‘অটিজম আক্রান্তদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে’
৪ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৪৯
ঢাকা: পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, বিশ্বে ৭৫ মিলিয়নের অধিক মানুষ অটিজমে আক্রান্ত। এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে সর্বাধিক কাজে লাগাতে পারে এবং আমাদের সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারে, সেজন্য সম্মিলিতিভাবে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। এ লক্ষ্যে আমি সবাইকে বিভিন্ন উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসার জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায় বাংলাদেশ, কাতার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২৩ জীবনব্যাপী অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যব্যবস্থা’-শীর্ষক এক উচ্চ-পর্যায়ের সভায় মূল বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
এতে স্বাগত বক্তব্য দেন- কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আলেয়া আহমেদ সাইফ আল-থানি এবং বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ আব্দুল মুহিত।
সভায় পররাষ্ট্র সচিব মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশে গত এক দশকে অটিজম বিষয়ক সচেতনতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য আমি বিশেষ ধন্যবাদ জানাই অটিজম ও স্নায়ু বিকাশজনিত সমস্যা বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদকে। তিনি এই প্রচেষ্টার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছেন।’
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩ প্রণয়ন; সারা দেশজুড়ে ১০০ টিরও বেশি অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার কেন্দ্র স্থাপন এবং এসব কেন্দ্রে কর্মরত কর্মীদের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় প্রচেষ্টার পাশাপাশি আমরা জাতিসংঘেও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। সাধারণ পরিষদে এ সংক্রান্ত রেজুল্যুশন গ্রহণে আমরা গভীরভাবে কাজ করেছি। ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপনে আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে অন্যতম সহ-পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করে থাকি।’
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মুহিত প্রতিবন্ধী শিশুরা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন তার কথা উল্লেখ করেন। এবং এসব সমস্যা সমাধানে আশু হস্তক্ষেপ, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, সৃজনশীল অভিব্যক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যথাযথ ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক ওয়ার্নার ওবারমেয়ার। এ সময় বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি, অন্যান্য পর্যায়ের কূটনীতিক, জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও পররাষ্ট্র সচিব মোমেন জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি এ ডিকার্লো, ইউএন উইমেন-এর নির্বাহী পরিচালক সিমা সামি বাহাউস এবং রাজনীতিবিষয়ক বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ খালেদ খিয়ারি। পাশাপাশি তিনি জাতিসংঘে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল নেতা বিজন উলফ কু-এর সঙ্গেও বৈঠক করেন।
এসব বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব তাদের বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্তমান অবস্থা এবং বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ইস্যুতে জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের বিষয় অবহিত করেন।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম