Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘দ্রুতই পাস করা হবে স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩০ মার্চ ২০২৩ ০০:০৬

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন নিয়ে অসংখ্যবার আলোচনা হয়েছে। বেশি আলোচনা হয়েছে বলেই আইনটি পিছিয়ে আছে। আগামী সংসদ অধিবেশনে আইনটি উত্থাপন করা হবে। আশা করছি খুব শিগগিরই আইনটি পাস হবে।

বুধবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট আয়োজিত ‘রোগীর সেবা নিশ্চিতে চাই স্বাস্থ্যকর্মীর নিরাপদ কর্মস্থল’— শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা যে সেবা দিচ্ছি লোকে যেন আস্থা রাখতে পারে। এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে রোগীরা খুশি হয়। এমন আচরণ করা যাবে না যাতে অসন্তুষ্ট হয়ে রোগীরা বিদেশে চলে যায়। সরকারিভাবে কিছু আইন কানুন আছে। সেগুলো রোগী, তার স্বজন ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সবাইকে মেনে চলতে হবে। রোগী ও চিকিৎসক অপরাধ যেই করে তার বিচার যেন দ্রুত হয়। বিচারটা বিলম্বে হলে লোকে আস্থা হারিয়ে ফেলে। আইনের বাস্তবায়ন না হলে কিন্তু লোকে আইন হাতে তুলে নেয়।’

তিনি বলেন, ‘মাঝে মধ্যে সরকারি-বেরসকারি হাসপাতালে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। নৃশংসতা ঘটে। অনেক সময় ভুল চিকিৎসা ও বিলম্বে চিকিৎসাও হয়। হাসপাতালে একটা কাউন্সিলিং টিম থাকা দরকার। চিকিৎসক এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে হামলা কমিয়ে আনতে ডাক্তার ও রোগীর কাউন্সিলিং দরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে ইমার্জেন্সি সেবাকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে। যাতে করে খুব সহজেই জরুরি রোগী সামলাতে পারে। হাসপাতালের সিকিউরিটি বাড়ানোর বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি।’

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘চিকিৎসকরা আমাদের সম্পদ। তাদের ওপর হামলা বন্ধে সবার আগে উদ্যোগ নিতে হবে। তবে ভুল চিকিৎসা কিংবা চিকিৎসককের অবহেলাও কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের আরও আন্তরিক হতে হবে।’

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান বলেন, ‘চিকিৎসক নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের বেশি জোর দিতে হবে। চিকিৎসক সমাজ কোনো ক্রিমিনাল নয়। ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ রোগীর ক্ষতি করে না।’

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘রোগী ও চিকিৎসকদের মুখোমুখি দাঁড় করানো যাবে না। রোগীর জন্য চিকিৎসক। রোগীকে সবসময় গুরুত্ব দিতে হবে। ভালো আচরণ করতে হবে। কাউন্সিলিংয়ে আমাদের জোর দিতে হবে।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট কাউন্সিলের (বিসিবি) নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমার মনে হয় চিকিৎসকরা নিরাপত্তার বিষয়ে খুবই উদাসীন। মিস কমিউনিকেশন ও মিস ইনফরমেশন থেকে ভাংচুর ঘটে।’

স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ ই মাহবুব বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালে অবাঞ্চিত ও অদক্ষ চিকিৎসক দিয়ে যেন চিকিৎসা দেওয়া না হয়। সেইসঙ্গে যেন রোগীও তার রোগের ইতিহাস গোপন না করেন। তাহলে রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কমে আসবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সবার আগে চিকিৎসক ও সেবা প্রদানকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা দরকার। স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইনকে আরও বর্ধিত এবং পুনর্বিন্যাস করে সংসদে পাশ বরে দ্রুত বাস্তবায়ন দরকার।’

জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, ‘ইমার্জেন্সি স্বাস্থ্যসেবাকে গুরুত্ব দিতে হবে। রোগীর চিকিৎসা বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য দিতে হবে যাতে কেউ বিভ্রান্ত না হয়।’

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন বলেন, ‘অবৈধ ক্লিনিক হাসপাতাল নিয়ন্ত্রেণ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা দরকার। যাতে অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক থাকে। নয়তো এর বিস্তার ঠেকানো যাবে না।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ডিন সাদেকা হালিম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. এমএ আজিজ, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. আনোয়ার হোসেন খান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর