পতন নিকটে, কোথায় যাবেন সেটা খুঁজুন— প্রধানমন্ত্রীকে গয়েশ্বর
৫ মার্চ ২০২৩ ১৪:০৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, মানুষ বাঁচতে চায়। আর এই কারণে অচিরেই আপনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। আপনার পতন নিকটে, আপনি কোথায় যাবেন, সেটা খুঁজুন।’
রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ এর উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের নেতা রিজভী, সরাফত আলী সপুসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি চাই। আমাদের দাবি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। ৯৬ সালে জামায়াতের সঙ্গে সেদিন তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেছে আওয়ামী লীগ। সেদিন তারা আদমজীতে বিএনপির সমাবেশে বোমা হামলা করে বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা জনগণের আস্থা অর্জনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। ৭১ সালের পরে লুটপাট ও কম্বল চুরি করার রেকর্ড আপনাদের আছে। ক্ষমতায় থাকতেই হবে, এই টেনডেনসি থাকলে তাদের গণতন্ত্রমনা বলা যায় না।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি গণভবনে বসে আসন ভাগাভাগি করবেন, তা হতে পারে না। ১৯৯১ সালে আপনি গোপালগঞ্জ ছাড়া বাকি আসনে পরাজিত হয়েছিলেন, আর খালেদা জিয়া ৫টি আসনে প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আপনাকে ক্ষমতায় রেখে সাধারণ মানুষ ভোটের অধিকার কোনো দিনই ফিরে পাবে না। শুটকি মাছ পাহারার জন্য যেমন বিড়াল রাখা যাবে না, তেমনি ভোট পাহারা জন্য আপনাকে রাখা যাবে না।’
‘লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে আপনি কেন ব্যাবস্থা নেননি। ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে আবারও চুক্তি করেছেন, অথচ ভারতে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হোক না হোক ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। বিশ্ব বাজারে কয়লার দাম ২০০ ডলার আর আদানির সঙ্গে ৪০০ ডলারে চুক্তি করেছেন। আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি সরকারে সঙ্গে সরকারে নয়, একটি প্রতিষ্ঠান সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের’— বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির দাবি মানবেন কী মানবেন না, তা আপনার বিষয়। কিন্তু জনগণের দাবি মেনে দিনের ভোট দিনে দিন, মানুষ আর রাতের ভোটে চায় না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছাড়ুন, না হলে আপনাদের কী হবে তা কেউ জানে না।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশটা কিন্তু ভাষণে মুক্ত হয় নাই, যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে। আবারও ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ কড়া নাড়ছে। কাফনের কাপড় ছাড়া মানুষের দাফন হবার দিন ঘনিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘রিজভীদের জেলে রেখে নির্বাচন দেবেন, সেটা ভুলে যান। ১৮ সালের মতো বিএনপিকে নির্বাচনে নেবেন, কাউকে ভাগিয়ে নেবেন, তা হবে না। মানুষ আর ভাঙা নৌকায় উঠবে না। বাংলাদেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাবে না, কোনো দল নির্বাচনে যাবে না। যারা যাবে তারা বেইমান হিসেবে আখ্যায়িত হবে। বিএনপিকে ভয়-ডর দেখিয়ে লাভ নাই। বিএনপি কাউকে ভয় পায় না। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন, তাহলেই সকল সমস্যার সমাধান হবে।’
জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহম্মদ রহমতউল্লাহ, আবদুস সালাম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, কৃষক দলের খলিলুর রহমান, ভিপি ইব্রাহিম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস