Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গুলিস্তান বিস্ফোরণে নিহত ১৮

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৮ মার্চ ২০২৩ ০১:২৪

ঢাকা: রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। এদের মধ্যে অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। মঙ্গলবার (৭মার্চ) রাতে স্বজনরা একে একে মৃতদেহ শনাক্ত করেন।

নিহতরা হলেন,  কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার তিথিরচড় গ্রামের মো. মমিনের ছেলে সুমন (২১)। তার বাবা মৃতদেহ শনাক্ত করেন। রাজধানীর বংশাল সুরিটোলা এলাকায় থাকতেন সুমন।

বিজ্ঞাপন

বরিশাল সদর উপজেলার কাজিরহাট গ্রামের মৃত দুলাল মৃধার ছেলে ইসহাক মৃধা (৩৫)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবির খান। রাজধানীর ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করতেন ইসহাক মৃধা।

যাত্রাবাড়ী শেখদির মোশারফ হোসেনের ছেলে মনসুর হোসেন (৪০)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন নিহতের ভায়রা মুরাদ হোসেন।

বংশাল আলুবাজার এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন (৪২)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন ভাই আব্দুল কুদ্দুস।

চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার পশ্চিম লালপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে আল আমিন (২৩)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন ভাই মো. হাবিবুর রহমান। আল আমিন বেসরকারি কলেজে বিবিএ শিক্ষার্থী ছিলেন।

কেরানীগঞ্জের চুনকুঠিয়া এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে রাহাত (১৮)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন রাকিবুল হাসান।

চকবাজার ইসলামবাগের আবুল হাসেমের ছেলে মমিনুল ইসলাম (৩৮) ও তার স্ত্রী নদী বেগম(৩৫)। তাদের মৃতদেহ শনাক্ত করেন চাচা জয়নাল আবেদীন।

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের মৃত সমির উদ্দিনের ছেলে মাঈন উদ্দিন (৫০)। শনাক্ত করেন ছেলে মাহমুদুল হাসান।

বংশাল কেপি ঘোষ স্ট্রিটের ইউনুছ আলীর ছেলে নাজমুল হোসেন (২৫)। তাকে শনাক্ত করেন খালাতো ভাই শোভন।

বিজ্ঞাপন

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেউথা গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন মেয়ে জামাই চাতক সিকদার।

মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন খালাতো ভাই রাশেদুল হাসান।

বংশাল আগামাসি লেনের মৃত আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী আকুতি বেগম (৭০)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন খালাতো ভাই শাজাহান সাজু।

শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কাঠাকুলি গ্রামের মৃত কালাচান মিয়ার ছেলে ইদ্রিস মির (৬০)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন ছেলে রিফাত। তিনি জানান, বর্তমানে যাত্রাবাড়ী মীর হাজারীবাগ এলাকায় থাকেন। তার বাবা আজাদ স্যানিটারি দোকানে কাজ করতেন।

যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল এলাকার মৃত আলী মোহাম্মদ ভুঁইয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (৫৫)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন ভাই মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া। তার ভাই ওই ভবনের ইউসুফ স্যানিটারি দোকানের মালিক।

কিশোরগঞ্জ করিমগঞ্জ থানার উলুকাঠা গ্রামের মো. হাশেম মিয়ার ছেলে হৃদয় (২০)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন তার বাবা মো. হাশেম মিয়া। তিনি জানান, বংশাল সিদ্দিক বাজার এলাকায় থাকতেন হৃদয় মিয়া। তিনি কিছু করতেন না।

ঢাকা কেরানীগঞ্জ কালীগঞ্জের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম সিয়াম (১৮)। মৃতদেহ শনাক্ত করেন তার বাবা দুলাল হোসেন। তিনি জানান সিয়াম জয়নাল স্যানিটারিতে কাজ করতেন। তিনি আরও জানান, আহত অবস্থায় পথচারীরা সিয়ামকে হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া সম্রাট (১৮) নামে আরও এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিকিট কাউন্টার থেকে মো. সুমন জানান, রাত রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত ১৭২ জন টিকিট নিয়ে চিকিৎসা নেন। ১৮ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়া সিদ্দিক বাজারের ঘটনায় ১১ জন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন। দগ্ধরা হলেন, মো. হাসান (৩২), ইয়াছিন (২৬), সুমা (৪৫), খলিল (৩৬), আজম (৩৬), উলি শিকদার (৫৫), আল আমিন (২৫), বাচ্চু মিয়া (৫৫) ও মোস্তফা(৫০)। মঙ্গলবার (৭মার্চ) রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন, বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন।

তিনি বলেন সিদ্দিক বাজারের ঘটনায় বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ১১ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে হাসানের ১২ শতাংশ, ইয়াসিনের ৫০শতাংশ, সুমার ৯৪ শতাংশ, খলিলের ৮শতাংশ, আজমের ৮০শতাংশ, উলি শিকদারের ২০শতাংশ, আল আমিনের ১৫ শতাংশ, বাচ্চু মিয়ার ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। মোস্তফার কিছুটা দগ্ধসহ অন্য আঘাত আছে। এদের চারজনের অবস্থা গুরুতর। ইয়াসিন ও হাসানকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ‘ক্যাফে কুইন’ নামে সাততলা ভবনের নিচতলায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় পাশাপাশি থাকা চায়না পয়েন্ট নামে আরেকটি পাঁচতলা ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার নাজমুল হক বলেন, বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৭ জন। এর মাঝে অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে।

সারাবাংলা/এসএসআর/আইই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর