Thursday 08 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভূমি জরিপ প্রকল্পে বাড়ছে ব্যয় ও মেয়াদ

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩০ মার্চ ২০২৩ ১১:২৩ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ১১:২৬

ঢাকা: ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ছে ভূমি জরিপ প্রকল্পের। এজন্য ‘বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এখন ৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে তিন বছর বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদও।

গত বছরে জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় খরচ হয়েছে ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ২৫ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে-বিদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের শ্রমবাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য ল্যান্ড সার্ভে বা ভূমি জরিপ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উচ্চমানের কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনবলের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়, আধুনিক বিশ্বে ভূমি ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে অনেক সহজ ও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। কিন্তু ভূমি ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তিসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং এ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন জনবলের অভাব রয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের বর্তমান ও ভবিষ্যত চাহিদার কথা মাথায় রেখে ভূমি ও অন্যান্য জরিপ শিক্ষায় দক্ষ জনবল তৈরি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন মূল প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়।

মূল প্রকল্পে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ধরা হয়। ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল। কিন্তু কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া গত বছরের জুন পর্যন্ত এক বছর বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটির প্রথমবার আন্তঃখাত ব্যয় সমন্বয় করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে মেয়াদ ২০২৫ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন প্রস্তাব পাঠানো হয়। মূল ডিপিপিতে অনুমোদিত ল্যান্ড রিসোর্স অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টাল সাইন্স, ফটোগ্রাফি এন্ড ডিজিটাল ইমেজিং, ল্যান্ডস্ক্যাপ আর্কিটেকচার, ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং শীর্ষক টেকনোলজিগুলোর পরিবর্তে সময়োপযোগী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম সংশোধনী প্রস্তাবে ল্যান্ড রিসোর্স সার্ভে এন্ড ইনভায়রণমেন্ট, ফটোগ্রামাট্রি অ্যান্ড রিমোর্ট সেনজিং, কারডেসট্রাল টপোগ্রাফিকস সার্ভে অ্যান্ড ল্যান্ড ইনফরমেশন, জিও ইনফরমেট্রিক্স অ্যান্ড সার্ভেইং টেকনোলজিগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রস্তাবের ওপর গত বছরের ৯ জুন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নির্মাণাধীন কয়েকটি ভবনের জন্য অনুমোদিত প্রাক্কনের অতিরিক্ত অর্থের চাহিদা, কয়েকটি নতুন অঙ্গের প্রস্তাবের প্রয়োজনীয়তাসহ অন্যান্য অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধির যতার্থতা পুনরায় যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য প্রধান, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগকে আহ্বায়ক করে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ব্যয় যুক্তিযুক্ত করে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই কমিটি প্রস্তাবিত প্রকল্পের সকল অঙ্গের প্রয়োজনীয়তা নিরুপণ ও পরিমাণ সংখ্যার যৌক্তিকতা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিল করে। এই প্রতিবেদন এবং অন্যান্য বিষয় বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনার জন্য গত বছরের ৪ জুলাই দ্বিতীয় পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় কিছু সিদ্ধান্তের পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত নতুন এবং যেসব অঙ্গের কার্যাদেশ এখনো দেওয়া হয়নি সে সকল নির্মাণ ও পূর্ত কাজ পিডব্লিউডির হালনাগাদ রেট সিডিউল ২০২২ অনুযায়ী প্রাক্কলন করে ডিপিপি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়, নির্মাণ ও পূর্তকাজের প্রাক্কলিত ব্যয় পিডব্লিউডির রেট সিডিউল ২০১৪ ও ২০১৮ এর পরিবর্তে রেট সিডিউল ২০২২ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত ৫টি টেকনোলজিতে শিক্ষা দেওয়া হবে। ফলে এ বিষয়ে দক্ষ জনবল গড়ে তোলা যাবে। এতে ভূমি জরিপ শিক্ষায় দক্ষ জনবলের বর্তমান ও ভবিষ্যত চাহিদা মেটানো সম্ভব। এছাড়া প্রকল্পটি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং দেশের দারিদ্র্য বিমোচনসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে পিডব্লিউডির রেট সিডিউল পরিবর্তন, নতুন টেকনোলজি অন্তর্ভুক্তি, কিছু নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তি, কিছু খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কোভিড-১৯ মহামারির উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে প্রকল্পের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়ায় অবশিষ্ট কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে শেষ করার জন্য মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধিসহ প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনের প্রয়োজন হয়েছে।’


আরও পড়ুন: ভূমি জরিপ শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নে লাগবে ৭ বছর, বাড়ছে ব্যয়

সারাবাংলা/জেজে/এমও

বাড়ছে ব্যয় বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন ভূমি জরিপ ভূমি জরিপ প্রকল্প

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর