Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শরীরে ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষত তৈরি করে ভিক্ষায় বাধ্য করতো মা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ মার্চ ২০২৩ ২২:২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নিজের কিশোরী মেয়েকে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করার মামলায় এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পলিথিনে আগুন লাগিয়ে মেয়ের শরীরে ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করতেন এই নারী। এরপর সেই ক্ষত দেখিয়ে মেয়েকে ভিক্ষা করতে বাধ্য করতেন। সম্প্রতি ওই কিশোরীকে গৃহ সহকারীর কাজ দেওয়া এক দম্পতিকে মামলায় জড়িয়ে ফেঁসে গেছেন এই নারী।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১২ মার্চ) রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার বদনাশাহ মাজারের সামনে থেকে ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হোসনে আরা বেগমের (৩৮) বাবার বাড়ি রাঙামাটি এবং স্বামীর বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় খালেক কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা সারাবাংলাকে জানান, ২০২২ সালের ২৭ মে হোসনে আরা বেগম তার ১১ বছর বয়সী মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে রাশেদ ও রুমু নামে এক দম্পতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।

নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করি। আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে মেয়েটি জানায়, সে বদনাশাহ মাজারের সামনে ভিক্ষা করত। মা তার পা পুড়িয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে ভিক্ষা করতে পাঠাত। সড়ক দুর্ঘটনায় তার ছোট ভাইয়ের পা ভেঙ্গেছিল। তার মা রাস্তায় ছেলেকে নিয়ে কান্না করছিল। তখন রুমু নামে এক পথচারী মহিলা তাকে দেখে টাকাপয়সা দিয়ে সহযোগিতা করেন। মেয়েটিকে বাসায় নিয়ে কাজের সুযোগ দেন।’

পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা জানান, জবানবন্দিতে আসা তথ্য আদালত বিবেচনায় নিয়ে নিজের মেয়েকে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়ানোর অভিযোগে হোসনে আরাকে আসামি করে মামলা করার জন্য পাঁচলাইশ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পুলিশের করা ওই মামলায় হোসনে আরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার সারাবাংলাকে জানান, হোসনে আরার স্বামী মারা গেছেন। ওই মহিলা মেয়েকে ভিক্ষা করতে বসিয়ে দিয়ে দূরে ফুটপাতে বসে থাকতেন। ভিক্ষার টাকায় সংসার চালানোর পাশাপাশি হোসনে আরা একটি অ্যানড্রয়েড ফোন কিনে টাকার বিনিময়ে লুডু খেলতেন।

বিজ্ঞাপন

২০২১ সালে হোসনে আরার ছোট ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে ফেলে। চিকিৎসার টাকার জন্য তিনি রাস্তায় কান্নাকাটি করতে থাকেন। ফারজানা আলী চৌধুরী রুমু কান্নারত মহিলাকে দেখে সহানুভূতিশীল হয়ে কয়েকধাপে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা দেন। পাশাপাশি হোসনে আরার ১১ বছর বয়েসী কিশোরী মেয়েকে ভিক্ষা করতে না দিয়ে নিজের বাসায় গৃহসহকারী হিসেবে নিয়োগ দেন।

নাঈমা সুলতানা বলেন ‘মেয়েটিকে একেবারে নিজের পরিবারের সদস্যের মতোই রেখেছিলেন রুমু ও তার স্বামী রাশেদ। নতুন পোশাক কিনে দিতেন, মায়ের সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলিয়ে দিতেন এবং বেতনের টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তিতে আয় বেশি হওয়ায় হোসনে আরা তার মেয়েকে আবারও একই কাজের নামানোর ফন্দি এঁটে দম্পতিকে অপহরণ মামলায় ফাঁসিয়ে দেন।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

আগুন ক্ষত

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর