Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবি তরুণদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ মার্চ ২০২৩ ২০:৪২

ঢাকা: ফসিল ফাইন্যান্স (জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন) বন্ধের দাবি জানিয়ে তরুণেরা বলেছেন, ফসিল ফাইন্যান্স বন্ধ করা আর্থিক বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বিষয় নয়, বরং এটি বিশ্ব নেতাদের সদিচ্ছার বিষয়। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য যে তহবিল প্রয়োজন, তা সংগ্রহ তখনই সম্ভব হবে, যখন সরকারি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী ব্যাংক এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে টেকসই ও নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত মানবন্ধনে তারা এসব কথা বালেন। গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবিতে এ মানবন্ধন আয়োজন করা হয়।

জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবি ও জনগনকে সচেতন করতে একশনএইড বাংলাদেশ ও এক্টিভিস্তা বাংলাদেশ সহ ২৪টিরও বেশি যুব সংগঠনের শতাধিক তরুণ এই গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে অংশ নেয়। একই সময় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বরগুনাসহ বাংলাদেশের ২৬টি জেলায় এবং ৭টি লোকাল ইয়ুথ হাবে তরুণ এক্টিভিস্ট স্বেচ্ছাসেবকরাও এই গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে সংহতি প্রকাশ করেন।

এ সময় তরুণেরা দলমত নির্বিশেষে সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষদের সঙ্গে নিয়ে জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবিতে ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেয়। তাদের প্ল্যাকার্ডগুলোতে প্রকাশ পায় পৃথিবীকে জলবায়ু সংকট থেকে বাঁচিয়ে তোলার আকুতি। প্লেকার্ডে তাদের প্রতিবাদের অক্ষরে লিখা দাবি জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ কর; নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কর।

স্ট্রাইকাররা বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট সৃষ্টি করছে, তাদের নব্য ঔপনিবেশিক শোষণ, যুদ্ধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে আমাদের এই পৃথিবীকে ধ্বংস করছে। পুঁজিবাদী মানসিকতা নিয়ে সর্বোচ্চ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারীরা জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে মূলত দক্ষিণের জলবায়ু-সংরক্ষিত দেশগুলোতে।’

বিজ্ঞাপন

এটি অনুন্নত দেশগুলোর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের কাছে তাদের পরিবেশগত ঋণ বহুগুণ বাড়িয়ে তুলছে। আমরা বাংলাদেশের তরুণেরা তাই সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমনকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও দেশগুলির কাছে অবিলম্বে জীবাশ্ম-তহবিল বন্ধ করাসহ জলবায়ু সংকটের কারণে ঝুঁকিতে থাকা সম্প্রদায়গুলোর জন্য লস এন্ড ডেমেজ এ অর্থায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

জলবায়ু বিষয়ে জনগণ ও নীতিনির্ধারকদের সুবিবেচনার জন্য স্ট্রাইকের বিকল্প নেই বলে জানান একশনএইড বাংলাদেশের একজন তরুণ এক্টিভিস্ট ও জলবায়ুকর্মী এস এম জান্নাতুল নাঈম।

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর উপকূলীয় অঞ্চলে পানি বাড়ছে এবং আমি যেখান থেকে এসেছি সেখানে আমাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ভবিষ্যত প্রজন্ম ও বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা বাঞ্চনীয়। যত তাড়াতাড়ি আমরা কাজ করব, তত তাড়াতাড়ি এ পৃথিবী সুরক্ষিত হবে।’

একশনএইড বাংলাদেশ এর ম্যানেজার মো. নাজমুল আহসান বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির তুলনায় জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বেড়েই চলছে, যা ন্যায়ভিত্তিক সবুজ পৃথিবী গড়ার ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। ফলে বাংলাদেশের তরুণেরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু প্রশমন তহবিলের দাবি করছে।’

একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘ফসিল-ফাইনান্স প্রবণতা ক্রমবর্ধমান পুঁজিবাদী মানসিকতার একটি প্রধান উদাহরণ যেখানে মানুষের চেয়ে মুনাফাই মুখ্য। এটি পৃথিবীতে বাস্তুতন্ত্র এবং জলবায়ুকে মারাত্মকভাবে ধ্বংস করছে। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে দক্ষিণের দেশগুলো এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়গুলোতে। আমরা যদি এখনই সোচ্চার না হই, তাহলে নিকট ভবিষ্যতে আমাদেরকে বড় দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে, বাস্তুচ্যুত হতে হবে লাখ লাখ মানুষকে।’

সারাবাংলা/এজেড/একে

একশনএইড জীবাশ্ম জ্বালানি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর