গরিবের তেলাপিয়া-পাঙ্গাসের ডাবল সেঞ্চুরি
২৪ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৬
ঢাকা: গরিরের মাছ বলে খ্যাত তেলাপিয়া এবং পাঙ্গাস মাছও এখন সাধারণ মানুষের নাগারের বাইরে চলে গেছে। কিছুদিন আগেও এই মাছ দুইটি ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। বর্তমানে সেটি ২১০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একই অবস্থা রুই, কাতল, বৃগেট, শিং, কৈ, টেংরা, চিংড়ির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে। প্রতিটি মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে বাজারে বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম। বেড়েছে ডিমের দামও।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিল, আরামবাগ ও খিলগাও এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাচজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের বিপরীতে দিকে কলোনী কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এক থেকে দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা। একই অবস্থা তেলাপিয়া মাছের ক্ষেত্রেও। প্রতি কেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা।
অথচ ১৫ দিন আগে এসব মাছ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হতো। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের মৃগেট মাছ ২৮০ টাকা কেজি, সিলভার কার্ড ২৩০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, গলদা চিংড়ি মাঝারি সাইজ প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাস আগে প্রতি কেজি গলদা চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি। এছাড়াও এদিন বাজারে বাগদা ও হরিণ চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি।
দুই সপ্তাহ আগে এই চিংড়ি বিক্রি হতো ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। এছাড়াও বাজারে প্রতি কেজি টেংরা মাছ ৭০০ টাকা, টেংরা (গুলাইয়া) ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে এক থেকে দেড় কেজি সাইজের রুই ও কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি। শিং মাছ দেশি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। চাষের শিং মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সরকারি চাকরিজীবী মোশারফ হোসেন বলেন, গত ৬/৭ বছর ধরে সরকার কোন নতুন কোন পে স্কেল দিচ্ছে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বেতন বাড়লেও জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। এই বাড়তি খরচ কিভাবে যোগান দিবো ? কিভাবে চলবো? খরচ কাটছাঁট করতে করতে এখন আর পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে পরিবারকে গ্রামে পাঠাতে হবে। সেটা করাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আমাদের না খেয়ে থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই।
এদিকে মাছ মাংসের পাশাপাশি বাজারে বেড়েছে ডিম, আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দামও। আজ রাজধানীর আরামবাগ বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়।
এছাড়াও এদিন মতিঝিলের বিভিন্ন অলিগলিতে এবং কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। এছাড়াও প্রতি ইন্ডিয়ান মোটা আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা কেজিতে। আর প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়।
দোকানদার লিটন মিয়া জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দাম গত এক সপ্তাহের তুলনায় কেজি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
তিনি বলেন, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি করেছি। এখন বেশি দামে কেনার কারণে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়াও আদা রসুনের দামও কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে এক সপ্তাহের ব্যবধানে।
সারাবাংলা/জিএস/এনইউ