‘কেমিক্যাল বিস্ফোরণ নাকি অন্তর্ঘাতমুলক, তার তদন্তের প্রয়োজন’
৮ মার্চ ২০২৩ ২০:১৮
ঢাকা: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা ধ্বংসস্তূপ পর্যবেক্ষণ করেছি। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটল, এটা তদন্ত করা দরকার। এটি স্বাভাবিক কেমিক্যাল বিস্ফোরণের ঘটনা নাকি অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড সেটা জানতে তদন্তের প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, একটার পর একটা দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা অনেকগুলো প্রাণ হারিয়েছি। এটি মর্মান্তিক ঘটনা। এ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
বুধবার (৮ মার্চ) গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারের বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন বাহিনীর যারা বিশেষজ্ঞ আছে, তারা তদন্ত করে সঠিক ঘটনাটি বের করবে। আমি মনে করি, তারা যথেষ্ট যোগ্য। এগুলো তারা বোঝেন, জানেন এবং সে অনুযায়ী চেষ্টা করছেন।’
ঘটনাটি কেন অন্তর্ঘাতমূলক মনে হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তদন্তের আগে চূড়ান্ত কোনো কিছু বলার অবস্থা আসেনি। তবে আমি অবাক হচ্ছি বেজমেন্টের একটি বিস্ফোরণে বহুতল ভবনের একাধিক তালা কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এটা কি ধরনের বিস্ফোরক, সেটা বের করা প্রয়োজন। এটা অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনা নাও হতে পারে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এবং সাইন্সল্যাবে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, এটা কিসের ইঙ্গিত- সেটা ভাল করে বোঝার দরকার। যে যেখানে আছেন, সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। যে কোনো ধরনের সন্দেহজনক কিছু দেখলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করতে হবে।
কয়েক বছর আগে আমাদের দেশে বেশ কিছু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়েছে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট হয়ে তাদের ধরেছে।’
ঘটনার প্রেক্ষিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে অবশ্যই নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন আছে। তবে, যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, তারাই তদন্ত করে বের করবেন আসল ঘটনা কী।’
এছাড়া এক আলাদা বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশশের (এমএসএফ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল সিদ্দিকবাজার বিস্ফোরণে মৃত্যু ও আহতের ঘটনায় উদ্বেগ, গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এ ঘটনা কোনো নিছক দুর্ঘটনা বা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে আইনের শাসন আর জবাবদিহিতার অভাব ও বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির কারণে সংশ্লিষ্টজন এ ধরণের বেপরোয়া আচরণ করার সাহস পাচ্ছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণ, এলিফেন্ট রোডে মার্কেট ভবনে বিস্ফোরণ এবং এরপর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় শ্রমিক, কর্মচারিসহ সাধারণ মানুষ হতাহতের শিকার হয়েছেন।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং সে বিষয়ে সরকারের সুদৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণসহ দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে এমএসএফ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে ১০৮/১ ক্যাফে কুইন স্যানিটারী সাত তলা মার্কেটের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়েত পারে।
সারাবাংলা/ইউজে/আরএফ/ইআ