টিসিবির কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের কাজ চলছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:০৭
ঢাকা: নিম্নআয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের লক্ষ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দেওয়া এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ এবং বরিশালে টিসিবির কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের পাইলটিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হাতে লেখা সব কার্ড কিউআর কোড সম্বলিত স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা হবে। যার কাজ চলমান রয়েছে। এসব কার্ড স্মার্ট কার্ডে পরিবর্তিত করলে অসঙ্গতিগুলো দূর করা সহজ হবে।
সোমবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরায় টিসিবি আয়োজিত সারা দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দ্বিতীয় পর্বের টিসিবি পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম এবং উত্তরা এলাকায় টিসিবি পণ্যের অস্থায়ী সংরক্ষাণাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ববাজারের তুলনায় আমরা ভালো আছি মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই জানি করোনা মহাসংকটের পরপরই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। তার সত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীব মানুষদের মধ্যে কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নতসহ অনেক দেশে খাদ্য পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের বেশি ক্রেতাদের দেয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজার বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীব মানুষের কষ্ট অনুভব করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেজন্যই তিনি এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী অর্থাৎ প্রতি পরিবারে গড়ে পাঁচজন সদস্য হলেও প্রাই পাঁচ কোটি মানুষ এই সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ মানুষকে সাশ্রয়ী দামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম কিন্ত প্রধানমন্ত্রী তা এককোটি করার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তা বাস্তবায়ন করছি।
কার্ডধারীর সংখ্যা এককোটির বেশি করার চিন্তা সরকারের আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এখন যে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়েছে এছাড়াও কিছু সংখ্যক নিম্ন আয়ের মানুষের তালিকা অর্থাৎ যারা বাদ পড়েছেন আমাদের নিকট আসছে তবে সংখ্যা খুব বেশি নয়। তারপরও আমরা বিশেষ বিবেচনায় বাদ পড়া মানুষকে পণ্য দিয়ে থাকি।
পণ্য মজুদের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আমাদের নিকট যথেষ্ট পরিমাণে পণ্য মজুদ আছে। বিগত কয়েক বছরের সাথে তুলনা করলে দেখা যাবে এ বছর আমরা সরবরাহ ও বিতরণে শক্ত অবস্থানে আছি। কোনো একটি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে সবাই প্রশ্ন তোলেন অথচ মূল্য যখন কমে তখন কেউ আর কিছু বলেন না। সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসা করাও উচিত। এতে ধরে দায়িত্ব পালনে উৎসাহ পাওয়া যায়।
পণ্যের মজুদ পর্যাপ্ত এরপরেও বাজারে দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের সব নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়। ধান, চাল, মাছ, মাংস ও মুরগির দাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কন্ট্রোল করে না। অথচ সবার ধারণা, পণ্যের দাম বাড়লেই এর দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তারপরও আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি যাতে দ্রব্যমূল্য মানুষের হাতের নাগালে রাখা সম্ভব হয়।
টিসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারা দেশে টিসিবি পণ্যে সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষাণাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে উত্তরা এলাকায় আজকে এই সংরক্ষাণাগারের উদ্বোধন করা হলো। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে পণ্য মজুদ করে কার্ডধারীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে দেশের এক কোটি পরিবারের মাঝে স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতি মাসে একবার দিলেও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দ্বিতীয় বার দেওয়া হচ্ছে এবং আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে বিতরণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।। এছাড়া, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডি্য়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আফসার উদ্দিন খান প্রমুখ।
সারাবাংলা/জেআর/এনইউ