Wednesday 27 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অপশক্তি রুখে দেওয়ার অঙ্গীকারে রাজপথে আ.লীগের শক্তির মহড়া

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৪ মার্চ ২০২৩ ২৩:৪৫

ঢাকা: উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকারবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার লক্ষ্যে মাঠে থাকার প্রত্যয় নিয়ে রাজপথে ফের শক্তির মহড়া দিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপির প্রতি পাল্টা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে দলটির নেতারা বললেন, দেশের মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা কোরো না। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি। গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে নির্বাচনের পথে হাঁটুন। নির্বাচন ছাড়া কোনো সরকার উৎখাত করা যাবে না। আওয়ামী লীগ সকল ষড়যন্ত্রকে নসাৎ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৪ মার্চ) বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এসব অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন দলটির নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতারা এসব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীতে বিএনপির ৬২ থানায় পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে এসব শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ।

ঢাকা মহানগর উত্তরের সমন্বয়ে চারটি স্পটে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্পটগুলো হলো- মিরপুর-১ গোল চত্বর বাস স্টান্ড, মোহাম্মদপুর টাউন হল, উত্তরায় আমিন কমপ্লেক্স এবং মধ্য বাড্ডা ইউলুপের সামনে। মোহাম্মদপুরে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। মিরপুরের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। উত্তরায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এবং মধ্য বাড্ডায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম প্রধান অতিথি ছিলেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতৃত্বে, শ্যামপুর কদমতলিতে রেল গেইটের সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় সদস্য সানজিদা খানম, যাত্রাবাড়ী ডেমরার চৌরাস্থায় বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন; লালবাগ, চকবাজার, কোতয়ালি, বংশালের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ঢাকেশ্বরী বালুর মাঠে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, শাহজাহানপুরের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য সাঈদ খোকনসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মুগদা, সবুজবাগ, খিলগাঁও’র সমাবেশে আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু আইন উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

কলাবাগান, হাজারিবাগ, নিউমার্কেট, ধানমন্ডির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ধানমন্ডি ৩২’র সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ উপনেতা এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপসসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদপুর টাউন হলের সমাবেশে জাহাঙ্গীর কবির নানক বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে আসুন, নির্চবাচনের পথে আসুন। নির্বাচন ছাড়া কোনো সরকার উৎখাত করা যাবে না। নির্বাচনই হলো ক্ষমতা বদলের একমাত্র পথ।’ ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ আর বর্তমানের বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরেন এবং আগামী নির্বাচন অবধি নেতাকর্মীদের সকল পরিস্থিতির মুখে সংযমের পরিচয় দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানক।

সংবিধান বিরোধী কোনো দাবি আওয়ামী লীগ মানবে না বলে বিএনপিকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘এদেশে সংবিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা অবশ্যই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী দেখতে চাই। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশে তিনি বলেন, ‘সরকার পতনের একমাত্র লক্ষ্য নয়, তাদের লক্ষ্য এদেশকে ধ্বংস করে দেওয়া। আজকে তারা শুধু মাত্র সরকার পতনের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামেনি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নামেনি; তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে।’

বাড্ডার সমাবেশে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে, অন্য বিষয় নিয়ে। তারা আন্দোলন কর্মসূচির নামে গরম বক্তব্য দিয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করছে। তারা আগুন সন্ত্রাসে যাওয়ার আগে কথার সন্ত্রাস শুরু করেছে।’

বিএনপি বেহায়ার মতো ফের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো অবস্থাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না। আলোচনা হতে পারে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে। আলোচনা হতে পারে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা যায় নিয়ে। আরও সুষ্ঠভাবে নির্বাচন করার ফর্মুলা আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’

মিরপুরের সমাবেশে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। আমাদের দায়িত্ব হলো বাংলাদেশের মানুষ যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, ঘর থেকে শান্তিতে কর্মে যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। আমাদের সন্তানেরা শান্তিতে স্কুলে যাবে, এখানে কোনো ভয় ভীতি বা হুমকি বা অগ্নিসন্ত্রাসের দ্বারা তাদের ভয় দেখানো হলে আমরা মেনে নেব না। তার জন্যই আমাদের এই কর্মসূচি। এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এটি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি।’

এর আগে, দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শান্তি সমাবেশ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এতে রাজধানীর কিছু এলাকায় যান চলাচল ভোগন্তির সৃষ্টি হয়। সমাবেশ শেষে বিভিন্ন এলাকায় শান্তি মিছিলও বের করে ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আওয়ামী লীগ শক্তির মহড়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর