‘আলোর পথেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’
২৭ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫১
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কালো মেঘ কেটে আজ আমরা বাংলাদেশের জন্য নতুন সূর্যের আলো নিয়ে এসেছি। যে আলোর পথে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করেছে, সেই পথেই চলবে। এখান থেকে আর পিছে হাঁটবে না। অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ আলোর পথে এগিয়ে যাবে।’
সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনায় সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে অবৈধ শক্তি পঁচাত্তরে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছিল তাদের কোনো প্রেতাত্মা যেন আবার বাংলাদেশের মানুষের এই স্বাধীনতা নসাৎ করতে না পারে, আবার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তার জন্য আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠন এবং দেশের জনগণ অতন্ত্র প্রহরীর মতো সকলকে সজাগ থেকে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে।’
পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্রের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এগুলো নাকি ওদের (বিরোধীদের) চোখে পড়ে না। জানি না মেট্রোরেলে চড়ে কি না? নিশ্চয়েই চড়ে! তার সুফল নিশ্চয়ই ভোগ করে। কিন্তু তারপরও বলবে, এটা কেন করা হল? আমার মনে আছে টেলিভিশনে একজনে খুব আলোচনা করছে, ৩৫ হাজার কোটি টাকা দিয়ে মেট্রোরেল করে কি হবে? তিন হাজার কোটি টাকা হলেই তো যানজটমুক্ত করা যায়? তিন হাজার কোটি টাকার বাস কিনে রাস্তায় ছেঁড়ে দিলেই নাকি যানজট মুক্ত হবে? এই রাস্তায় আরও বাস দিলে আরও যানজট মুক্ত হবে, না আরও যানজট সৃষ্টি হবে?’
‘যেটাই ভালো করবেন কিছু লোকের কিছুই ভালো লাগে না- তার বিরুদ্ধে একটা কথা বলবেই। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির কথা বলেছিল। দুর্নীতি করতে তো আমরা এখানে আসি নাই। সেটা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সারাবিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশ পারে। ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই, ভবিষ্যতেও পারবে না’, বলে দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
টানা মেয়াদে সরকারের নানামুখী উন্নয়ন অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় ছিল অনেক বছর। তিন তিনবার নাকি খালেদা জিয়া ক্ষমতায়? যদিও ভোট চুরির দায়ে জনগণ দুই বার বিতাড়িত করেছে। তারপরও একটা কাজও দেখাতে পারবে? বিএনপির একটা মাইক বান্ধা থাকে? সেই মাইক সারাদিন বলে যায়। জানি না, রোজার সময়ও রোজা রেখে এতো মিথ্যা কথা কেন বলে? সেটাও আমি জানি না? কিন্তু আওয়ামী লীগ যেটা বলে সেটা করে।’
স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯ বছর ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা কালো অধ্যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই কালো মেঘ কেটে আজকে আমরা বাংলাদেশের জন্য নতুন সূর্যের আলো নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
দেশবাসীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের যে আস্থা-বিশ্বাস আজকে সৃষ্টি হয়েছে। সেই আস্থা বিশ্বাস নিয়েই যেন এদেশের মানুষ এগিয়ে চলে। আমি জানি অনেক আন্তর্জাতিক শক্তি আছে। এই ধারাবাহিক গণতন্ত্র তাদের পছন্দ হয় না। আর আমাদের কিছু আঁতেল আছে তাদের তো পছন্দই না। তারা মনে করে একটা অস্বাভাবিক সরকার থাকলে তাদের অনেক কদর বাড়ে।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘এই বাংলোদেশর স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। যে অবৈধ শক্তি পঁচাত্তরে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছিল তাদের কোনো প্রেতাত্মা যেন আবার বাংলাদেশের মানুষের এই স্বাধীনতা নসাৎ করতে না পারে। তার জন্য আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠন এবং দেশের জনগণকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো সজাগ থেকে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন- প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ জমির, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম, পারভীন জামান কল্পনা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি ও হুমায়ুন কবির।
সারাবাংলা/এনআর/এমও