ঢাকা: অবৈধভাবে সম্পত্তি দখলদারের পক্ষে রেকর্ড সংশোধনের আদেশ দেওয়া সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় রাজধানীর তেজগাঁও অফিসের সেটেলমেন্ট সাবেক কর্মকর্তা মো. আশরাফ আলী হাওলাদারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার অর্থদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। একই মামলায় অপর আসামি সাবেক সার্ভেয়ার মো. মনিরুল ইসলামকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকেলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত এ রায় ঘোষনা করেন।
রায় ঘোষণার সময় মনিরুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। মো. আশরাফ আলী পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঢাকার উত্তরখানস্থ একটি সম্পত্তির ক্রয় সূত্রে মালিক স্বর্ণা খান। তিনি রাজধানীর কাঁঠাল বাগান এলাকায় থাকেন। এতো দূর থেকে উত্তরখানে গিয়ে সবসময়ে সম্পত্তির খোঁজ-খবর রাখা সম্ভব ছিল না। ফলে স্থানীয় নূরন্নবী ফিরোজ ওই সম্পত্তি ১৯৯১-১৯৯২ সালের একটি এওয়াজবদল দলিল মূলে দখল করে তার ওপর ঘর তুলে দখলি স্বত্ত্ব স্থাপন করেন। বেদখলের বিরুদ্ধে স্বর্ণা খান আপিল করলে তার নামে রেকর্ড হয়। রেকর্ডের বিরুদ্ধে নূরন্নবী ফিরোজ আপিল করলে আপিল অফিসার আশরাফ আলী হাওলাদার ওই সম্পত্তি ২০০২ সালে নূরন্নবী ফিরোজের পক্ষে রেকর্ডের রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণা খান আপিল করলে আব্দুল হাকিম উভয় পক্ষের কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা না করেই আশরাফ আলী হাওলাদারের রায়ের ওপর ভিত্তি করে ২০০৭ সালে রেকর্ড প্রদানের আদেশ দেন।
পরবর্তীতে আবদুল হাকিমের রায়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণা পুনঃরায় আপিল আবেদন করলে সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার স্বপন কুমার বৈদ্য উভয় পক্ষের কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা পূর্বক স্বর্ণা খানের পক্ষে রেকর্ড সংশোধনের সুপারিশ করেন। তার সুপারিশের ভিত্তিতে মহাপরিচালক ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর ইবিটি রুলসের ৪৪ বিধি মোতাবেক স্বর্ণা খানের নামে চূড়ান্তভাবে রেকর্ড সংশোধন করেন। যাতে প্রমানিত হয়, স্বর্ণা খান ক্রয় সূত্রে সম্পত্তির মালিক হওয়া সত্ত্বেও সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. আশরাফ আলী হাওলাদার ও মো. আবদুল হাকিম পরস্পর যোগসাজশে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক স্বর্ণার সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলকারী নূরন্নবী ফিরোজের নামে রেকর্ড সংশোধনের আদেশ দেন।
২০১১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক নূর হোসেন খান তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় এ মামলাটি করেন। মামলায় আশরাফ আলী হাওলাদার, আবদুল হাকিম এবং নূরন্নবী ফিরোজ আসামি ছিলেন।