Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আরও ৩৯ হাজার গৃহহীন ঘর পাচ্ছেন, চোখেমুখে ইদের আনন্দ

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ মার্চ ২০২৩ ১৮:২৭

গোয়াইনঘাট (সিলেট) থেকে: আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প আওয়াতায় আগামীকাল গৃহহীনদের মাঝে ৩৯ হাজার ৩৬৫ টি ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের তিন জেলার তিনটি আশ্রয়ণ প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে। এগুলো হলো গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের নওয়াঁগাও আশ্রয়ণ প্রকল্প ও বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বানারীপাড়া পৌরসভায় উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্প।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের নওয়াঁগাও আশ্রয়ণ প্রকল্পে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এই প্রকল্পে ঘর পাওয়া এক সময়ের গৃহহীনরা এখন ইদের আনন্দে ভাসছেন। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পটিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন। ৮২৬ নং ঘর পেয়েছেন লোকমান হোসেন। অন্য দিনমজুরদের সঙ্গে তিনিও সড়ক মেরামতের কাজ করছেন। ঘর পাওয়া গৃহহীনরা ঘর গুছানোতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন। কথা হলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তারা। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও জানিয়েছেন ধন্যবাদ।

এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন বিধবা আয়শা বেগম। তার মেয়ে রেহেনা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভালো লাগছে। আগের ঘরের চেয়ে এই ঘর ভালো। সুযোগ সুবিধা ভালো হয়েছে।’

একই প্রকল্পে রেহেনা বেগমও ঘর পেয়েছেন। তিন সন্তানের এই জননী জানান, তার স্বামী তাজমুল মিয়া চৌকিদার। রেহেনা বলেন, ‘ঘর পাওয়ার পর ভালো লাগছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর দিয়েছেন। ইদের মতো আনন্দ লাগছে।’

এদিকে, গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘গোয়াইনঘাট উপজেলায় মোট এগারশ একটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে ৮৯৫টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আর ১২৪টি ঘর বিভিন্ন পর্যায়ে নির্মাণাধীন। খুব দ্রুত সময়ে এগুলো হস্তান্তর হবে। আগামী কাল সরাসরি ভার্চুয়ালে যুক্ত হয়ে নন্দিরগাও ইউনিয়নের নওয়াগাঁও গ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন এবং গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১০০টি ঘর উদ্বোধন করবেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘১০০ টি ঘর হলেও আমরা দুই একর জমি বন্দোবস্ত দিচ্ছি। তবে পুরো প্রকল্পের এলাকা হচ্ছে ৫ একর ৩৬ শতাংশ জায়গায়। এই প্রকল্পের মানুষ একই সঙ্গে পুকুর ও খাল পাচ্ছে। খালি জায়গায় তাদের জন্য কৃষি প্লট করেছি। এক হাজার ফলজ, বনজ ও ওষুধ গাছ লাগানো হয়েছে। একই সঙ্গে মৌসুমী সবজী চাষ করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করেছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের খালের পানির বদৌলতে পতিত জমিও চাষাবাদের আওতায় এসেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পে পুরো জায়গা এতদিন ভূমিদস্যুদের হাতে ছিল। বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমার মোকাবিলা করে আমরা এই প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি। এটি একটি বন্যা কবলিত এলাকা। সেই বিষয়টিও মাথায় রেখে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। টেকসই ঘর নির্মাণ করার জন্য কোনো অংশেই আমরা ছাড় দেইনি। ঘরগুলো যাতে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জের এর মুখে না পড়ে সেজন্য আমরা অতিরিক্ত কাজ করে দিয়েছি। সাম্প্রতিক বন্যায় যে সব মানুষ তাদের সর্বস্ব হারিয়েছেন, নিঃস্ব হয়েছেন তাদেরই আমরা এখানে ঘর বরাদ্দ দিচ্ছি।’

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ও মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ২ শতক জমিসহ সেমিপাকা একক ঘর পাচ্ছেন গৃহহীন মানুষেরা। প্রকল্পের আওয়াতায় প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯ টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে একই বছরের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০ টি, তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে গত বছরের ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪ টি, দ্বিতীয় ধাপে ২১ জুলাই ২৬ হাজার ২২৯ টি গৃহ হস্তান্তর করেন।

তথ্যমতে, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে হস্তান্তরিত গৃহের সংখ্যা ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭ টি। চতুর্থ পর্যায়ে অবশিষ্ট নির্মাণাধীন গৃহের সংখ্যা ২২ হাজার ৬ টি। চতুর্থ পর্যায় পর্যন্ত বরাদ্দকৃত গৃহের সংখ্যা ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৩১ টি। চতুর্থ পর্যায়ে চরাঞ্চলে বরাদ্দকৃত বিশেষ ডিজাইনের গৃহের সংখ্যা ১ হাজার ৩৭৩ টি ও পার্বত্য অঞ্চলে বিশেষ ডিজাইনের মাচাং ঘর ৬৩৪টি।

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

আওয়ামী লীগ আশ্রয়ণ প্রকল্প টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর