ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মাতৃভাষা রক্ষার লড়াইয়ের আন্দোলনে নির্দেশনা দেন। এরপরে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত একের পর এক বিভিন্ন আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এসব আন্দোলনে আমাদের বাবা-কাকারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় কাজ করে যেতেন। পূর্ব পাকিস্তান নাম মুছে ফেলে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর তাই টাকা-পয়সা নয় বরং স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতেন তারা।
১৯৭১ সালের ৬ মার্চেও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা অনুযায়ী ঝুঁকি নিয়ে মাইক লাগানোর কাজ করেন বাবা-কাকারা৷ পরদিন ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেদিনের সেই উত্তাল সমাবেশে মঞ্চ থেকে বঙ্গবন্ধু তর্জনী উঁচিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ চারপাশে লাগানো মাইকে সেই নির্দেশনা পৌঁছে যায় বাংলাদেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে।
এরপরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পরে মৃত্যুর মুখ থেকে দেশের মাটিতে ফিরে আসেন স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক। দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি কথা বলেন মাইক্রোফোনে। হ্যাঁ, যথারীতি সেদিনও মাইক্রোফোন ও মাইকের দায়িত্বে ছিল ‘কল-রেডী’।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাইক লাগানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন দয়াল ঘোষ। কারণ তার পরদিনই অর্থাৎ ১৬ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করেছিলেন। বাবা-কাকারা চেয়েছিলেন, ওইদিন বঙ্গবন্ধুকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাইক্রোফোন ও অন্যান্য স্মৃতিগুলো তাঁর হাতে তুলে দিবেন। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হয়নি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি শক্তির মদদে দেশবিরোধীরা হত্যা করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা।
এখনও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো অনুষ্ঠান বা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের অনুষ্ঠানে ডাক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছে যায় কল-রেডী। কিন্তু বাবা-কাকারা বঙ্গবন্ধুর কাছে যে উত্তাল দিনের স্মৃতিগুলো পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন তা এখনো তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয় নি।
হয়তো বা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেউ বলেই নি যে উনাদের আমানত স্মৃতি হিসেবে এখনো আমরা রেখেছি হস্তান্তর করার জন্য। কারণ বাবার ব্যবহার কথা যে কোনো স্মৃতিই সন্তানের কাছে অমূল্য। আমাদের বাবা-কাকারা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটা পূরণ করার অপেক্ষায় আছি তাই আমরা।
—আক্ষেপের সঙ্গে নিজেদের অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হওয়া নিয়ে এভাবেই কথা বলে যাচ্ছিলেন ত্রিনাথ ঘোষ যিনি সাগর নামে পরিচিত সবার কাছে। বর্তমানে কল-রেডী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্বনাথ ঘোষ।
সম্প্রতি (শুক্রবার, ৩ মার্চ) সারাবাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কল-রেডীর দায়িত্বে থাকা এই দুই ভাইয়ের সঙ্গে।
বিশ্বনাথ ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলার খবর রাতেই পেয়েছিলেন বাবা। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সেদিনও সারা ঢাকায় মাইক সেট করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার পর সেগুলো আর খুলে আনা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এরপর আমার বাবা-কাকাদের সেই পরিকল্পনার বিষয়ে আর কারও সঙ্গে আলোচনা হলো না। দেশ চলে গেলো খারাপ লোকদের হাতে। এ সময় আসলে অনেক ভয়েই দিন কাটাতে হতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সেদিনও ছিল আমাদের মাইক। সেই থেকে শুরু আবার। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের মাইক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনও প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন আমাদের সাউন্ড সিস্টেমে। এমনকি গত সপ্তাহে কিশোরগঞ্জেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ব্যবহার হয়েছিল আমাদেরই মাইক।’ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে সবচেয়ে বেশি আবেগ তার পরিবারের। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কানে গেলেই এগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে মনে করেন তিনি।
গত ১৪ বছরে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ ধারাবাহিকতায় কলরেডির প্রচার যন্ত্রগুলো সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেবে ক্ষমতাসীনরা, এমন আশা কলরেডির বর্তমান প্রজন্মের।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ কিন্তু শুধুমাত্র অস্ত্র নিয়ে করলেই হয় না। একটা যুদ্ধে অনেক ধরনের সমর্থন লাগে। যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন সেই সকল মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা বাদেও সেই সময় অনেকে পরোক্ষভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কেউ বা অন্ন দিয়ে, কেউ বা বস্ত্র দিয়ে আবার কেউ বা অন্যভাবে সাহায্য করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময়েই গর্ব করি, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাতে আমাদের কল-রেডী মাইকের লোগো ছিল। এ এক বিশাল স্মৃতি। সেই ভাষণটিই ছিল মূলত স্বাধীনতার ঘোষণা। এই মাইক্রোফোন দিয়েই সারাদেশের মানুষ স্বাধীনতার ঘোষণা ও নির্দেশনা শুনে। যেখানে বঙ্গবন্ধু পরিষ্কার ভাষায় বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
কল-রেডীকে কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি বলে আক্ষেপ থাকলেও সাগর ঘোষের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যদি জানতে পারেন ৭ মার্চের ভাষণের সেই স্মৃতিগুলো এখনও সংরক্ষিত আছে তবে উনি অবশ্যই সেগুলো মূল্যায়ন করবেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ যেকোনো কাজই করুক না কেনো তিনি বা তার প্রতিষ্ঠান একটু কাজের স্বীকৃতিটা চায়। যেকোনো ভালো কাজের স্বীকৃতি সবাই পায়। আমরা ব্যক্তিগতভাবে কিছু চাই না কিন্তু আমরা চাই যে মাইক্রোফোনে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তা যেনো আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে তুলে দিতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা যখন বেঁচেছিলেন তখন প্রায় সময় বলতেন একদিন এই ঐতিহাসিক মাইক্রোফোনের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এখন যদি সেটা পাওয়া যায় তবে হয়তো বা ওনাদের আত্মা শান্তি পাবে।’
কল রেডীর চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের জন্য যা যা ব্যবহার করা হয়েছিল তা সবই আছে আমাদের কাছে। আমরা এগুলোকে ঐতিহাসিক নথি মনে করি। সেই মাইক্রোফোনসহ সবকিছু। আওয়ামী লীগ সরকার চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায়। আমরা কখনও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে যাইনি। কিন্তু তাও চাই এই ঐতিহাসিক সাক্ষীগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করতে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই আমাদের কাছে আসেন এসব ঐতিহাসিক সাক্ষীগুলোর কিনে নেওয়ার জন্য। কিন্তু ওনারা আসলে এগুলোর মূল্য বুঝবেন না। এগুলোর গুরুত্ব শুধুমাত্র বুঝবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আর তাই আমরা ওনার হাতেই এসব হস্তান্তর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে ব্যবহার হওয়া মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ডটি আমরা সংরক্ষণ করে রেখেছি। যেসব অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে সাতটি এখনও আছে। মাইক্রোফোনের মধ্যে আছে চারটি। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এসব সংরক্ষণ করে আসছি।’
বিশ্বনাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটা সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা না গেলে এগুলোও হয়তো একসময় নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমরা চাই এগুলো বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে হস্তান্তর করতে।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে একমাত্র উনিই এগুলোর মর্ম বুঝবেন’— সারাবাংলাকে এসব কথা বলেন কল-রেডীর পরিচালক সাগর ঘোষ ও চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ ঘোষ।
বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন সময়ে কলে-রেডির অফিসে গেছেন উল্লেখ করে সাগর ঘোষ বলেন, ‘তিনিই ছিলেন তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে যাওয়া একমাত্র নেতা। ওনাকে যেদিন বঙ্গবন্ধু বলে ঘোষণা দেওয়া হয় সেদিনও ছিল আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাইক।’
তিনি বলেন, ‘১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে ১৯৭০-এর নির্বাচন। সেখানে জয়লাভের পরেও আমাদের সরকার গঠন করতে দেওয়া হয়নি। এরপর শুরু হয় চূড়ান্ত আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে পতাকা উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের। এরপরে ৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু আমার বাবা ও জ্যাঠামশাইকে ডাকেন। সেখানে তিনি বলেন, ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) একটি জনসভা হবে। সেখানে যেন মাইক লাগানো হয়। কিভাবে লাগাতে হবে, কোথায় লাগাবেন সেসব সিদ্ধান্ত বাবাদের ওপরে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবা ও জ্যাঠামশাই সেদিন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা শুনে ফিরে আসেন। উনাদের মধ্যে একটা দায়িত্ববোধ কাজ করে যদিও তখন ওনারা বুঝতে পারেননি কী হতে চলেছে। আবার একদিকে ভয়ও কাজ করে কিছুটা কারণ পরিস্থিতি তখন স্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে কাজ তো করতেই হবে। টাকার জন্যে নয় বরং স্বাধীনতা অর্জন করার জন্য কাজ করে যেতে হবে। এরপরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা মোতাবেক মাইক লাগানো হলো।’
সাগর ঘোষ জানান, ‘১৯৭১ সালে কানাই ঘোষের বয়স ছিল ১৭-১৮ বছর। ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচার হয়েছিল কানাই ঘোষ আর তার দুই ভাইয়ের লাগানো মাইকে। সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আশেপাশে থাকার পরও জনসভার আগের দিন ৬ মার্চ কানাই ঘোষ তার অন্য দুই ভাইকে নিয়ে রেসকোর্স ময়দানে মাইক লাগাতে যান।’
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চ অনেক ঝুঁকি সত্ত্বেও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে মাইক লাগিয়েছেন তিনি। বলতে গেলে একপ্রকার হাতে প্রাণ নিয়েই বাবা-কাকারা কাজ করেছেন। সেদিন ৭০টারও বেশি মাইক লাগানো হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যখন ভাষণ শুরু করেন তখন তারা সবাই কাছাকাছিই ছিলেন।’
বর্তমানে কল-রেডীর সেই সময়কার মালিকদের মধ্যে কেউ আর জীবিত নেই। দুই বছর আগে মারা গেছেন কানাই ঘোষ।
তিনি আরও বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, সেই ১৮ মিনিটের ঐতিহাসিক ভাষণ। এই ভাষণ শুধু পাকিস্তানিদের মনোবলই ভাঙেনি বরং বাংলাদেশের সকলের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই ভাষণই ছিল মূলত স্বাধীনতার ঘোষণা। যে ভাষণকে এখন জাতিসংঘও স্বীকৃতি দিয়েছে।’
দেশ স্বাধীনের পরও বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কল-রেডীর মাইক ব্যবহার করা হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর শত্রুর ডেরায় মৃত্যুর মুখ থেকে বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরে এলেন বঙ্গবন্ধু। এরপরে বঙ্গবন্ধুর প্রায় প্রতিটি ভাষণে ব্যবহার করা হতো কল-রেডীর মাইক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশবিরোধী শক্তিরা।’
আর এরপর থেকেই তো দেশ হারাতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে সরকার গঠন করে— উল্লেখ করেন বিশ্বনাথ ঘোষ।
এসময় সাগর ঘোষ ও বিশ্বনাথ ঘোষ উভয়েই সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে আমরা প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাউন্ড সিস্টেমের কাজ করে থাকি। কিন্তু সেখানে তো আর উনার কাছে গিয়ে আলাদাভাবে আমাদের বক্তব্য জানাতে পারি না। আমরা তাই উনাকে জানাতে পারি না বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিগুলোর বিষয়ে। তাও অপেক্ষায় আছি হয়তোবা কোনো এক সময় তিনি জানবেন। এরপরে তিনি নিজেই সেটা চেয়ে নিবেন। এরপরে সংরক্ষণের জন্য জাদুঘর বা কোনো একটা স্থানে রাখবেন। যেখানে গিয়ে নতুন প্রজন্মের শিশু থেকে তরুণরাও জানতে পারবে ইতিহাস সম্পর্কে। তারা জানতে পারবে কিভাবে একটা তর্জনি তুলে দেওয়া গর্জনে স্বাধীনতা লাভ করেছিল বাংলাদেশ। আমাদের শুধু সেটারই অপেক্ষা।’