এখন পুড়ছে ‘বাংলাদেশ সুপার মার্কেট’
৪ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৫৪
ঢাকা: আগুনের লেলিহান শিখায় বঙ্গবাজারের একের পর এক মার্কেট পুড়ে ভষ্ম হয়ে যাচ্ছে। কোনোভাবেই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে বঙ্গবাজারের আগুন। ৪৫টির অধিক ফায়ার সার্ভিস, বিমান ও সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার এবং শত শত মানুষের প্রাণান্তকর চেষ্টায়ও আগুণের ধ্বংসলীলা থামানো যাচ্ছে না।
ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই সর্বানাশী আগুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এসে তার বুভুক্ষ্ম জিহ্বা বিস্তার করে ‘বাংলাদেশ সুপার মার্কেট’ -এর। এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের পেছনে থাকা এ মার্কেটটি সকাল ১০টা পর্যন্ত ছিল নিরাপদ।
সকার সাড়ে ১০টার দিকে দেখা যায়, আগুনের কুণ্ডলি ঘিরে ধরেছে বাংলাদেশ সুপার মার্কেটটিকে। সেখানে থেকে ভয়ংকর কালো ধোঁয়া বেরিয়ে আশপাশের এলাকা অন্ধকার করে ফেলেছে। ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো দোতলা মার্কেট, ইসলামীয়া বঙ্গ মার্কেট, বঙ্গ সুপার মার্কেট, এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রের চেষ্টায় যখন ব্যস্তা, তখন পেছনে ‘বাংলাদেশ সুপার মার্কেটে’ আগুন লেগে যায়। এ মার্কেট মূলত, বহুতল মার্কেট ‘এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেট’-এর আড়ালে। সঙ্গত কারণেই সেখানে পানি সরবরাহ এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সরমঞ্জাম পৌঁছানো একটু কঠিন কাজ বলে মনে করছেন ফায়ার কর্মীরা।
বাংলাদেশ সুপার মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী সারাবাংলাকে বলেলেন, ‘এ পাশ ব্লক করে দেওয়ায় আমরা কেউ ওদিকে আগাতাতে পারিনি। ফলে এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাদের মালপত্র বের করতে পারলেও আমরা কিছু বের করতে পারছি। আমাদের সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি।’
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো আগে পোড়া মার্কেটের দিক থেকে মনোযোগ কমিয়ে বাংলাদেশ সুপার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাণান্তকর চেষ্টা করছেন। এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেট অতিক্রম করে পেছনের বাংলাদেশ সুপার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রেণের চেষ্টা করছেন তারা। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী এবং উৎসুক জনতাকে নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়ে কাজে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছেন তারা।
পানির পাইপ ফিটিংয়ের দায়িত্বে থাকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী জাকির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিপদে ধৈর্য ধরে সবাইকে দূরে থাকার অনুরোধ করুন। আমরা আমাদের কাজ ঠিকমতো করতে পারলে বিপদ কেটে যাবে ইনশাল্লাহ।’
ব্যবসায়ী মো. শাহাদাত হোসেন সারবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গ ইসলামীয়া মার্কেটে ‘শিফা-১’, ‘শিফা-২’ এবং ‘অ্যানি ফ্যাশন’ নামে আমার তিনটি দোকান ছিল। আমি কিছুই বের করতে পারিনি। তিন থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকার মালপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমি এখন পথের ফকির।’
ব্যবাসয়ী মাকসুদুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে জ্বলছে। আগুন নিভছে না। ঈদের আগে আমাদের ওপর এ কোন গজব নেমে এলো।’
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে আগুনের সুত্রপসত হয় রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে। আর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। সর্বশেষ, ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট কাজ করছে আগুন নিয়ন্ত্রণে।
সারাবাংলা/এজেড/ইআ