Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৫ মার্চ ১৯৭১: ঢাকায় ইয়াহিয়া খান

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ মার্চ ২০২৩ ১০:২২

ঢাকা: ১৫ মার্চ ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান নবনিযুক্ত সামরিক গভর্নর লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান। পরে ‘১৮ পাঞ্জাব ইনফ্যান্ট ব্যাটালিয়ন’- এর প্রহরায় প্রেসিডেন্ট হাউসে (পুরোনো গণভবন) গিয়ে ওঠেন ইয়াহিয়া। তখন ঢাকা ছিল মিছিলের নগরী। সরকারি-বেসরকারি ভবনে এবং যানবাহনে উড়ছিল কালো পতাকা। লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত অহিংস ও অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

নেত্রকোনায় সুইপার ও ঝাড়ুদাররা ঝাড়ু, দা, লাঠি ও কোদাল নিয়ে মিছিল করে। বগুড়া, খুলনা, রংপুর, লাকসাম, কুমিল্লা ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতার পক্ষে মিছিল-সমাবেশ হয়।

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের বিশাল সমাবেশ। অধ্যাপক আবুল ফজলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মমতাজউদ্দিন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান, সাংবাদিক নূর ইসলাম প্রমুখ।

খুলনার হাদীস পার্কে এক সমাবেশে জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান বলেন, ‘বাংলার প্রতিটি মানুষ আজ বঙ্গবন্ধুর পেছনে একতাবদ্ধ। রেডিও, টিভি, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী, সেক্রেটারিয়েট প্রভৃতি আজ আওয়ামী লীগপ্রধানের আজ্ঞাবাহী।”

করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুট্টো বলেন, ‘শুধু সংখ্যাধিক্যের জোরে পাকিস্তানে শাসন পরিচালনা করা যাবে না। পিপলস পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনো সরকার গঠন সম্ভব নয়। পিপলস পার্টির পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাধিক্য রয়েছে। তাই কেন্দ্রের ক্ষমতা পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু পার্টি দুটোর কাছে এবং পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষমতা আওয়ামী লীগের কাছে হস্তান্তর করা সমীচীন হবে।

নতুন সামরিক ফরমান জারির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে সভা করে। সেখানে বাংলাদেশ রক্ষায় সব নাগরিককে অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়। সভা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি কাকরাইল, বেইলি রোড হয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে। ইয়াহিয়া খান তখন ওই ভবনেই অবস্থান করছিলেন। ভবনের সামনে সামরিক বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিতি ছিল। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে ঢাকার চেকপোস্টগুলো তুলে নেয়। এদিন কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে তোপখানা রোডে নারীদের এক সভা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতার ও টিভিশিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান করেন। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আয়োজিত সভা থেকে অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে একাত্মতা প্রকাশ করেন চিকিৎসকেরা এবং মুক্তি আন্দোলনের লক্ষ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামে প্রস্তুত হওয়ার জন্য জনতার প্রতি আহ্বান জানান।

পশ্চিম পাকিস্তানে জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তান, ন্যাপ (ওয়ালী), মুসলীম লীগ (কাউন্সিল) এবং পিডিপির নেতারা এক বিবৃতিতে ভুট্টোর ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্যে তাকেই দায়ী করেন।

রাতে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ এক বিবৃতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের এই আহ্বানে জনগণের নিরঙ্কুশ সাড়া পাওয়া গেছে।’

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভারত থেকে ফিরলেন ৯ বাংলাদেশি তরুণী
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৩

আজ জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৪

সবজি-মুরগির বাজার চড়া, অধরা ইলিশ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০

সম্পর্কিত খবর