সহ্যের সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে সরকার: খন্দকার মোশাররফ
২ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:২৪
ঢাকা: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এই সরকার বেপরোয়া হয়ে স্বৈরাচারী ও স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছে। তারা সহ্যের সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। আর এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে গণঅভ্যুত্থানের বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যেই বিএনপি ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে।
রোববার (২ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নারী ও শিশু ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আপনারা জানেন, বর্তমান সরকার গায়ের জোরে দেশ চালাচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না করলে এই অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে না।
সরকারের স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচারী আচরণ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তারই ফলে একজন যুগ্ম সচিবের মৌখিক নির্দেশে র্যাবের এগারোজন সদস্য মিলে গত ২২ মার্চ সুলতানা জেসমিনকে নওগাঁ শহরে আটক করে। র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর নির্যাতনের শিকার হয়ে সুলতানা জেসমিন মৃত্যুবরণ করে। র্যাব কীভাবে এটা করতে পারল? এখানে আইন নয়, অন্য কিছু আছে। আমরা এঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও সুলতানা জেসমিনের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
‘সরকার সব দিক থেকে ব্যর্থ তাই বুঝতে পারছে না কোনোদিক থেকে কী করবে। তাই সরকারের অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও দিশেহারা। বর্তমান সরকারের নির্দেশে র্যাব অতীতে অন্যায়-অত্যচার করেছে। ৬০০ এর বেশি গুম ও হাজারের উপর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছে তারা। দেশে এগুলো ধামাচাপা দিতে পারলেও আমেরিকা থেকে ঠিকই তাদের উপর স্যাংশন আনা হয়’, বলেন বিএনপির এই নেতা।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে সিভিল পোশাকে সিআইডির লোক পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ১৯ ঘণ্টা পর মামলা দেওয়া হয়। শামসুজ্জামানের অন্যায় সে দেশের দ্রব্যমূল্য সম্পর্কে সত্যি কথা লিখেছে যা প্রথম আলো ছাপায়। এ ঘটনায় প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। একটা দেশে কী পরিমাণ খামখেয়ালিপনা চললে প্রথম আলোর মত একটি পত্রিকার সাংবাদিক ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করে। ফ্যাসিবাদী এই সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন নাই, তাই সরকারেরও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নাই। তাদের হাত ধরে অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এমন অবস্থায় যে গরিব মানুষ খেতে পায় না, মধ্যম আয়ের মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। মানুষ এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে আজ সরকার নতুন করে নির্যাতন শুরু করেছে। এখন জনগণ যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সমস্ত আন্দোলনে তারা শরিক হচ্ছে, তখন এই সরকার আবারও প্রশাসনের মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে মানুষকে চুপ করিয়ে রাখছে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘বাংলাদেশে গত ১৭ বছর ধরে যত আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে শেখ হাসিনার আশপাশের লোকজন এবং আওয়ামী লীগের লোকজন ব্যাংক ডাকাতি করেছে, টাকা পাচার করেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে। সেখানে জেসমিনের মতো একজন কর্মচারীকে র্যাব নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
সারাবাংলা/আরএফ/এমও