বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে আরবিট্রেশন আইনের সংস্কার জরুরি
২ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৫৬
ঢাকা: একটি কার্যকর বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনা, দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যা বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের অন্যতম পূর্বশর্ত বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মো. সামীর সাত্তার।
রোববার (২ এপ্রিল) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ আরবিট্রেশন আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনারে ডিসিসিআই সভাপতি এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সামীর সাত্তার বলেন, ‘দেশের প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরও বেগবান করার পাশাপাশি বাণিজ্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে আমাদের একটি কার্যকর আইনি কাঠামো প্রয়োজন, যা বিশেষকরে ক্রস-বর্ডার বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে দ্রুত ও দক্ষ কন্ট্রাক্ট এনফোর্সমেন্ট বাস্তবায়ন সক্ষম। আমাদের বর্তমান আইনি কাঠামোতে এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রথম ধাপেই বিদ্যমান বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার অপরিহার্য।’
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘গত কয়েক দশকে আমাদের বৈদেশিক বিনিয়োগ যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বাণিজ্য বিরোধের পরিমাণ। ফলে সাম্প্রতিক এ ধরনের বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে আরবিট্রেশন একটি অন্যতম নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রুত সময়ে আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করে বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা যায়।’
তিনি জানান, বর্তমান সরকার দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কারে বদ্ধ পরিকর এবং বতর্মান প্রেক্ষাপটে আরবিট্রেশন আইন ২০০১ সংস্কারের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে মন্ত্রী মত প্রকাশ করেন।
বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, ‘বিগত দুই দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে আগামী ৩ বছর পর দেশটির এলডিসি হতে উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে অধিকতর বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে আরবিট্রেশন আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার একান্ত অপরিহার্য।’
তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা এবং এডিআরের মাধ্যমে দ্রততম সময়ে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি করতে চায়। বাংলাদেশের কমার্শিয়াল আইনের সংস্কার খুবই জরুরি এবং এক্ষেত্রে ভারতের উদাহরণ বিবেচায় নিয়ে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা আবশ্যক।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার আশরাফুল হাদি। তিনি বলেন, ‘আরবিট্রাল ট্রাইবুনালের কোর্টের ন্যায় ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। আরবিট্রেশন অ্যাক্ট ২০০১-এর সংজ্ঞায় ‘কোর্ট’ কে ইন্টারন্যাশনাল কমার্শিয়াল আরবিট্রেশনের আদলে যেন হাইকোর্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় ইউনিলিভার বাংলাদেশ’র সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আকতার, গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান এবং ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী প্রমোদ নায়ার অংশ নেন।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম