Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩০ মার্চ ১৯৭১: প্রতিরোধ যুদ্ধে হতবিহ্বল পাকিস্তানি বাহিনী

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ মার্চ ২০২৩ ০৯:১৭

ঢাকা: ৩০ মার্চ ১৯৭১। রাজশাহীর গোপালপুর রেল ক্রসিংয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধে অবতীর্ণ হন মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ জনতা। এ যুদ্ধে ছয়টি ট্রাক ও একটি জিপসহ বিপুল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হয়। চিনিকলের কর্মীরা এই প্রতিরোধযুদ্ধে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন।

নোয়াখালীতে মুক্তিযোদ্ধারা ৪০ জন পাকিস্তানি সেনাকে বন্দি করে এবং প্রচুর গোলাবারুদ ও অস্ত্র দখল করে। এসব গোলাবারুদ ও যুদ্ধ সরঞ্জাম পরে শুভপুর যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ায় মেজর আবু ওসমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। মুক্তিকামী বীর বাঙালি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মুহূর্মুহূ আক্রমণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দামুড়হুদা, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের দিকে পালাতে থাকে। এ যুদ্ধে ২৫৬ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্য নিহত হয়। এদিন বিকেল ৫টার দিকে মতিন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনস দখল করেন।

সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কালুরঘাটে সদ্য প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও সাহায্য দানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক সরকার ও জনগণের প্রতি আবারও আবেদন জানানো হয়। রাতে এ বেতার কেন্দ্রে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। তাতে ট্রান্সমিশন অ্যান্টেনাসহ ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়, তবে কেউ হতাহত হননি।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এদিন চট্টগ্রাম শহরকে বিভিন্ন দিকে থেকে ঘিরে ফেলে এবং বোমাবর্ষণ করে। রংপুরে এদিন পাকিস্তানি সেনারা সেনানিবাস থেকে বের হয়ে শহর-গ্রামে নির্বিচারে গুলি চালায়। জ্বালিয়ে দেয় বাড়ি-ঘর।

কলকাতার আননন্দবাজার পত্রিকা অবরুদ্ধ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার সশস্ত্র সংগ্রামের বিবরণ ছাপে। তাদের খবরের শিরোনাম ছিল ‘সীমান্তের চারদিক থেকে’। পত্রিকাটি এক প্রতিবেদনে জানায়, আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ২৯ মার্চ ওপার থেকে এপারে এসেছেন। সবার একটাই লক্ষ্য- ভারত থেকে অস্ত্র সাহায্য সংগ্রহ করা।

কুষ্টিয়ার তৎকালীন এমএলএ আশহাবুল হক টেলিফোনে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। বাংলাদেশের জন্য সাহায্য পাঠানোর আহ্বান রেখে আশহাবুল হক অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়কে জানান, কুষ্টিয়া মিলিটারি ব্যারাক চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।

ফ্রান্সে পাকিস্তানি জাহাজ থেকে পাকিস্তান নৌবাহিনীর আটজন বাঙালি নৌসেনা পক্ষত্যাগ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন।

এদিন প্রথমে আত্মরক্ষা, তারপর প্রস্তুতি এবং সবশেষে পাল্টা আক্রমণের পর্যায়ক্রমিক লক্ষ্য স্থির করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ফরিদুপর, কুষ্টিয়া হয়ে সীমান্তে পৌঁছান।

সারাবাংলা/এজেড/এমও

৩০ মার্চ ১৯৭১ পাকিস্তানি বাহিনী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর