করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা করার দাবি সিপিডির
২৭ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৫
ঢাকা: ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সোমবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত সিপিডি‘র কার্যালয়ে আয়োজিত “জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ সিপিডি‘র সুপারিশমালা” শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করে সিপিডি।
সংবাদ সম্মেলেন সিপিডি‘র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. তৌফিক ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
ড. ফাহিমিদা খাতুন বলেন, চলমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা করা উচিত। গতবারও বাজেটে আমরা এই দাবি করেছিলাম। কিন্তু তা আমলে নেওয়া হয়নি। এবারও আমরা একই দাবি করছি।
তিনি বলেন, কর আহরণের ব্যক্তিগত আয়ের যে ধাপ সেটা নিম্নআয়ের জনগণের কথা চিন্তা করে সেখানে ৫ শতাংশ এডিশনার যে কর দেওয়া হয়, সেটার সীমা এক লাখ টাকা। আগামী বাজেটে তা ১ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা উচিত।
সিপিডি‘র নির্বাহী পরিচালক বলেন, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। এটার অন্যতম একটা কারণ হলো মূল্য সংযোজন কর এবং আমদানি শুল্ক আহরণ কমে যাওয়া।
তিনি বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ ৭৫ হাজার কোটি টাকা কম হবে। এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে আমরা বলেছিলাম সরকারের রাজস্ব আয় ৬৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি হবে। তবে এটা দেখা যাচ্ছে অর্থবছর শেষে রাজস্ব আয়ের ঘাটতি আরও বাড়ছে।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন, অর্থবছর শেষে মোট রাজস্ব আহরণ ৩ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকার মতো হতে পারে। তবে আইএমএফ একটা প্রক্কলন করেছে সে অনুযাযী ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হবে ৩ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়াবে চার লাখ ৫৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বর্তমান কর কাঠামোতে সর্বোচ্চ আয়ের লোকদের কর আহরণের সে ধাপ রয়েছে গত অর্থবছরে সেটা থেকে ৩০ শতাংশ কমানো হয়েছে। এতে করে উচ্চ আয়ের লোকদের কাছ থেকে কর আহরণের ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে। এই ছাড় কর আহরণে সমতার ক্ষেত্রে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। সে দিক থেকে এটা আগের অবস্থানে অথ্যাৎ উচ্চ আয়ের লোকদের করের হার ৩০ শতাংশে ফিরিয়ে নেয়া উচিত।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগে যে কর ছাড় পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কর ছাড়ের যে বিষয়টি রয়েছে তা তোলে নেয়া উচিত। কারণ যাদের আয় ১৫ লাখ টাকার নীচে তারা এই কর সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে, আমরা এটা চাই না। এছাড়াও বিভিন্ন অ্যালাউন্সে তখা ভাতায় কর সুবিধা সাড়ে ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। এর ফলে উচ্চবিত্তরা ট্যাক্সমুক্ত হয়েছে। এই কর সুবিধা উচ্চ আয়ের লোকদের দেওয়া হয়েছে। এটা তুলে নিতে হবে।
সারাবাংলা/জিএস/এনইউ