Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জেলায় জেলায় মেলা করে পাটপণ্যকে এগিয়ে নিতে হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ মার্চ ২০২৩ ১২:৪০

ঢাকা: বহুমুখী পাটপণ্যের প্রসার বাড়াতে আরও বেশি করে দেশ ও বিদেশে পাটপণ্যের প্রদর্শনী করার নির্দেশ দিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক)। তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে পাট মেলার আয়োজন করতে হবে। কোনো মাস যেন মেলাবিহীন না থাকে। জেলায় জেলায় মেলা করে আমাদের উদ্যোক্তাদের পণ্য সেখানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। এতে পাটপণ্যের প্রসার ঘটবে এবং তারা স্বাবলম্বী হবেন।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (১২ মার্চ) সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘জাতীয় পাট দিবস ২০২৩ উদযাপন’ উপলক্ষ্যে বহুমুখী বিক্রয় ও প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ, জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহমুদ হোসেন। এসময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘যত পারেন পাটপণ্যের মেলার আয়োজন করতে হবে। এতে দেশে পাটপণ্যের চাহিদা যেমন বাড়বে, তেমনি এ খাতের উদ্যোক্তাদের বিক্রিও বাড়বে। এতে তারা দেশের বাইরেও পাটপণ্য রফতানি করতে উৎসাহী হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘পাটপণ্য দিন দিন গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। এখন আমাদের আরও উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে। উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রে আমরা ভারতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছি। সরকার উদ্যোক্তা তৈরি করতে আগ্রহী। কারণ উদ্যোক্তা ছাড়া দেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পাটজাত পণ্যকে বর্ষপণ্য-২০২৩ এবং সোনালী আঁশ পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে, পাটপণ্যকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। সে লক্ষ্যে পাটখাতের অংশীজনসহ বছরব্যাপী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী, সেমিনার, সভা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে ও পাটসমৃদ্ধ ফরিদপুর জেলায় পাট ‍ও পাটজাতপণ্য প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘পাট দিবস উপলক্ষে রাজধানীর করিম চেম্বারে আমরা পাট পণ্যের মেলার আয়োজন করেছি। সেখানে ২৮টি স্টল বসানো হয়েছে। প্রতিটি দোকান এক মাস করে চলবে। এক মাস পর সেখানে আবার নতুন ২৮টি দোকান বসবে। এভাবে সেখানে বছরব্যাপী মেলা চলবে। এসব দোকানের জন্য কোনো ভাড়া নেওয়া হবে না। কেবল সার্ভিস গ্যাস ও বিদ্যুতের জন্য চার্জ দিতে হবে। আগামী দিনে জাতীয় জাদুঘরেও আমরা বহুমুখী পাটপণ্যের মেলার আয়েজন করা হবে। এ ব্যাপারে আমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছি।’

ভারত পাটপণ্যের বহুমুখী ব্যবহারে আমাদের চেয়ে ৯০ শতাংশ এগিয়ে রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে বিশ্বে আমাদের অবদান মাত্র ১০ শতাংশ অথচ আমরা সবচেয়ে ভালো মানের পাট উৎপাদন করি। তৈরি পোশাকখাতে যদি আমরা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছি, সেখানে পাটপণ্যে কেন আমরা ১০ শতাংশে থাকবো। প্রতি বছর জেলায় জেলায় পাটপণ্যের মেলার আয়োজনের মাধ্যমে পাটকে এগিয়ে নিতে হবে। শুধু বাংলাদেশে নয় আমরা পাটপণ্যের মেলাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই। কারণ এই পণ্যের চাহিদা সারাবিশ্বব্যাপী। এ ব্যাপারে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি তৎপর হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাটখাতের অনেক উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন তারা সরকার ঘোষিত ৪ শতাংশে সুদে প্রণোদনার ঋণ পাচ্ছেন না। কেন তারা এই ঋণ পাচ্ছেন না, এই বিষয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়কে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্যোক্তারা যাতে ঋণ সুবিধা পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।’

রোববার (১২ মার্চ) থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে। এবার মেলায় ৭২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে বহুমুখী পাটপণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। বহুমুখী পাটপণ্যের উদ্যোক্তারা ২৮২ প্রকার দৃষ্টিনন্দন পাটপণ্য উৎপাদন করছেন। প্রদর্শণীতে পাটের প্রায় সব পণ্য রয়েছে।

সারাবাংলা/জিএস/এমও

গোলাম দস্তগীর গাজী পাটপণ্য পাটপণ্যের প্রদর্শনী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর