চট্টগ্রামে পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পের কাজে সমন্বয়ের তাগিদ
১৪ মার্চ ২০২৩ ২৩:৩৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে পয়ঃশোধনাগার (স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) প্রকল্পের কাজের রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম ওয়াসা জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে নগরীর ছয়টি জোনে ছয়টি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করা হবে এবং পুরো নগরীতে দুটি ফিকেল স্ন্যাজ শোধনাগার করা হবে।
ছয়টি জোনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে একটি জোনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এই জোনে রয়েছে- কোতোয়ালি, বাটালিহিল, মাঝিরঘাট, মাদারবাড়ী, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, আমবাগান, নয়াবাজার, চৌমুহনী, উত্তর হালিশহর, হালিশহর আনন্দবাজার এলাকা। এখানে রয়েছে ২১টি ওয়ার্ড।
সোমবার (১৪ মার্চ) রাতে হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউ চট্টগ্রামের মোহনা হলে আয়োজিত এ সংক্রান্ত চট্টগ্রাম ওয়াসার মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য উঠে আসে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্রকল্প বাস্তবায়নে জনদুর্ভোগ এড়াতে সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের তাগিদ দেন।
মেয়র বলেন, ‘সব জায়গায় যদি একসঙ্গে কাজ শুরু হয়, মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়বে। তাই একটি ওয়ার্ড শেষ করে পরের ওয়ার্ডের কাজ শুরুর মাধ্যমে প্রকল্পটি শেষ করতে হবে। নগরের কাজে যারা যারা সম্পৃক্ত, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সিস্টেমের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। রাস্তা অনেক জায়গায় গভীর ৪ মিটার থেকে ৫ মিটার। রাস্তার ৩ ফুট কাটা হলে বাকি অংশ ধসে পড়বে। আমাদের রাস্তার ধারণ ক্ষমতা ১২ টন। যে লরিগুলো বন্দর থেকে বের হয় সেগুলোর ওজন থাকে ৪০-৫০ টন। তাই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদের এই কাজ নিয়ে অবগত করতে হবে।’
সুপেয় পানি নিশ্চিত প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘আগে জলাধার ছিল। ফলে জলাবদ্ধতা হলে রেহাই পেতাম। ওই পানি ট্রিটমেন্ট করে খাওয়ার পানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারতাম। এখন আগের সেই অবস্থা আর নেই। অনেকে ছাদে সুইমিংপুল করে। এখন বৃষ্টির পানিকে কাজে লাগাতে হবে। ছাদে সুইমিং পুল না করে জলাধার করার প্রস্তাব দিচ্ছি।’
‘শহরে কোনো পুকুর নেই। সব বিল্ডিং। মানুষ পানির কষ্টে আছে। আমাদের পরিকল্পনা করা উচিত। পানির অভাবে ক্ষোভ। কলসি নিয়ে ওয়াসার সামনে বিক্ষোভ। পানির লেয়ার অনেক নিচে গিয়েছে। ডিপ টিউবিউলেও পানি পাওয়া যায় না। গেলেও আয়রন। খাওয়া যায় না। তাই সুপেয় পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিয়ে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন খুব জরুরি।’
সুয়ারেজ প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে মেয়র রেজাউল বলেন, ‘এ প্রকল্পের কোনো বিকল্প নেই। চটগ্রামে দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে। ৭০ লাখ মানুষ রয়েছে। এছাড়াও গ্রামের মানুষও নগরমুখী। চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত না হলে বসবাসের অযোগ্য হবে।’
সভায় দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ‘ঢাকা থেকে ১০০ বছর পিছিয়ে আছে চট্টগ্রাম। ১৯২৩ সালে ঢাকায় সুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। ১৯৬৩ সালে ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হলেও সুয়ারেজ করা হয়নি। কিছু সুয়ারেজ ও পানির লাইন এক হয়েছে। হেলদি সিটির জন্য সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকা উচিত। কিন্তু পয়ঃনিষ্কাশনে চট্টগ্রাম পিছিয়ে আছে।’
চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এটিএম ফয়জুল্লাহ, সুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দক্ষিণ কোরিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাইওং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি অন শন জু, চায়না প্রতিষ্ঠান জেভি অব ঝংনাম সিনো হাইড্রোর প্রতিনিধি এন্ড্রু এবং জেভি অব ইসি ইসির প্রতিনিধি স্প্রিং সাংজাই।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম