Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তি দাবি চবিসাসের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩০ মার্চ ২০২৩ ২১:৩২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) চবিসাসের দফতর, প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আজহার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান সমিতির নেতারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া স্বাধীন গণমাধ্যম ও মুক্ত সাংবাদিকতার অন্তরায়।

গণমাধ্যমের তথ্যমতে শামসকে তুলে নেয়ার আগ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। মামলা ছাড়াই কাউকে তুলে নেয়া সংবিধানের পরিপন্থী। আমরা শামসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলো একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। প্রথম আলো পত্রিকা অফিস থেকে সংবাদটি শেয়ার করে। সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি শিশুটির নাম জাকির হোসেন। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলে, ‘’পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব”। সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি দেশ-বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন।

এই ঘটনায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের সোনালী গৌরবউজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণসহ বহিঃবিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বধীনতা অর্জন নিয়ে আলোনা-সমালোচনা শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

পরবর্তীতে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। শিশুটির বিষয়ে ভুল তথ্য, নাম পরিচয়ও ভুল দেওয়া হয়েছে। পরে শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এমন সংবাদ করেছে প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদক। ওই ঘটনায় গত ২৯ মার্চ গোলাম কিবরিয়া নামে এক ব্যক্তি তেজগাঁও থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন।

একই ঘটনায় বুধবার মধ্যরাতে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, শামসুজ্জামান,সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে রাজধানীর রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আবদুল মালেক ওরফ মশিউর মালেক নামে এক আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শামসুজ্জামানকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার পরিদর্শক আবু আনছার সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

এ সময় শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনের বিরোধিতা করেন।

বিকেলে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শামসুজ্জামানের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

গত ২৯ মার্চ ভোর ৪টার দিকে সিআইডির পরিচয়ে শামসুজ্জামানকে তুলে নিয়ে যায় সিআইডি। রাতে তাকে তেজগাঁও থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

সারাবাংলা/আইসি/এনইউ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর