মা আমাদের মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছেন: শেখ পরশ
১৫ মার্চ ২০২৩ ১৮:৫৬
ঢাকা: যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ তার মা শহিদ আরজু মণি সেরনিয়াবাতের ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বলেছেন, মা আমাদের মানুষকে ভালোবাসা আর মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছেন। রাতে যে গান শুনিয়ে আমাদের ঘুম পাড়াতেন সেটাও ছিল মানবতার গান।
বুধবার (১৫ মার্চ) সকাল ৯টায় বননী কবরস্থানে আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট শহিদ শেখ ফজলুল হক মণি’র সহধর্মিণী শহিদ আরজু মণিসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত শহিদের কবরে যুবলীগ শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এর পর দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘আমার মা জানতেন, আমার বাবার প্রতি আঘাত আসতে পারে এবং একাধিক বার বাবাকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে। আমার মা সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আমার বাবার জীবনে সেই দুঃস্বপ্ন যেন বাস্তবে পরিণত না হয় সে জন্য তিনি সর্বদা সতর্ক থাকার চেষ্টা করতেন; ভয়ে ভয়ে চলতেন। এ জন্যই তিনি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি অন্তঃসত্তা অবস্থায় এম এ পরীক্ষা দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার মা বরিশালের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। আমার নানা ছিলেন আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। বরিশাল বিভাগসহ সারাদেশের মানুষ তাকে একজন অত্যন্ত সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যারা গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তারা তাদের বাকি জীবনে অত্যন্ত কষ্ট নিয়ে কাটিয়েছেন। ছাত্র বয়সে রাজনীতি করেছেন, বরিশাল মহিলা কলেজের জি এস ছিলেন। আমার শানু মামী ভিপি ছিলেন। কিন্তু আমার মায়ের কোনো লোভ-লালসা ছিল না। বিয়ের পরে সংসারে মনোযোগ দিয়েছেন।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘তিনি আমাদের মানুষকে ভালোবাসা আর মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছেন। রাতে যে গান শুনিয়ে আমাদের ঘুম পাড়াতেন সেটাও ছিল মানবতার গান। একদিন বড় হলে তোমরা মানুষের মতো মানুষ হবে, দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াবে, মায়ের সাথে আমাদের স্মৃতি এতটুকুই। আমরা চেষ্টা করছি মানুষের মতো মানুষ হওয়ার, দুঃখী মানুষের পাশে থাকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বয়সী অনেকেরই মা আছে, তারা মা বলে ডাকে, মায়ে সেবা করার সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা তো মায়ের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি না। ইচ্ছে করে মায়ের সেবা করতে, মা কে ভালবাসতে, মায়ের কাছে যেতে। আমরা সে সুযোগ পাই নাই। আজ মানবাধিকারের কথা বলে অনেকে। আসলে ব্যাপারটা অবান্তর ও হাস্যকর মনে হয়। যারা মানবাধিকারের কথা বলেন তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, পঁচাত্তরে আমাদের কোনো অধিকার ছিল না।’
পরশ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন বলে ২১ বছর পর গুলি, বারুদ, বোমা হত্যা চেষ্টা, আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা, তাদের ওপর অত্যাচার-জুলুমের পরেও ক্ষমতায় এসে বিচারের পথ সুগম করেন তিনি। তার সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা ১৫ আগস্টের বিচার পেয়েছি। ন্যায় পরায়ণতার প্রতীক জননেত্রী শেখ হাসিনা, তার সাহসী নেতৃত্বের করণেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমাদের পরিবার সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্যই সংগ্রাম করেছে।’
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শহিদ আরজু মণি সেরনিয়াবাতের জন্য দোয়া চাই, দোয়া চাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সে দিনের অন্যান্য শহিদের জন্য। সেইসঙ্গে পঁচাত্তরের খুনিদের প্রতি তীব্র ঘৃণা জানাই।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান পবন, নবী নেওয়াজ, এনামুল হক খান, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মুহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক জহুরুল ইসলাম মিল্টন প্রমুখ।
সারাবাংলা/পিটিএম