Wednesday 09 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩১ মার্চ ১৯৭১: ভারতের সংসদে ‘পূর্ব বাংলা সম্পর্কিত প্রস্তাব’

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ মার্চ ২০২৩ ০৯:১০ | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৩ ০৯:৪১

ঢাকা: ৩১ মার্চ ১৯৭১। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর তোলা ওই প্রস্তাবে বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্মম হত্যাকাণ্ড বন্ধে পাকিস্তান সরকারকে বাধ্য করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়।

‘পূর্ব বাংলা সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব’ এ বলা হয়, ‘পূর্ব বাংলায় সাড়ে সাত কোটি মানুষের অভ্যুত্থান সফল হবে। এই পার্লামেন্ট আশা করে এবং নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, তাদের লড়াই ও ত্যাগ ভারতের জনগণের সর্বাত্মক সহানুভূতি ও সমর্থন পাবে।’

বিজ্ঞাপন

ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে মেহেরপুর সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ। সীমান্ত অতিক্রম করার সময় সেখানকার তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী তাদের সার্বিক সহায়তা করেন। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিদর্শক গোলক মজুমদার গার্ড অব অনার দিয়ে তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিনিধির মর্যাদায় গ্রহণ করেন।

বিকেলে কুষ্টিয়ায় কৃষক-পুলিশ-ইপিআরের সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর ডেল্টা কোম্পানির সৈন্যদের পাঁচটি অবস্থানে হামলা করে। অব্যাহত গুলিতে ডেল্টা কোম্পানির প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় বাংলার আকাশ-বাতাস।

কুমিল্লা সেনানিবাসে চতুর্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৭০ থেকে ৮০ জন বাঙালি সেনা সদস্যের ওপর অতর্কিত হামলা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাঙালি সেনারা টানা ছয় ঘণ্টা যুদ্ধ করে রেজিমেন্ট ইউনিট দখল করে নেয়।

বিজ্ঞাপন

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বিহারিরা চট্টগ্রামের হালিশহরের নাথপাড়ায় পরিকল্পিত গণহত্যা চালায়। কুড়াল, কিরিচ ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে ৪০ জন ইপিআরসহ ৭৯ জনকে হত্যা করে তারা। পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে সারাদেশ থেকে লক্ষাধিক শরণার্থী বিভিন্ন পথে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে।

চট্টগ্রাম কালুরঘাট থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এক কিলোওয়াট সম্পন্ন ট্রান্সমিটার প্রথমে পটিয়ায় নেওয়া হয়। পরে সীমান্ত পার করে ভারতের আগরতলায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রচার চলতে থাকে।

পাকিস্তানিদের দোসর- জামায়াত, ইসলামী ছাত্রসংঘ, রাজাকার ও বিহারিরা ঢাকার নারিন্দা মঠে হামলা চালায়। এ হামলায় পাঁচজন নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালি নিহত হন। দিনের বেলা কারফিউ শিথিল করায় বহু মানুষ ঢাকা ছাড়তে থাকে। কল্যাণপুর সেতুতে পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালিরা তল্লাশির নামে অনেক বাঙালিকে ধরে নিয়ে হত্যা করে।

ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পাকিস্তান, পূর্বদেশ, দ্য পাকিস্তান অবজারভার এবং দ্য মর্নিং নিউজে লেখা হয়, ‘দেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার পথে’।

সারাবাংলা/এজেড/এমও

৩১ মার্চ ১৯৭১