আলোয় স্মরণ সেই বিভীষিকার কালরাত
২৫ মার্চ ২০২৩ ২৩:৪০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউটের’ মধ্যে আলো জ্বেলে একাত্তরের ভয়াল কালরাত স্মরণ করেছে চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের সেই বিভীষিকাময় কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সশস্ত্র পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। নির্বিচারে চালিয়েছিল হত্যাযজ্ঞ।
শনিবার (২৫ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে মোমবাতি প্রজ্বলনে অংশ নেন প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আমিনুর রহমান, পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। এ সময় কালরাত স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর ইউনিটের পক্ষ থেকেও কর্মসূচিতে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
এদিকে, জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের আয়োজনে ‘২৫মার্চ কালরাত্রি স্মরণ’ অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় চেরাগি চত্বরে (ব্রাক ব্যাংকের সামনে) অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রদীপ প্রজ্বালন, কথামালা ও আবৃত্তি পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন স্বর্ণয় দত্ত, টিয়া পিহু হিলারী, নিপা দাশ, ফাল্গুনী আচার্য্য, প্রিয়া সেনগুপ্তা, মৌমিতা বড়ুয়া, অনিমেষ পালিত, ইলা বড়ুয়া, মৃত্তিকা চক্রবর্তী, অর্চি দত্ত, মমি ভট্টাচার্য্য, রিয়ামনি দাশ, সত্যজিৎ চক্রবর্তী, পাতা দে বৃষ্টি, পৃথুলা চৌধুরী, জয়শ্রী মজুমদার জয়া এবং তুর্ণা দাম। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি উৎপলকান্তি বড়ুয়া।
আবৃত্তিশিল্পী ইতু সাহার গ্রন্থনা এবং যশস্বী বণিক ও ইতু সাহার নির্দেশনায় শিশু বিভাগের পরিবেশনায় বৃন্দ আবৃত্তি ‘বঙ্গবন্ধু অতঃপর বাংলাদেশ’ পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী তারমিন পুষ্পা।
বোধনের সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক শিল্পী সুজিত রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মাকসুদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব চন্দন দাশ।
গণহত্যা দিবসে শহিদদের স্মরণে ও মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। শিশুদের শ্রেণিভিত্তিক তিনটি বিভাগে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও কবিতা আবৃত্তি হয়। একাডেমি মিলনায়তনে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসব প্রতিযোগিতায় মোট ২৭০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক ২৫ মার্চ। এই দিনটিকে গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় গণহত্যা দিবস স্মরণে শিল্পকলা একাডেমিতে আজ এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম