বারের নির্বাচন নিয়ে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগ চান ফখরুল
১৭ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৭
ঢাকা: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগ চান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ আজ এমন একটি দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে যে, আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করতে হচ্ছে— এটা বড় লজ্জার বিষয়।’
‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের প্রত্যাশা- সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতা রক্ষার জন্য প্রধান বিচারপতি এগিয়ে আসবেন এবং প্রতিষ্ঠানটির পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে কোনো নির্বাচন না হলেও নির্বাচনের নাটক সাজিয়ে একতরফাভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। আমি অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের তথাকথিত নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে, আবার নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছি।’
ফের আওয়ামী লীগের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট ডাকাতিতে সিদ্ধহস্ত আওয়ামী লীগের মুখোশ আরেকবার উন্মোচিত হলো। দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থার কফিনের শেষ পেরেকটি ঠুকানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগে যারা দায়িত্বরত ও কর্মরত রয়েছেন তাদের পবিত্র দায়িত্ব এই রাষ্ট্রকে রক্ষা করা। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর যে পবিত্রতা সেই পবিত্রতা রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। আমরা কল্পনাও করতে পারি যে, সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকে আইনজীবীদের আক্রমণ করবে, প্রহার করবে, তাদের আহত করবে। এটা ছোট কথা নয়, এটা হালকা করে দেখার বিষয় নয়।’
তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনায় রাষ্ট্রের চরিত্র কি দাঁড়াচ্ছে? আমরা বলছি যে, এটা একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে- তারই প্রমাণ আমরা দেখতে পারছি। আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাব বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য। তার ন্যূনতম যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, তা রক্ষার জন্য সকলের এগিয়ে আসা দরকার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বার বার বলে এসেছি যে, বাংলাদেশ আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নেই, বাংলাদেশ এখন আর সত্যিকার অর্থে কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নেই। বাংলাদেশে যত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো এই আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ধবংস করে দিচ্ছে।’
‘এর সর্বোচ্চ ন্যাক্কারজনক উদারহরণ আমরা সর্বোচ্চ আদালতে দেখলাম। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বলা হয়, অফিসিয়ার্স অব দ্য কোর্ট। সেই আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মধ্যযুগীয় কায়দায় পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে তা ধ্বংস করে দিল। আওয়ামী লীগ দেশের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতীয় নির্বাচনেও কি কারচুপি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন?— এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হয়ে যেতে পারে না, হবে। সে কারণেই আমরা বলছি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। যখনই তারা ক্ষমতায় থাকবে, তখনই তারা নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং তাদের প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করবে। সুতরাং কোনো মতেই এই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম