প্রথম আলোর ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ প্রতিবেদনের প্রতিবাদ অভিনয় শিল্পীদের
৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:৫৩
ঢাকা: স্বাধীনতা দিবসে (২৬ মার্চ) দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক’ দাবি করে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের খ্যাতনামা ও অভিনয় শিল্পীরা। সোমবার (৩ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে যেসব শিল্পীর নাম সংযুক্তি রয়েছে— আসাদুজ্জামান নূর (এমপি), সুবর্ণা মুস্তাফা (এমপি ), আলমগীর হোসেন (অভিনেতা), অরুণা বিশ্বাস (অভিনেত্রী), শমী কায়সার (অভিনেত্রী), রিয়াজ আহমেদ (অভিনেতা), ফেরদৌস আহমেদ (অভিনেতা), নিপুণ আক্তার (অভিনেত্রী), তানভিন সুইটি বেগম (অভিনেত্রী), বিজরী বরকতুল্লাহ (অভিনেত্রী), দীপা খন্দকার (অভিনেত্রী), তারিন জাহান (অভিনেত্রী), মীর সাব্বির (অভিনেতা), সাইমন সাদিক (অভিনেতা), মামনুন হাসান ইমন (অভিনেতা), ফারজানা চুমকী (অভিনেত্রী), শামীমা তুষ্টি (অভিনেত্রী) ও শাহনূর (অভিনেত্রী)।
অভিনয় শিল্পীদের লিখিত বক্তব্য পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো— ২৬ মার্চ কোনো বাঙালির জন্য নিছক একটি তারিখ নয়। কারণ, এই দিনেই বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এই স্বাধীনতা কেউ আমাদের সোনার থালায় করে তুলে দিয়ে যায়নি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ, ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম, অগণিত মুক্তিযোদ্ধাদের বলিদানের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এই স্বাধীনতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবনের আত্মত্যাগের ফসল এই স্বাধীনতা দিবস।
স্বাধীনতা দিবস আমাদের আত্মমর্যাদার কীর্তিস্তম্ভ। আর এই দিনটিকেই একটি কুচক্রিমহল বেছে নিয়েছে জঘন্য মিথ্যাচারের জন্য। করোনা মহামারি, বৈশ্বিক খাদ্য সংকট, বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট ও বৈশ্বিক মাইক্রোচিপ সংকটের কারণে সমগ্র পৃথিবীতেই এই মুহূর্তে টালমাটাল অবস্থা। বাংলাদেশও এই সংকটের বাইরে নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন এই ক্রান্তিকালের বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই করে যাচ্ছেন ঠিক সেই সময়ই একটি কুচক্রী গোষ্ঠী আবারও ফণা তুলে দাঁড়িয়েছে।
দৈনিক প্রথম আলো সম্প্রতি আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিভ্রান্তিকর ও বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করে। একটি অবুঝ শিশুর ছবি ব্যবহার করে তার সঙ্গে মনগড়া এক দিনমজুরের নাম জুড়ে দিয়ে তারা একটি মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা শুধু সাংবাদিকতার নীতির পরিপন্থী নয় বরং মহান। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা। একটি অবুঝ শিশুকে ব্যবহার করে মনগড়া ভাষায় লেখা প্রতিবেদনটি হলুদ সাংবাদিকতার এক জঘন্যতম নজির এবং বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
দৈনিক প্রথম আলোর নৈতিকতা বহির্ভূত প্রতিবেদনটি ১৯৭৪ সালের বাসন্তী নাটকেরই একটি ধারাবাহিকতা। ৭৪-এ স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের হাতিয়ার ছিল বাসন্তী, আজ সেই চক্রের হাতিয়ার জনৈক জাকির যার আদৌ কোনো অস্তিত্ব আছে কিনা সন্দেহ। এই প্রতিবেদন মহান স্বাধীনতা দিবসকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি অপচেষ্টা এবং বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার একটি ষড়যন্ত্র।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করার নাম মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়। সুগভীর ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করে দেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে নষ্ট করা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়। একটি কোমলমতি শিশুকে ব্যবহার করে স্বার্থ হাসিল করা মতো প্রকাশের স্বাধীনতা নয়। কোনো সাংবাদিক ভূমির প্রচলিত আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা দৈনিক প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এই মিথ্যা প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখবার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা আশা করছি সরকার এই কুচক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি কার্যকলাপ শুরু করবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কুচক্রি মহল আর কোনোদিনও যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
সারাবাংলা/একে