‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেই সশস্ত্র অভিযানে নামে নিউক্লিয়াস’
৭ মার্চ ২০২৩ ২৩:৪২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬২ সাল থেকে শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিউক্লিয়াস নামে একটি গোপন সংগঠন গড়ে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ভাষণ শুনেই নিউক্লিয়াসের কর্মীরা সশস্ত্র যুদ্ধের কার্যক্রম শুরু করে দেয়।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত আলোচনা সভায় মেয়র এসব কথা বলেন।
তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ও নিউক্লিয়াসের সদস্য রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘সেসময় আমি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ছিলাম। সহযোদ্ধাদের নিয়ে আমরা গোপনে সংগঠিত হতে থাকি। আমাদের নিউক্লিয়াসের স্লোগান ছিল- বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো, জয় বাংলা, তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে বুঝতে পারি যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। যারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিলেন, তারা সেই ভাষণেই স্বাধীনতা আন্দোলনের ইঙ্গিত পান। আমরা গোপনে সশস্ত্র অভিযানের জন্য মাঠে নেমে পড়ি। ২৫ মার্চের কালরাতের পর স্বাধীনতার আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ পায়। সেই কালরাতের পর সাধারণ জনতাও অংশ নেয়, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।’
ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াসের মুছে যাওয়া ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, আবুল হাসনাত বেলাল, মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম সভায় বক্তব্য দেন।
সভায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে নগর ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচির শুরুতে সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
আলোচনা সভায় পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিনুর রহমান, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমেদ, এ কে এম সরোয়ার কামাল বক্তব্য দেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘মুজিব আমার পিতা’ চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পিপি কার্যালয় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে। জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আইন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, বিধান কুমার বিশ্বাস, চন্দন কুমার তালুকদার, আজহারুল হক, নাছির উদ্দিন, মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, শামসুদ্দীন আহমেদ সিদ্দিকী, জ্ঞানতোষ চৌধুরী, মো. মহসিন, পলাশ কান্তি চৌধুরী, শামশুল আলম, মনজুরুল আযম চৌধুরী, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, সিরাজ উদ্দিন, মো. রোকন, শামশুল হক, সুলতান মাহমুদ, সেলিনা আকতার, নূরজাহান ইসলাম, পিটু কুমার শীল, এ্যানি ঘোষ, জুয়েল চন্দ্র দাশ বক্তব্য দেন।
সারাবাংলা/আরডি/আইই