Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএসএমএমইউ’র সমাবর্তন নিয়ে ক্ষোভ, আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ!

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ মার্চ ২০২৩ ০৭:৫৮

ঢাকা: ১৩ মার্চ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চতুর্থ সমাবর্তনে অংশ নিতে পরিবার সদস্যদের নিয়ে আসেন ডা. রাজিবুল (ছদ্মনাম)।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে অনেক পরিকল্পনা ছিল। তাই পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করি। আর এই অনুষ্ঠান আমাদের জন্য অবশ্যই বিশেষ কিছু। পরিবার সদস্যদের নিয়ে তাই অনুষ্ঠানের দিন সকালেই এসে পৌঁছাই রাজশাহী থেকে। অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর পরে মন খারাপের শুরু। মূল অনুষ্ঠানে প্রবেশ করে দেখি সেখানে আমরা তো দূরের কথা, আমাদের অনেক শিক্ষকরাও বসার স্থান পাননি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘খাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও আমরা কিছুই পাইনি। কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে শাহবাগ মোড়ে যখন খেতে যাই পরিবারসহ তখন জানতে পারি গাউন ফেরত দিতে হবে। একইসঙ্গে অনুষ্ঠানে দেওয়া স্যুভেনিরও। কিন্তু সেই স্যুভেনিরও আমি পাইনি। তবে এক বন্ধুর কাছে যা দেখলাম তাতে মনে হলো না পেয়ে ভালোই হয়েছে। সেখানে নামের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ভুল ছবি। একজনের নামের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ভিন্ন জনের ছবি। আবার দেখা গেছে, এক বিভাগের চিকিৎসককে দেওয়া হয়েছে আরেক বিভাগে। এভাবে আসলে ডেকে নিয়ে সম্মাননা জানানোর নামে অপমান না করলেই ভালো হতো।’

সোমবার (১৩ মার্চ) বিএসএমএমইউতে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ডা. রাজিবুল আক্ষেপের সঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এভাবে অব্যবস্থাপনা ও অপমানিত হওয়াটা ভালো লাগেনি। তার ওপর অনেক আশা করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে করে নিয়ে এলাম। তাদের কাছেও বিষয়টা ভালো লাগে না। শেষভাগে যে বিশৃঙ্খলা হয় সেটা তো ছিল চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনা। নারী শিক্ষার্থী বেশি থাকলেও দেখা গেছে সেভাবে হল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আর তাই এটা নিয়ে ক্ষোভ জানানো ছাড়া আর কিছু করার নেই। তবে সেটা প্রকাশ না করলেই আমার জন্য ভালো হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি পাঁচ হাজার টাকা হলেও আমাদের কাছ থেকে মোট নেওয়া হয়েছে আট হাজার টাকা। এর মাঝে তিন হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে সার্টিফিকেট বাবদ। একটা সনদ, যা অর্জনের জন্য আমরা পরিশ্রম করেছি সেটার মূল্য কিভাবে তিন হাজার টাকা হয়? আবার একটু হিসেব করে দেখেন সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী যদি আট হাজার টাকা করে দেয় সেক্ষেত্রে মোট কত টাকা উঠেছে? নিজস্ব ক্যাম্পাসে হল ভাড়া দিতে হয়নি, কোনো নাস্তার ব্যবস্থা ছিল না, ওয়াশ করা ছাড়া দুর্গন্ধযুক্ত গাউন আনা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাড়া করে। যা সবাইকে ফেরত দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুপুরের খাওয়া পাইনি। যারা পেয়েছে তারা জানিয়েছে, চিকেন বিরিয়ানি ছিল সাদামাটা; আর সঙ্গে একটা সরকারি পানির বোতল ও ছোট কোল্ড ড্রিংক্স। যার বাজার মূল্য সর্বোচ্চ ১২০ থেকে ১৩০টাকা হতে পারে। তাহলে আমরা যে রেজিস্ট্রেশন করলাম পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে সেটা খরচ হলো কোথায়? এগুলো অডিট করলেই ধরা পড়বে।’

বিএসএমএমইউতে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে প্রায় একই রকমের আক্ষেপ দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন রকমের আক্ষেপ। প্রায় সবারই অভিযোগ অব্যবস্থাপনা নিয়ে। একইসঙ্গে পাওয়া গেছে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও।

আর্থিক অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করলেও কর্তৃপক্ষ অব্যবস্থাপনার দায় স্বীকার করে বলছেন, অল্প সময়ে এত বড় আয়োজন করতে গিয়ে কিছু বিভ্রান্তি হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যেন এর জন্য মন খারাপ না করে সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।

তবে অব্যবস্থাপনার চূড়ান্ত মাত্রা প্রকাশ পায় সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের স্যুভেনির বা বই দিতে না পারার কারণে আয়োজনের প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির নামে দেওয়া বিএসএমএমইউ’র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পেইজের পোস্টের মাধ্যমে। সদস্য সচিব পদ উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করে সেই পোস্ট দেওয়া হলেও একটু পরে সেটি সরিয়ে নেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, দেশের চিকিৎসাশাস্ত্রের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমন অব্যবস্থাপনা আশা করা যায় না। প্রুফ রিডার ছাড়া কিভাবে বই প্রকাশিত হয়? রেজিস্ট্রেশন শেষে তো কর্তৃপক্ষের জানা থাকার কথা কতজন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। সেই হিসেবে জায়গা বরাদ্দ না রাখাটাও তো শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার মতো। আর এত বড় একটা আয়োজন যাদের ঘিরে তাদেরই খাওয়া দেওয়া হবে না?

সমাবর্তনের অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে যে বই দেওয়া হয় তাতে দেখা যায়, একজনের পুরুষ চিকিৎসকের পাশে লিখে দেওয়া আছে নারীর নাম। আবার কোনো শিক্ষার্থীর নামের পাশে লেখা হয়েছে এমডি পেডিয়াট্রিকস। বইয়ের ৮৫ তম পৃষ্ঠায় ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিন বিভাগের মো. রেফাত উদ্দিন তারেক নাম দেখা যায় ২৪টি ছবির পাশে। এছাড়াও বিভাগ বিভ্রান্তিও দেখা গেছে বইটিতে।

শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনোয়ার এইচ পল্লব নামে একজন শিক্ষার্থী জানান, ‘৫০০০/- টাকা নিয়ে একটা ক্যাপ+ এক প্যাকেট ড্রাই বিরিয়ানি দিয়ে যে দুর্নীতির নজির সৃষ্টি করলেন তাতে আমরা লজ্জিত। আপনারা এতটাই গরীব যে একটা ক্রেস্ট ও দিতে পারলেন না। নোটিশে বলেছিলেন সার্টিফিকেট প্রদানের সময় যারা ৫০০০/- দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন তাদেরকে ২০০০/- টাকা রিফান্ড করে হবে। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য সেটা পেলাম না।সদকায়ে জারিয়াহ হিসেবে বিএসএমএমইউকে ওই টাকা দান করে গেলাম।’

মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম নামে আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘সমাবর্তনের নামে চিকিৎসকদের সাথে যে প্রহসন আর বাণিজ্য বিএসএমএমইউ করলো আজকে তা ইতিহাসে কলঙ্ক অধ্যায়! আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টজনেরা অর্থবাণিজ্য করার জন্য এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন বলেই আমার মনে হয়েছে! ৫০০০/ টাকা করে সমাবর্তন ফি টাকা নিয়ে ১৫০/ টাকার লাঞ্চ ছাড় ডা: আর কিছুই দেইনি বিএসএমএমইউ! এই কলঙ্ক রচনার নেপথ্যের কারিগর সহ সবাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন মনে রাখবেন বলেই আমার বিশ্বাস।’ মনে রাখবেন, ‘পাপ কখনও বাপ কে ছাড়ে না’- বলেও মন্তব্য করেন মাজহারুল ইসলাম।

মাহমুদ সৈকত নামে আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘কনভোকেশন বলে কথা..! তাইতো ডাক্তাররা ফেসবুক কে বর্ণিল করেছে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, যা বলা দরকার – কনভোকেশনের নামে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ যা করেছে তা বঙ্গবন্ধুর নামের প্রতি অসম্মান। অনেকে বলেছেন- ‘অব্যবস্থাপনা’, আসলে ওখানে কোনো ব্যবস্থাপনাই (Management) ছিল না!

পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রিপ্রাপ্ত ডাক্তারদের প্রতি কর্তৃপক্ষের মনোভাব আর কর্মচারীদের ব্যবহার- ভবিষ্যতে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করা থেকে নিরুৎসাহিত করার জন্য যথেষ্ট। …এহেন কাণ্ডের জবাবদিহিতা অবশ্য কাম্য।’

একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনুষ্ঠান স্থলে বসে খাওয়ার কোনো জায়গা তারা পাননি। সেইসঙ্গে অনেকেই স্যুভেনির পাননি।

এদিকে, বিএসএমএমইউ’র প্রাতিষ্ঠানিক পেজ থেকে বই দিতে না পারার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেওয়া হয় দুপুর দুইটার দিকে। আয়োজনের প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির পক্ষ থেকে পোস্ট করে দুঃখ প্রকাশ করা হয়।

পোস্টে বলা হয় ‘সাড়ে তিন হাজারেরও অধিক ছবি, নাম ও বিভাগসহ তথ্য সম্বলিত ডাটার কপি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি অফিস থেকে যথাসময়ে সম্পন্ন করা হয়নি। প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির কাছে ডাটার কপি সরবরাহে অত্যন্ত বিলম্ব করা হয়। এ ছাড়া সরবরাহকৃত ডাটায় বিভ্রান্তি থাকায়, নির্ধারিত সময়ে সমাবর্তনে অংশ নেওয়া স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী সকল চিকিৎসক, নার্সদের হাতে সমাবর্তনের বই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির পক্ষ থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী সকল চিকিৎসক, নার্সদের কাছে অনিচ্ছাকৃত এই ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’ তবে ঠিক এক ঘণ্টা পরে পোস্ট সরিয়ে ফেলা হয়।

কর্তৃপক্ষ কী বলছে?

সমাবর্তন আয়োজনে এত বিভ্রাট কেনো? প্রুফ রিড করা ছাড়াই কি বই প্রকাশিত হলো? শিক্ষার্থীদের কি একটু ভালোভাবে আপ্যায়ন করা যেত না? এমন একাধিক প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয় অনুষ্ঠান আয়োজন সংশ্লিষ্ট কমিটির প্রধানদের কাছে। তবে অব্যবস্থাপনার বিষয়টি স্বীকার করলেও দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আর কোনো কিছুই বলতে রাজি হননি কেউ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আয়োজনসংশ্লিষ্ট একটি কমিটির দায়িত্বে থাকা একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানস্থল নির্বাচনই ছিল ভুল। সেটা থেকে শুরু ভুলের। আর এরপরে আসলে কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণে ছিল না। যেখানে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় সেখানে ৭০০ থেকে ৮০০ জনের বেশি মানুষ ঠাঁই দিতে পারার কথা না। এর মাঝে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরাও সেখানে গিয়ে বসে পড়ে। ফলে যাদের জন্য আয়োজন তারা বসতে পারেননি। আপ্যায়নের বিষয়টিও তাই ভালোভাবে করা যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীই এসেছিলেন অভিভাবক বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। এমন অবস্থা প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গে থাকা একজন পরিবারের সদস্যকেও যদি কাউন্টে নেওয়া হয় তবে সেটা হয় ছয় হাজার। এ কারণেই আসলে অব্যবস্থাপনা সূচনা ঘটে। যা আর কোনোভাবে ভালো করা যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশনা কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি এরইমধ্যে বিষয়টি তারা তদন্ত করছে। উপাচার্য বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। বইটার আসলে প্রুফ রিড করা হয়নি। আর তাই এটা নিয়েও ভালোভাবে সামাল দেওয়া যায় নাই। তবে আশা করছি আমরা খুব দ্রুতই এ বিষয়গুলো কাটিয়ে উঠে শিক্ষার্থীদের মুখে আবার হাসি ফিরিয়ে দিতে পারব।’

বিএসএমএমইউ’র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সমাবর্তনের অনুষ্ঠান ছিল অনেক বড় মাত্রার একটি আয়োজন। এখানে কোনো ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে তা নিয়ে আমরা লজ্জিত। এখানে শিক্ষার্থীরা যেহেতু অভিযোগ করেছে তাই অবশ্যই এর গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ তাদের নিয়েই আয়োজন। তবে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ করলে সেটা দুর্ভাগ্যজনক।’

তিনি বলেন, ‘কোষাধ্যক্ষ হিসেবে আমি এটা বলতে পারি যে, আমাদের দিক থেকে চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। যতগুলো কমিটি করা হয়েছে সবাই তাদের বাজেট যেভাবে দিয়েছে, সেভাবে টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। যদি কোনো বিভাগে দুর্বলতার অভিযোগ করা হয়ে থাকে তবে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কমিটিকে সে বিষয়ে জবাব দিতে হবে।’

অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক অভিযোগ বিষয়ে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকাশনার বিষয়টি আমাদের কাছে দেখানো হয়নি বিলি করার আগে। তবে সেটি বিতরণের সময়েও কিছু নিরাপত্তাজনিত বিষয় সামনে চলে আসে। আর আর্থিক অভিযোগ বিষয়ে আসলে যারা জানতে চাইছে তারা আমাদের কাছে এসে যখনই হিসাব চাইবে আমরা তা দিতে পারব। এই বড় আয়োজনে শুধু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বাবদ আমরা ৮০ লাখ টাকা খরচ করতে পারলে অন্যখাতে কেন অনিয়ম হবে?’ তারপরেও অভিযোগ পাওয়া মাত্র বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য।

উল্লেখ্য, ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত বিএসএমএমইউ’র চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্নাতক ও স্নাতোকত্তর চিকিৎসকের পাশাপাশি সেবিকারাও অংশ নেন। এর মধ্যে রয়েছে মেডিসিন অনুষদে প্রায় ৮০০ জন, সার্জারি অনুষদে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন, শিশু অনুষদে প্রায় ৩০০ জন, বেসিক সাইন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল অনুষদে পাঁচ শতাধিক, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদে প্রায় ৩০০ জন, ডেন্টাল অনুষদে শতাধিক স্নাতকোত্তর চিকিৎসক এবং নার্সিং অনুষদে শতাধিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সেবিকা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন- স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ভারতের বিহারে ইউনিভার্সিটি সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাজবর্ধন আজাদ সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।

সমাবর্তনে ৩৫ জন মেধাবী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চিকিৎসক, সেবিকাকে চ্যান্সেলর কর্তৃক স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হয়- আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ স্কুল সাইকোলজিস্ট, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক অ্যাডভাইজরি প্যানেলের বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশের অটিজমবিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম এবং প্রখ্যাত অর্থোপেডিক সার্জন, সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ডা. কাজী শহীদুল আলমকে।

সারাবাংলা/এসবি/একে

বিএসএমএমইউ সমাবর্তন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর