এবারের ঈদেও পোশাক কারখানায় পর্যায়ক্রমে ছুটি
৩০ মার্চ ২০২৩ ২২:৫১
ঢাকা: এবারও ঈদে পোশাক কারখানায় পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এবার ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ২২ এপ্রিল। সে হিসাবে ২১ এপ্রিল (শুক্রবার) থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। তবে ঈদের দুই/তিন দিন আগে থেকেই শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত পোশাক কারখানার মালিকদের চিঠি দিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান।
জানতে চাইলে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এবারও পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়ার জন্য সদস্য কারখানার মালিকদের চিঠি দিয়েছি। কারণ, একসঙ্গে একইদিনে ছুটি দিলে বিরাট চাপ হয়। শ্রমিকরা পরিবহন পায় না। ফলে যাদের আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে তারা যেন ঈদের সাধারণ ছুটির আগেই কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দেয়। দুই তিন দিন আগ থেকেই ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়ার কথা বলেছি।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এবার রোজায় পোশাক কারখানায় তেমন কাজের চাপ নেই। বেশিরভাগ কারখানাতেই ওভারটাইম হচ্ছে না। ক্রেতাদের অর্ডারও কম রয়েছে। আবার অনেক ক্রেতা পণ্যের দাম কমাতে চাচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা চাপের মধ্যে রয়েছি। তাই ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিতে হবে যাতে বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করে।
এদিকে, এক চিঠিতে বিজিএমএই জানিয়েছে ঈদের ছুটি নির্ভর করবে চাঁদ দেখার ওপর। তবে স্ব স্ব কারখানা নিজস্ব শিপমেন্ট, কার্যাদেশ প্রোডাকশনের সঙ্গে সমন্বয় করে যদি সুযোগ থাকে ঈদের দুই/তিন দিন আগে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া যেতে পারে। এটি সরকারি ছুটি বা সাপ্তাহিক ছুটির দিন শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে জেনারেল ডিউটি করিয়ে সমন্বয় করে নেওয়া যাবে।
একইসঙ্গে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিরাপদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া-আসা নিয়ে ছয়টি দিক-নির্দেশনা দিয়েছে পোশাক মালিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএ। কারখানা মালিকদের প্রতি বিজিএমইএ’র চিঠিতে বলা হয়, ঈদের ছুটিতে সড়ক, রেল এবং লঞ্চ যাত্রায় একই দিন অতিরিক্ত শ্রমিকের চাপ কমানোর লক্ষ্যে ধাপে ধাপে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে বলা হয়েছে। নিজ নিজ কারখানা নিজস্ব শিপমেন্ট, কার্যাদেশ ও প্রোডাকশনের সঙ্গে সমন্বয় করে যদি সুযোগ থাকে ঈদের দুই/তিন দিন আগে শ্রমিকদের ছুটি দিতে পারবেন।
শ্রমিকদের জন্য ৬ নির্দেশনা
ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসে শ্রমিকদের ছুটির আগে মাল বোঝাই করা ট্রাকে যাতায়াত না করা, তাড়াহুড়ো না করা, রাস্তা যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা, সাধারণ মানুষের যাতায়াতে বিঘ্ন না করা, অপরিচিত লোকদের দেওয়া খাবার না খাওয়ার বিষয়ে সচেতন করার আহ্বান জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, শেষ কর্ম দিবসে শ্রমিকদের নিরাপদে গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করার জন্য প্রয়োজনে কারখানা কর্তৃপক্ষ ৮ থেকে ১০ জনের টিম গঠন করে স্থানীয় ট্রাফিক ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতা নিতে পারবেন। কোনো পক্ষ যাতে শ্রমিক অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনও ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করতে না পারে সেই দৃষ্টি রাখতে হবে।
কারও প্ররোচনায় শ্রম অসন্তোষ সংঘটিত হতে পারে- এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত জানতে পারলে প্রয়োজনে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, কলকারখানা অধিদফতর অথবা বিজিএমইএ’র সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাক মালিকদের সংগঠনটি।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম