Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গতি ৩০ কিমির বেশি নয়, প্রশ্নবিদ্ধ মোটরসাইকেল নীতিমালা

রাজনীন ফারজানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ মার্চ ২০২৩ ২১:৩২

ঢাকা: শহরের মধ্যে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি ৩০ কিলোমিটারের সুপারিশ রেখে মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা-২০২৩ এর খসড়া প্রণয়ন করেছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- এই নীতিমালা কার্যকর হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে পাশাপাশি সচেতন হবেন চালকরাও। কিন্তু সরকারের খসড়া এই নীতিমালা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এই নীতিমালাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করছেন না যাত্রী অধিকারকর্মী কিংবা মোটরসাইকেল চালকরা।

বিজ্ঞাপন

সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮ এর ধারা ৩২ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার ‘মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা-২০২৩’ প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালায় ২০টির বেশি নির্দেশনা আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি নির্দেশনা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন-সমালোচনা। এগুলো হলো- মহাসড়কে সর্বনিম্ন ১২৬ সি সি ইঞ্জিন বা সমতূল্য ক্ষমতার (‘ল’ সিরিজ) এর চেয়ে নিম্ন ক্ষমতার মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না; মহাসড়কে চলাচলের জন্য এবিএস (অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম) থাকতে হবে; ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, দুর্গাপূজা ইত্যাদির আগে ও পরে ১০ দিন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে মোটরসাইকেল চালানো যাবে না; শহরের মধ্যে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার।

বিজ্ঞাপন

খসড়া নীতিমালার এ সব নির্দেশনা বাতিলের জন্য মানববন্ধন ও সমাবেশ করে রাজধানীর বাইকাররা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উঠে আসে গণপরিবহন ব্যবস্থা ঠিক না করে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা যুক্তিহীন। মানুষ বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেলে ঝুঁকছে। তাই তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করে এ নীতিমালা প্রণয়ন ঠিক হবে না। শহরে মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা লেন নেই, অন্য গণপরিবহনগুলোর গতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেই। এমন অবস্থায় মোটরসাইকেলের গতি কম হলেও তাতে দ্রুতগতির যানবাহন ধাক্কা দেবে। ফলে দুর্ঘটনা কমার চেয়ে বরং বাড়বে।

মোটরসাইকেল জনপ্রিয়তার বাস্তবতা: গণপরিবহনের স্বল্পতা, প্রাইভেটকারের চেয়ে সস্তা, সহজে চলাচল করা যায়, রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে আয়, দ্রুতগতিসহ নানা কারণে বেড়েছে মোটরসাইকেলের চাহিদা।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ’র হিসেব অনুযায়ী— দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত মোটরসাইকেল রয়েছে ৪০ লাখ ৬৮ হাজার ৮১৯টি। আর নানা ধরনের গণপরিবহন রয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭৮টি। গণপরিবহন অর্থাৎ অটোরিকশা, অটোটেম্পু, বাস, হিউম্যান হলার, মিনিবাস ও ট্যাক্সিক্যাবের বাইরে বাসের সংখ্যা ৫২ হাজার ৪৬৮টি। গণপরিবহনের বিপরীতে মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় দশগুণ। আর ব্যক্তিগত যানবাহনের মধ্যে প্রাইভেট প্যাসেঞ্জার কার রয়েছে ৪ লাখ ৬৫৭টি এবং মাইক্রোবাসের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৮১২টি। প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের তুলনায় দেশে নিবন্ধিত মোটরসাইকেল প্রায় ৮ গুণ বেশি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে— দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও প্রতিবছরই দেশে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৯ সালে দেশে চার লাখের ওপরে থাকলেও মাঝখানে করোনা মহামারির মধ্যে এটি কমে তিন লাখের ঘরে নেমে আসে। ২০২২ সালে নিবন্ধিত মোট মোটরসাইকেল ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৯১২টি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এটি ৬ লাখের বেশি।

ঝুঁকির কারণ মোটরসাইকেলও: সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল নানা সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি ডেকে এনেছে নানা ধরনের ঝুঁকিও। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে-পরের দুই সপ্তাহে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত হন। নিহতের ৪৩ শতাংশই ছিল মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০২১ সালে ২ হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যান ২ হাজার ২১৪ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর ৩৫ শতাংশ।

২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ এবং এই দুর্ঘটনাগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা ৫১ শতাংশ বেড়ে যায়।

সংগঠনটির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২২ সালে ২ হাজার ৯৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯১ জন মারা গেছেন, যা মোট মৃত্যুর ৪০ দশমিক ০৭ শতাংশ।

এমন পরিপ্রেক্ষিতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে প্রস্তাবিত নীতিমালার কয়েকটি ধারা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। এসব ধারা বাতিলের জন্য মানববন্ধন ও সমাবেশ করে রাজধানীর বাইকাররা।

যা বলছেন চালকরা: মোটরসাইকেল চালকরা জাতীয় সংসদ এলাকা ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্প্রীতি আলাদা মানববন্ধনে প্রস্তাবিত নীতিমালায় উপরিউক্ত নির্দেশনাগুলো বাতিলের দাবি তোলেন। তাদের ভাষ্য- শহরের অন্যান্য যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ না করে শুধুই মোটরসাইকেলের গতি সর্বোচ্চ তিরিশ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হলে তা দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়াবে। এ ছাড়া ঈদসহ অন্যান্য উৎসবে গণপরিবহনে যাতায়াত শুধু কষ্টসাধ্যই না এর পেছনে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। তাই সে সময় বাধ্য হয়ে যাত্রীরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন। মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করা না গেলে যাত্রীরা গণপরিবহনের স্বেচ্ছাচারিতার কাছে জিম্মি হয়ে পড়বেন।

মোটরসাইকেল চালক ইয়াসিন হক বলেন, ‘রাস্তার অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে কম গতিতে চললে তো দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি হবে। কারণ মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা লেন নেই। একই রাস্তায় একেক গাড়ির একেক স্পিড লিমিট থাকতে পারে না।’

ঢাকার মহাখালীর বাসিন্দা মাহবুব হাসান সজীবের অফিস টঙ্গী আর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ। ঢাকার ভেতরে চলাচল তো বটেই টঙ্গী ও কিশোরগঞ্জ যেতে তিনি মোটরসাইকেলে বেশি স্বাছন্দ্য বোধ করেন। কারণ হিসেবে জানালেন এটি সাশ্রয়ী, সময় কম লাগে ও ভোগান্তি কম হয়।

তার অফিস শুরু হয় সাড়ে ৭টায় আর ছুটি হয় সাড়ে ৪টায়। মোটরসাইকেলে অফিসে যেতে তার চল্লিশ মিনিটের কম সময় লাগে। যেখানে বাসে লাগে ঘণ্টা দেড়েকের মতো। অফিস শেষে বাসায় ফিরতে মোটরসাইকেলে সময় লাগে কম।

এ ছাড়া কিশোরগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে বাসে না গিয়ে মোটরসাইকেলে কেন যান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ি থানা শহর থেকে কিছুটা দূরে। ঢাকা থেকে ভালো বাস সার্ভিসও নেই। সবই লোকাল বাস। প্রচণ্ড ভিড় থাকে। আবার গাদাগাদি করে যেতে হয়, যা স্বাস্থ্যসম্মত না। এ ছাড়া খরচও বেশি। মহাখালী গিয়ে বাসে উঠে গ্রামের বাড়ি পর্যন্ত যেতে বাসে অন্তত ৫০০ টাকা লাগে। মোটরসাইকেলে লাগে ২০০ টাকা।’

তার দাবি- মোটরসাইকেলে ভ্রমণে কম সময় লাগে, ভ্রমণে ক্লান্তিও আসে তুলনামূলক কম।

যা বলছেন যাত্রী অধিকারকর্মীরা: রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গেছে দ্রুতগতি একটি বড় ফ্যাক্টর। আমরা গতি নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও তা ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে রাখার জন্য বলছি না।’

তিনি বলেন, ‘গতিসীমা ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি হবে। এতে অন্যান্য যানবাহনের মাধ্যমে তাদের দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। তবে স্পিড নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি গণপরিবহন সহজ, সাশ্রয়ী ও গণবান্ধব করতে হবে। তারপরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

তার ভাষ্য— মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার জন্য চালকদের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদাসীনতাও দায়ী। তারা যদি ট্রাফিক আইন মানতে বাধ্য করেন তাহলে দুর্ঘটনা কমে যাবে।

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের নেপথ্যে পরিবহন মালিকদের স্বার্থ জড়িত আছে বলেও মনে করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘কোনো নীতিমালা করতে হলে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা মনে করি মোটরসাইকেল কখনও গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না। মোটরসাইলকে বিকশিত করে এমন নীতিমালা আমরা চাই না। একইসঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা গণপিরবহনের ওপর ত্যক্ত-বিরক্ত হয়েই মোটরসাইকেলের দিকে ধাবিত হচ্ছিলাম। এটিকে গণপরিবহন হিসেবে যে আমরা খানিকটা স্বস্তির ভাবছি- তা আসলে সরকারের গণপরিবহনের দুর্বল নীতির বহিঃপ্রকাশ। সুতরাং মোটরসাইকেলের গতি থামিয়ে দিলে তা দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় আরও ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। নতুন এই নীতিমালা করলে দেখা যাবে, পুলিশ টাকা খাওয়ার নতুন উপলক্ষ পাবে। যা আমি সমীচীন মনে করি না।’

যা বলছে কর্তৃপক্ষ: খসড়া এই নীতিমালা বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিতে (বিআরটিএ) যোগাযোগ করা হলে কেউ মন্তব্য করতে চাননি। এ বিষয়ে বিআরটিএ মহাপরিচালকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের এআরআই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি বলেন, ‘শহরাঞ্চলে ৩০ কিলোমিটার গতিসীমা আন্তর্জাতিকভাবে মানা হয়। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘের নানা গবেষণায় এটি প্রচার করা হচ্ছে। শহরাঞ্চলে পথচারীর চলাচল বেশি থাকায় এটি করা হয়।’

যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তিকে যদি ৩০ কিলোমিটারের নিচের গতির কোনো গাড়ি ধাক্কা দেয় তাহলে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নব্বই শতাংশ। কিন্তু এর চেয়ে বেশি গতির গাড়ি ধাক্কা দিলে মারা যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। শহরাঞ্চলে গতি পঞ্চাশ বা ষাট থাকলে তা দুর্ঘটনায় মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।’

তিনি জানান, বাংলাদেশে শুধুমাত্র ন্যাশনাল হাইওয়েতে (সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার) ছাড়া আর কোন এলাকায় কত গতিতে গাড়ি চলবে তার নির্ধারিত মাত্রা নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ৩০ কিলোমিটার গতিসীমা সব যানবাহনের জন্যই একই।

বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি বলেন, ‘প্রতিটি অঞ্চলে গাড়ির জন্য আলাদা নীতিমালা থাকতে হবে। বিগত দুই বছরে হাইওয়েতে যে পরিমাণ সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেছে, তার জন্যই মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে। এটি খসড়া নীতিমালা, যা পরিবর্তনযোগ্য।’

এদিকে গত বছরের ১৭ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত জাতিসংঘের রোড সেফটি সপ্তাহের থিম ‘স্ট্রিট ফর লাইফ’ শহরের মধ্যে আবাসিক এলাকা, স্কুল ও হাসপাতাল এলাকায় সব ধরনের যানবাহনের গতসীমা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিরিশ কিলোমিটার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রস্তাবিত আইনে দেখা যাচ্ছে— অন্যান্য যানবাহন নয়, শুধুই মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে তাও নির্দিষ্ট এলাকা নয়, সমগ্র শহরজুড়েই। বুয়েটের এই শিক্ষক বলেন, একে একে অন্যান্য যানবাহনের গতিসীমা নির্ধারণ করা হলেই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু প্রতিরোধ করা যাবে।

সারাবাংলা/আরএফ/একে

নীতিমালা বিআরটিএ মোটরসাইকেল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর