বিকট শব্দে বিস্ফোরণ, প্রকম্পিত ৩ কিলোমিটার এলাকা
৪ মার্চ ২০২৩ ২১:০৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় আশপাশের তিন থেকে চার কিলোমিটার পর্যন্ত জায়গা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের ঘটনায় ভেঙ্গে পড়ে অনেক বাড়ির কাঁচের জানালা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ির দেয়াল ও আসবাবপত্র।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আহতদের সঙ্গে আসা প্রত্যক্ষদর্শীরা এমন বর্ণনা দিয়েছেন। শনিবার (৪ মার্চ) বিকেলে উপজেলার কদমরসুল ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কদমরসুল এলাকার বাসিন্দা নুর আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুপুরের খাবার খেয়ে ছোট ছেলেকে পাশে রেখে ঘুমিয়েছিলাম। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ একটা বিকট আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির দেয়াল ও জিনিসপত্র কেঁপে উঠে।’
তিনি বলেতে থাকেন ‘তাড়াতাড়ি বাসার সবাইকে নিয়ে বের হয়ে যায়। দেখি অনেক দূরে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। এরপর গায়ে শার্ট জড়িয়ে ঘরের সবাইকে নিরাপদে থাকতে বলে বের হয়ে যাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি অনেক মানুষকে রক্তাক্ত অবস্থায় গাড়িতে করে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমিও উদ্ধারকাজে নেমে পড়ি এবং কয়েকজনকে উদ্ধার করে চমেকে নিয়ে আসি।’
মো. ইউসুফের লাকড়ির দোকান ছিল ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে। বড় বোনের জামাইকে দুপুরে দোকানে বসিয়ে বাসায় গিয়েছিলেন খাবার খেতে। সাড়ে তিনটার দিকে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে দোকানে এসে দেখতে পান বোনের জামার শামসুল আলমের (৬৫) রক্তাক্ত দেহ। দোকানের টিন ভেঙ্গে লোহার বড় বড় খণ্ড এসে পড়েছে ভেতরে। যার একটি শামসুলের মাথায় পড়লে দুই ভাগ হয়ে যায় তার মাথা।
সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দুপুরের খাবার খেতে ও বাসায় একটি জরুরি কাজ থাকায় বোনের জামাইকে দোকানে বসিয়ে ভাটিয়ারিতে গিয়েছিলাম। বিস্ফোরণের শব্দে আমাদের ঘর কেঁপে উঠে। ঘটনাস্থল থেকে আমাদের বাসার দূরত্ব তিন কিলোমিটারের মতো।’
‘বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর পরই বেরিয়ে পড়ি দোকানের উদ্দেশে। গিয়ে দেখি দোকানের চারপাশে বড় বড় লোহার খণ্ড। ভেতরের ক্যাশ কাউন্টারে বোনের জামাইয়ের মাথার উপরে লোহার একটি খণ্ড ও তিনি মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শামীম আহসান জানান, সীতাকুন্ডের বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ২১ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। যার মধ্যে তিন জন মারা গেছেন। বাকিদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম