকটি বিকাশ ও নগদ নাম্বার দেয়। ওই বিকাশ ও নগদ নাম্বারে শরীফুল গত ১১ ফেব্রুয়ারি হতে ১৯ ফেব্রুয়ারি তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ৬ লাখ টাকা প্রদান করে। কিন্তু গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল দিলে উক্ত ফলাফলে শরীফুলের নাতির নাম না থাকলে তাদের সন্দেহ হয়। তখন শরীফুল কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপারের সরকারী মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে পুলিশ সুপার, বাদানিকে এই বিষয়ে কিছু জানেনা বলে সরাসরি অফিসে আসতে বলেন।
তখন বাদী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় বাদীনির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুরাদনগর থানায় ভুয়া সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত ১ মার্চ অর্থ আত্মসাৎ এর একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার সূত্র ধরে জেলা গোয়েন্দা শাখার ২টি টিম ডিএমপি ঢাকা ও মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতা প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব পরিচয় প্রদানকারী মেরাজুল ইসলাম প্রকাশ লায়ন মেরাজ (৪৬) এবং কুমিল্লা পুলিশ সুপার পরিচয় দানকারী আসামি মো. জামান খন্দকার প্রকাশ আলীমুজ্জামানসহ (৪৩) তাদের সহযোগী আসামি মো. রিপন ফকিরকে (৩৭) গ্রেফতার করেন।
সারাবাংলা/ইউজে/একে