জাতীয় পাট দিবসে পুরস্কার পাচ্ছেন ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
৫ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫৫
ঢাকা: প্রতি বছরের মতো এবারও নানা আয়োজনে পালিত হতে যাচ্ছে জাতীয় পাট দিবস। পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধিতে অবদানের জন্য এবার ১১ ব্যবসায়ী, বিজ্ঞানী, চাষি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে।
রোববার (৫ মার্চ) সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক)। ‘পাট শিল্পের অবদান, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ এ প্রতিপাদ্যে দিবসটি উপলক্ষ্যে ৬ মার্চ আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরন ও পাটপণ্য প্রর্দশনীর আয়োজন করেছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
পাটের উৎপাদন, পাটজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি করাই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য জানিয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘সোনালি আঁশ পাটের সঙ্গে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। পাটের গুরুত্ব বিবেচনায় পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি, দেশ ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো এবং প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে সোনালি আঁশের উজ্জল সম্ভাবনা তুলে ধরতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস পালন করতে যাচ্ছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাট খাত রফতানি আয়েও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাট খাতের ওপর নির্ভরশীল। পাঠ খাত আধুনিকায়নের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পাট আইন, জাতীয় পাট নীতি, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ও চারকোল নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।’
তিনি জানান, এবার পাট দিবস উপলক্ষ্যে, মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। আর বহুমুখী পাট পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রের আয়োজন থাকবে মতিঝিলের করিম টাওয়ারে। সে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। আরও থাকবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মীর্জা আজম। এ ছাড়াও দিনটি উদযাপন উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী র্যালি, আলোচনা সভা ও সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
এ সময় সরকারের সোনালি ব্যাগ বাজারে কেন আনা যায়নি? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘বাজার ও উৎপাদন খরচের সমন্বয় না হওয়ায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়নি। এক সময় পাট লাভজনক ছিল। এরপর বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পাট খাতে ভাটা পরে। চাষে অনীহা দেখা দেয়। কিন্তু দেখা গেল প্লাস্টিকে ভয়াবহ দূষন। এরপর থেকে আবার পাটের কদর বাড়ছে।’
তিনি বলেন, যদিও আমাদের সরকারি মিলগুলো এখনও লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কারণ মিলের মেশিন খুব পুরনো। আমরা আধুনিক মেশিন আনার চেষ্টা করছি। এগুলো এলে মিল লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবে আশা করি।’
এদিন দেশের পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পাটকে বহুমুখী করার জন্য উৎসাহ দিতে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়ার কথা জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। ১১টি ক্যাটাগরিতে ১১ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া পাট সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হবে।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা প্রাপ্তদের তালিকা-
পাটবীজ, পাট ও পাটজাত পণ্যের গবেষণায় সেরা গবেষক ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহমুদ আল হোসেন, সেরা পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষি ক্যাটাগরিতে কিশোরগঞ্জের আবু হানিফ, সেরা পাট উৎপাদনকারী চাষি পাবনার এনামুল হক, পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী সেরা প্রতিষ্ঠান (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) উত্তরা জুট ফাইবার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড।
পণ্য রফতানিকারক সেরা প্রতিষ্ঠান (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) জোবাইদা করিম জুট মিল মিলস লিমিটেড, পাটের সুতা উৎপাদনকারী সেরা পাটকল হিসেবে আকিজ জুট মিলস লিমিটেড, পাটের সূতা রফতানিকারক সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনতা জুট মিলস লিমিটেড, বহুমুখী পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী সেরা পাটকল হিসেবে সোনালি আঁশ লিমিটেড, বহুমুখী পাটজাত পণ্য রফতানিকারক সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্রিয়েশন (প্রা.) লিমিটেড, বহুমুখী পাটজাত পণ্যের সেরা মহিলা উদ্যোক্তা হিসেবে তরঙ্গ ও বহুমুখী পাটজাত পণ্যের সেরা পুরুষ উদ্যোক্তা হিসেবে গোল্ডেন জুট প্রোডাক্টকে সম্মাননা।
সারাবাংলা/জেআর/ইআ