Wednesday 27 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সাদা চামড়ার পেছনে দৌড়ানো দেখে লজ্জা হয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ মার্চ ২০২৩ ২২:৫৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, ‘আজকের বাংলাদেশ কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের ধমকের কাছে মাথানত করে না। আজকের বাংলাদেশের বিদেশে কোনো প্রভু নেই, বন্ধু আছে। বন্ধুরা পরামর্শ দিতে পারে, নির্দেশ করতে পারে না। বন্ধুরা আমাদের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিতে পারে, সহযোগিতা করতে পারে, কিন্তু নির্দেশ করতে পারে না। তাদের নির্দেশ শোনার মতো নেতৃত্ব আজকের বাংলাদেশে নেই।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৬ মার্চ) বিকেলে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আমাদের কিছু মজ্জাগত দোষ আছে। আমরা কখনো ভালো জিনিস দেখি না। সবসময় ভালো জিনিসের মাঝে, একখণ্ড সাদা কাপড়ের মাঝে কোথায় একটি কালো দাগ আছে, একটি বিন্দু আছে, নেতিবাচক বিষয় আছে সেটা আমাদের বারবার চোখে পড়ে। আমাদের বিশেষ একশ্রেণির বন্ধু আছেন, যারা বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন এবং অগ্রগতিকে ভালো চোখে দেখেন না।’

গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মিডিয়া যাদের কথা বিভিন্নভাবে ফলাও করে প্রচার করার চেষ্টা করে, বিদেশি একজন সাদা চামড়ার মধ্যপদস্থ ব্যক্তিকেও যদি কেউ দেখে, তার পেছনে পাগলের মতো মাইক নিয়ে ছুটতে থাকে। ওই ব্যক্তির পদমর্যাদা ওই রাষ্ট্রে কী, সে কি ডেপুটি সেক্রেটারি নাকি জয়েন সেক্রেটারি, কোন লেভেলের অফিসার, সেটা বিবেচনা না করে আমার দেশে লাখো শহিদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে কিছু মানুষ সাদা চামড়ার মানুষের পেছনে মাইক নিয়ে দৌড়ান, আমার লজ্জা হয়।’

তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন, আজকের বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, ভিক্ষুকের বাংলাদেশ নয়, ভিক্ষা করে জীবনযাপন করে না। আজকের বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশের বিশ্বের ২৯ তম অর্থনীতির দেশ।’

দেশের প্রথম সারির পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদকে উদ্ধৃত করে স্বপন বলেন, ‘মঞ্চে বসে একটা খবরে আমার চোখ আটকে গেল। খবরটাকে কোনোভাবেই অস্বীকার করবো না, খবরটাকে ফেব্রিকেটেড (অতিরঞ্জিত) মনে করছি না। খবরে একজন দিনমজুরকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, তার কাছে দেশের স্বাধীনতার কোনো অর্থ নেই। তিনি মাংস কেনার স্বাধীনতা চান, মাছ কেনার স্বাধীনতা চান, চাল কেনার স্বাধীনতা চান। এই খবর প্রকাশ করে আমাদের স্বাধীনতার অর্জনকে একটা প্রশ্নবোধক জায়গায় দাঁড় করানোর একটি গোপন অভিপ্রায় খেয়াল করলাম।’

বিজ্ঞাপন

‘যারা রিপোর্টটি প্রকাশ করেছেন, সেই পত্রিকার বন্ধুদের উদ্দেশে বলতে চাই, ১৯৭১ সালে আমাদের জাতীয় অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার, মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ মার্কিন ডলার। দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত ৮৪ ভাগ মানুষ। তখন এদেশের মানুষের মাছ, মাংস কেনার স্বপ্ন ছিল না। তিন বেলা দূরে থাক, দুইবেলা ভাত খাওয়ারও স্বপ্ন দেখতে পারেনি, এটা রূঢ় বাস্তবতা।’

জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন আরও বলেন, ‘আজ এদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২৮৫০ ডলার। জাতীয় অর্থনীতির আকার অনেকগুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ২৯ তম অর্থনীতির দেশ। এখন আমাদের দেশে ভাতের সমস্যা নেই। অস্বীকার করবো না, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্ব সমস্যার মধ্যে পড়েছে। সাময়িকভাবে আমাদের দেশের মানুষেরও কষ্ট হচ্ছে। সেই কষ্ট আমরা অস্বীকার করি না, হৃদয় দিয়ে ধারণ করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিয়ে রাতদিন পরিশ্রম করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে এ কষ্ট লাঘব হবে ইনশল্লাহ, কারণ জননেত্রী যা বলেন তা করেন।’

বিশ্বমিডিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘২০৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর ২০ তম অর্থনীতির দেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। মাথাপিছু আয় হবে ৪ হাজার ১২৬ মার্কিন ডলার। সুতরাং ভয় পাওয়ার, আতঙ্কিত হবার, শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ এখন শেখ হাসিনা। আমাদের কোনো আচরণে, অহমিকায়, কর্মকাণ্ডে, অন্তর্দ্বন্দ্বে আমাদের যদি রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে চলে যেতে হয়, রাষ্ট্র যদি শেখ হাসিনার হাতের বাইরে চলে যায়, তাহলে পৃথিবীর ২০তম অর্থনীতির দেশ, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ কিছুই হবে না। সুতরাং সামনের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যাতে আবারও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারে, সে জন্য কাজ করতে হবে।’

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ ও শফিক আদনান, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী।

সারাবাংলা/আরডি/একে

আওয়ামী লীগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর