জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ সাময়িক বন্ধ যে কারণে
৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৩৫
ঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে। পরে আগুন বাড়তে থাকলে এক পর্যায়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এর সেবা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। কারণ, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলের পাশেই এর পাওয়ার কানেকশনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, বঙ্গবাজারের পাশেই পুলিশ সদর দফতরে রয়েছে এই সেবার টেলিফোন লাইন, পাওয়ার কানেকশনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম। আগুন লাগার পর সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ভবনটির পাওয়ার কানেকশান চলে যায়। এরপরে ব্যাকআপে সেবা দিয়ে গেলেও সেটি শেষ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সাময়িকভাবে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ বন্ধ রাখা হয়। তবে পাওয়ার কানেকশান ফিরে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেবা দেওয়া চালু হবে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সারাবাংলাকে এ তথ্য জানান জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ও পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার।
আনোয়ার সাত্তার বলেন, ‘আগুন লাগার পরে ৯৯৯ এ ফোন আসে। সেটি তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিসে কানেক্ট করে দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে আগুন লাগে তার পাশেই আবদুল গণি রোডের রেল ভবনের পাশে ৯৯৯–এর কার্যালয় অবস্থিত। তবে বঙ্গবাজারসংলগ্ন পুলিশ সদর দফতরে এই সেবার টেলিফোন লাইন, পাওয়ার কানেকশনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে। সেখানে পাওয়ার, কানেকশান, সার্ভার-ডাটা এমন অনেক কিছুই হেড কোয়ার্টারের সঙ্গে শেয়ারিং বা লিংকড বলা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগুনের ধোঁয়ার কারণে সদর দফতর থেকে কর্মরতদের সরিয়ে নিতে হয়েছে। তাই আপাতত ৯৯৯–এর সেবা কার্যক্রমটি বন্ধ রাখা হয়েছে। আগুনের ক্ষয়ক্ষতির ওপর নির্ভর করবে এই সেবা ফের কখন চালু হবে।’
আনোয়ার সাত্তার বলেন, ‘বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পরে সাড়ে ছয়টার দিকে পাওয়ার কানেকশান চলে যায়। কিন্তু তাও আমরা ব্যাকআপ পদ্ধতির মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে গেছি। এরপরে একটা সময় সেই বেকাপ ফুরিয়ে যায়। তখন বাধ্য হয়েই সেবা বন্ধ রাখতে হয়েছে। পাওয়ার কানেকশান রিস্টোর হলেই ফের সেবা শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘যখনই আমাদের পাওয়ার কানেকশান রিস্টোর হবে তখনই সেবা দেওয়া শুরু হয়ে যাবে। আমাদের টিম সবসময় প্রস্তুত আছে সেবা দেওয়ার জন্য। আর যখনই রিস্টোর হবে তখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমের সাহায্যে আমরা সবাইকে জানিয়ে দেব।’
আগুন লাগার পর প্রথমে একটি মোবাইল নম্বর থেকে এবং পরে ৯৯৯ থেকে খবর পান বলে জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের চেষ্টায় ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এছাড়া সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও ওয়াসাসহ অনেক বাহিনী ও সংস্থা আমাদের সঙ্গে কাজ করেছে।’
তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাধারণ জনগণের হতাহতের কোনো তথ্য জানা নেই। তবে ফায়ার সার্ভিসের আট জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা বেশ খারাপ।
এর আগে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার জানান, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ভেতরে পুলিশ ব্যারাকের চার তলা ভবনে আগুন লাগে। এতে ওই ভবনের সবকটি কক্ষ পুড়ে যায়। এই ভবনটি মহানগর শপিং কমপ্লেক্স লাগোয়া। সেখান থেকেই মূলত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) মো. মঞ্জুর রহমান জানান, পুলিশ সদর দফতরের ব্যারাকে আগুন লাগার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯। জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় থানা অথবা ফায়ার স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে পুলিশ হেড কোয়ার্টার।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়। বঙ্গবাজার থেকে আশপাশের আরও চারটি মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট কাজ করে।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম