Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রস্তুত ইন্দো-বাংলা পাইপলাইন, বছরে আসবে আড়াই লাখ টন ডিজেল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ মার্চ ২০২৩ ২৩:৫৫

ঢাকা: বিশ্বজুড়ে জ্বালানির ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে যেখানে দেশের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করতে হয়, তখন বছরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন ডিজেল পাওয়ার সংবাদ সুখবর তো বটেই। এর মধ্য দিয়ে দেশের জ্বালানি খাতে উন্মোচিত হতে যাচ্ছে নতুন দিগন্ত। কারণ, জ্বালানি সরবরাহের জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত ‘ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’। বহুল প্রতিক্ষীত এই পাইপলাইন চলতি মাসেই কমিশনিং শুরু কথা জানিয়েছে। লাইনটি চালু হলে বাংলাদেশ বছরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন ডিজেল পাবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি করতে ২০১৮ সালের এপ্রিলে সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশ। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের আসাম রাজ্যের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) তেল শোধনাগার কেন্দ্র থেকে ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার পাইপলাইন পঞ্চগড় হয়ে দিনাজপুরের পাবর্তীপুরের রেলহেড ডিপোতে পৌঁছাবে। আর এই পাইপলাইনের মাধ্যমেই আসবে পরিশোধিত ডিজেল। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য কৃষিপ্রধান উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।

বিজ্ঞাপন

জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার পাইপলাইনের বাংলাদেশ অংশে ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার এবং ভারত অংশে রয়েছে পাঁচ কিলোমিটার। এই দূরত্বে পাঁচটি এসভি স্টেশন এবং পাবর্তীপুরে রিসিভড টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পটির কাজ গত বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ করতে বিলম্ব হওয়ায় উদ্বোধন সম্ভব হয়নি। বিপিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি মাসেই এই পাইপলাইনের মাধ্যমে কমিশনিং শুরু করা যাবে। দুই দেশের সরকার প্রধানের এই কমিশনিং উদ্বোনের কথা রয়েছে।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, পাইপলাইনটি চালু হলে দেশের উত্তরাঞ্চলে জ্বালানি তেল পরিবহন নিয়ে বিপিসিকে আর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিশোধিত ডিজেল আমদানি করা হবে। আর প্রথম বছরেই আসবে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। এর পরিমাণ পর্যায়ক্রমে প্রতিবছরই বাড়ানো হবে।

এ প্রসঙ্গে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, ‘চলতি মাসেই ইন্দো-বাংলা পাইপলাইনের কমিশনিং করা হবে। সেজন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এই পাইপলাইন দিয়ে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা সম্ভব।’

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপিএল) নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতের বিনিয়োগ প্রায় সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা। বাকি খরচ বিপিসির। পাইপলাইনটি ভারতের আসাম রাজ্যের নুমালিগড় রিফাইনারির শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর হয়ে পাবর্তীপুর ডিপোতে যুক্ত হয়েছে। আইবিএফপিএল’র মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহ ও পরিচালন ব্যবস্থা আধুনিক, যুগোপযোগী এবং সহজ হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পাশাপাশি তেল পরিবহন ব্যয় ও সময় সাশ্রয় হবে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আকাশ ছোঁয়া। বিশেষ করে ডিজেলের দাম বিগত কয়েক বছরের মধ্যে রেকর্ড ভেঙেছে। দাম বৃদ্ধির কারণে গত বছর জুনে দেশের ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বিশ্ববাজারে জ্বালানির এই পরিস্থিতিতে ভারত থেকে ডিজেল আমদানি করা গেলে দেশের কৃষিপ্রধান উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি সমস্যা কেটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ডিজেল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর