Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রেসক্রিপশন লেখার সময় ব্যবসায়িক চিন্তা যেন কাজ না করে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৯ মার্চ ২০২৩ ২৩:৫৭

ফাইল ছবি

ঢাকা: রোগীর প্রেসক্রিপশন লেখার সময় চিকিৎসকদের ব্যবসায়িক চিন্তা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বুধবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর হোটেল রেনেসাঁয় আয়োজিত ৫ম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির (এইচপিএনএসপি) খসড়া স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ অনুরোধ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে ওষুধের দাম কম হলেও বেশি দাম কেন রাখা হয়, তা খুঁজে বের করতে হবে। অনেকে অভিযোগ করেন, প্রেসক্রিপশনে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত ওষুধ লেখা হয়। এ বিষয়টি চিকিৎসকদের খেয়াল রাখতে হবে। প্রেসক্রিপশন লেখার সময় ব্যবসায়িক চিন্তা যেন কাজ না করে-সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

দেশের স্বাস্থ্যখাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা জনবল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত জনবল দরকার। এটি আমাদের স্বাস্থ্য খাতের এক নম্বর সমস্যা। যদি সবস্তরে প্রশিক্ষিত জনবল থাকে তাহলে স্বাস্থ্য খাত যথাযথভাবে কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে দেখেছি, হাসপাতাল আছে, যন্ত্রপাতি আছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেবা নাই। কারণ যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না, লোকবলের অনুপস্থিত বা লোকবল নেই। সরকারি হাসপাতালে মানুষ সেবা অনেক কম পায়। হিসাব করলে দেখা যাবে, ৩০ শতাংশের বেশি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি জেলা-উপজেলা হাসপাতালে শয্যা দুই-তিন গুণ বেড়েছে। ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশে তৈরি হচ্ছে। ভ্যাকসিন তৈরি করছি। এগুলো বাইরের মানুষ বুঝতে পারে না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কীভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়, করোনা আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছে। আমাদের চিকিৎসকরা বড় একটা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। করোনায় ১০ হাজার ডাক্তার, ১৫ হাজার নার্স নিয়োগ হয়েছে। তারপরও উন্নতির কোনো শেষ নেই।’

বক্তব্যে মেডিকেল শিক্ষার মান বাড়ানোর তাগিদ দেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে হবে। শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে পারলে মানসম্পন্ন চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান তৈরি হবে। এতে জনগণ ভালো সেবা পাবেন।’

নারীদের ডেলিভারির বিষয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি বাড়াতে হবে। সেগুলো অনেক কম হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে।’

স্বাস্থ্য সেবায় সফলতার কথা জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশের যত বড় বড় অর্জন আর পুরস্কার আছে, বেশির ভাগই স্বাস্থ্য সেবার জন্য এসেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন হিরো হয়েছেন। আগের তুলনায় প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে ভালো সেবা দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে মা ও শিশু মৃত্যুহার কমে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেবার কাজ জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। তখন স্বাস্থ্য সেবার অবস্থা বেহাল ছিল। মাতৃ-শিশু মৃত্যুহার অনেক ছিল। কলেরা হলে গ্রামের পর গ্রাম ছড়িয়ে যেত, অসংখ্য মানুষ মারা যেত। সেখান থেকে দুই-তিন বছরে বঙ্গবন্ধু একটা কাঠামো তৈরি করে গেছেন। পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার অধীনে আমাদের অনেক অর্জন।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘মেডিক্যালে সিট বেড়েছে, নার্সিংয়ে সিট বেড়েছে। আমাদের ১৭ কোটি জনসংখ্যা। যতই শয্যা বাড়াই, কম পড়ে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, মেন্টাল হাসপাতালে শয্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, তারপরও আমরা জায়গা দিতে পারছি না। কারণ স্বাস্থ্যসেবায় মানুষের আস্থা বাড়ছে, তারা হাসপাতালে আসছে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম প্রমুখ।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

জাহিদ মালেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর