জিয়া কেন ফাউন্ডিং ফাদার হবেন না— প্রশ্ন আমীর খসরুর
২৬ মার্চ ২০২৩ ২০:২৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্বাধীনতা এক ব্যক্তি, এক পরিবার ও এক দল তাদের নিজেদের মূলধন করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে কেন দেশের ‘ফাউন্ডিং ফাদার’ বলা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন।
রোববার (২৬ মার্চ) বিকেলে নগরীর পাঁচলাইশে একটি কমিউনিটি সেন্টারে স্বাধীনতা দিবসের এক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেওয়া হয়।
স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট এদেশের মানুষ ভুলে যাচ্ছে উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে এদেশের আপামর জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটটা আমরা ভুলে যাচ্ছি। এ প্রেক্ষাপটের মধ্যে মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, কর্ণেল ওসমানি, জিয়াউর রহমান আছেন। আরো অনেকের অবদান আছে। আজ দেশের স্বাধীনতা এক ব্যক্তি, এক পরিবার, গোষ্ঠী ও একটি দলের হাতে, যেন তারা মূলধন পেয়েছে। এটাকে তারা নিজেদের মূলধন করে ফেলেছে।’
‘কোনো জায়গায় কোনো নেতৃত্বে এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন জাতির পিতা বা ফাউন্ডার ফাদার অথবা কোনো একজনের ব্যক্তিত্বে, একজনের কারণে স্বাধীনতা আসেনি। এটা যদি করা হয়ে থাকে অর্থাৎ একজনকে সামনে রেখে সমস্ত স্বাধীনতার যুদ্ধ তাহলে এটা কিন্তু মনোপলি হয়। যখন স্বাধীনতা মনোপলি হবে তখন এটা ক্ষতিকর জিনিস। বাজার যেরকম একচেটিয়া হলে ক্ষতিকর হয়, খদ্দেররা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ,মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারেও মনোপলি করতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমি যা বলেছি এসব তাজউদ্দীনের মেয়ের বইতে লেখা আছে। ফাদার অফ দ্য নেশন ঠিক আছে , আমেরিকায় তো ফাদার অফ নেশন আছে, ফাউন্ডিং ফাদারও আছে। যে লোকগুলোর কথা আমি বলেছি এর বাইরেও অনেকেই আছেন। যাদের নাম ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে আমাদেরকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তারা সবাই ফাউন্ডিং ফাদার্স। কারও ভূমিকা কম নয়। একেকজনের ভূমিকা একেক দিকে। জিয়াউর রহমানের ভূমিকা হচ্ছে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না?’
‘জেনারেল ওসমানি সাহেব মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন । উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না? তাজউদ্দীন সাহেব স্বাধীনতাকালীন মন্ত্রীসভার নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না। মুক্তিযুদ্ধ ইনক্লুসিভ বিষয়। এটি কোনো একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হতে পারে না। এটি সমস্ত জাতির গর্ব। এই মূলধন সমস্ত জাতির মূলধন। এ গর্ব সমস্ত জাতির গর্ব। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এসব বিষয় দেখা হবে। যারা প্রাণ দিয়েছেন প্রত্যেকের নাম বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।’
চট্টগ্রাম সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে এবং সদস্য ডা. শামীম আল মামুনের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
সারাবাংলা/আইসি/একে