Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চ্যাটিং অ্যাপসই কাল হলো স্থপতি ইমতিয়াজের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ মার্চ ২০২৩ ২৩:২৮

ঢাকা: ভুক্তভোগী ইঞ্জিনিয়ার ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূইয়ার সঙ্গে আসামি আলিফের চ্যাটিং অ্যাপসের মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি হয়। ঘটনার দিন ইমতিয়াজ ফোন করলে আলিফ তাকে কলাবাগান ক্রিসেন্ট রোডের আরাফাতের বাসায় যেতে বলে। সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে হত্যা করা হয়।

সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মিন্টো রোডে মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার আসামিরা হলেন- মিল্লাদ হোসেন মুন্না (১৯), আনোয়ার হোসেন (৩৮) ও এহসান ওরফে মেঘ (হিজড়া) (২৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যার পর লাশ বহনের কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা প্রাইভেটকার (টয়োটা কারিনা), যাহার রেজিস্ট্রেশন নং-ঢাকা মেট্রো-গ-১১-১৯৪৪ উদ্ধার করেছে।

গত ৭ মার্চ রাজধানীর কলাবাগান থানাধীন ক্রিসেট রোড এলাকা থেকে ইন্টেরিয়র ডিজাইনার ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূইয়া নিখোঁজ হন। ওই ঘটনায় পরের দিন ৮ মার্চ কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে ভুক্তভোগীর পরিবার।

ওইদিনই মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখান থানার চিত্রকোট ইউনিয়নের কামারকান্দা গ্রামের নবাবগঞ্জ হাইওয়ে রোডের পাশের ঝোপ থেকে ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন সিরাজদিখান থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। যাহার মামলা নং-১২।

ইমতিয়াজ টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা ভিকটিমের বুকে, পিঠে আঘাতসহ প্রচণ্ড মারধর করে। যার কারণে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় জড়িত আরাফাত ওরফে ফয়সাল আহমেদ রাহাত ওরফে হৃদয় এবং আলিফ এখনও পলাতক আছেন। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে।

হত্যার সঙ্গে জড়িত আরাফাত ফয়সাল আহমেদ রাহাত অরফে হৃদয়, মিল্লাত হোসেন মুন্না, আলিফ, এহসান অরফে মেঘ ও আনোয়ার হোসেনকে শনাক্ত করে অভিযান শুরু করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। এদের মধ্যে গতকাল ২৬ মার্চ সিরাজগঞ্জ থেকে মিল্লাত হোসেন মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কলাবাগান এলাকায় থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আনোয়ার হোসেন ও এহসান অরফে মেঘকে ডিবির তেজগাঁও জোনাল টিম তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তাহারা জানায়, আসামিরা সমকামী এবং হিজড়া সদস্য। তারা একটি চ্যাটিং অ্যাপসের মাধ্যমে পূর্ব থেকে সমকামী বিভিন্ন লোকজনকে রুম ডেটের কথা বলে টার্গেট করে বাসায় ডেকে নিয়ে বিভিন্ন কায়দায় ব্ল্যাকমেইল করে টাকা-পয়সাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে আসছে।

ভুক্তভোগী ইমতিয়াজ বাসায় গেলে আলিফের সহযোগী আরাফাত, মেঘ, মুন্না ও আনোয়ার ভিকটিমকে মারধর শুরু করে এবং ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বড় অংকের অর্থ দাবি করে। ভুক্তভোগী টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা ইমতিয়াজের বুকে, পিঠে আঘাতসহ প্রচণ্ড মারধর করে। এতে তার মৃত্যু হয়।

ভুক্তভোগীর মৃত্যু নিশ্চিত হলে আসামিরা পরিকল্পনা করে সু-কৌশলে বাসা থেকে ইমতিয়াজের মৃতদেহ নামিয়ে মেঘের প্রাইভেটকারে উঠিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানা এলাকার কামারকান্দা গ্রামের নবাবগঞ্জ হাইওয়ে রোডের পাশে ঝোঁপে ফেলে দিয়ে তারা আলিফকে বাসাবো, আনোয়ারকে গ্রীনরোড নামিয়ে দিয়ে আরাফাত, মেঘ, মুন্নারা প্রথমে নারায়ণগঞ্জ পরে চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লা হয়ে পরবর্তীতে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়।

পরে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামিদের অবস্থানে অভিযান পরিচালনা করলে আসামিরা পালিয়ে একই পথে বাংলাদেশে ফিরে আসে। এরপর ডিবি পুলিশ অভিযানে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আসামি তিনজনকে গ্রেফতার করে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

জিসান টপ নিউজ স্থপতি ইমতিয়াজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর