‘বেসরকারি হাসপাতালে গলাকাটা ব্যবসা, আটকে রাখে লাশ’
২ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতালের অমানবিক আচরণের চিত্র তুলে ধরে প্রশাসনের প্রতি নিয়মিত অভিযান চালানোর দাবি করেছেন সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
রোববার (২ এপ্রিল) সকালে নগরীর প্রবর্তক মোড়ে ‘নাগরিক উদ্যোগ’ আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ দাবি জানান।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘চট্টগ্রামে জনসংখ্যার অনুপাতে সরকারি হাসপাতালগুলো পর্যাপ্ত নয়। বাধ্য হয়েই মানুষকে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে— বেসরকারি ক্লিনিকগুলো মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে গলাকাটা ব্যবসা শুরু করেছে। সামান্য অসুখে চিকিৎসা নিতেই রোগীদের ২০-৩০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অহেতুক টেস্টের নামে হয়রানি করা হচ্ছে। কথায় কথায় রোগীদের সিসিইউ, এইচডিও, আইসিইউ কিংবা লাইফ সাপোর্টের কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’
‘অথচ অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, দক্ষ নার্স কিংবা আয়া। স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ব্যবসা করছে তারা, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। বেসরকারি হাসপাতালের কমপক্ষে ২০ শতাংশ আসন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকা উচিত।’
অমানবিকতার আরও চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। কী করবে, চিকিৎসার জন্য এত টাকা খরচের সামর্থ্য তো অনেকের নেই। আবার রোগী যাওয়ার সময় স্বজনদের অসহায় পরিস্থিতিতেও মুক্তি মিলছে না। বিলের জন্য লাশ আটকে রাখা হচ্ছে, দাফন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ধরনের অমানবিক অসংখ্য ঘটনার অভিযোগ আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি, অনেক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী আমাদের হতে হচ্ছে।’
একেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও এক্সরে ল্যাব পরীক্ষার পর একেক ধরনের রিপোর্ট দেয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জটিল রোগে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের স্বজনরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন, হয়রানির শিকার হচ্ছেন। একেক প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার ফি-ও একেকরকম। এ অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষকে পরিত্রাণ দিতে হবে। প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বেসরকারি হাসপাতাল-ল্যাবে সেবার যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের দাবি জানিয়ে সুজন বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অভিযান চালাতে পারে, একইভাবে তাদের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা আজ সময়ের দাবি। যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়ম মানবে না, তাদের সনদ বাতিল করতে হবে।’
নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াছ ও সদস্য সচিব মো. হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু, আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, নাজিম উদ্দিন, মোরশেদ আলম, অনির্বাণ দাশ বাবু, মো. শাহজাহান, জানে আলম, সমীর মহাজন লিটন, শহীদুল আলম লিটন ও আশীষ সরকার নয়ন।
সারাবাংলা/আইসি/একে